সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
শনিবার বিকাল তিনটায় রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠক শুরু হয়েছে। এটি কমিশনের প্রথম বৈঠক।
বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), নাগরিক ঐক্য, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিশ, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা রয়েছেন।
এই বৈঠকে জাতীয় নাগরিক কমিটিও অংশ নিচ্ছে। কমিটির আহ্বায়ক নাসীররুদ্দীন পাটোয়ারির নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল রয়েছেন।
বৈঠক শুরুর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে যে অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান হলো-তার পরবর্তীতে বাংলাদেশের পুনর্জন্ম, এটা যে একটা পলিটিক্যাল সলিউশনে আমরা যাচ্ছি-কিভাবে আমরা ডেমোক্রেটিক টান্সজিশন হবে তার একটি সূচনা। আমি বলব, পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর সাথে ডায়ালগের সূচনা বলব। কনসেনসাস কমিশন করা হয়েছে তার সাথে পলিটিক্যাল পার্টির সংলাপ।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, ছয়টা কমিশন যে রিপোর্টগুলো দিয়েছে সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পলিটিক্যাল পার্টির সাথে এই কমিশনের আলাপ হবে, আলাপের সমস্ত পলিটিক্যাল পার্টির ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেবে, সেটা সবাই অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলো সাইন বা স্বাক্ষর করবে। সেই সাইন ডকুমেন্টটা হবে জুলাই চাটার্ড। সেই জুলাই চাটার্ডের ওপর নির্ভর করবে আমাদের নির্বাচনের তারিখটা কবে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে, মোস্ট লাইকলি ইলেকশনটা হবে ডিসেম্বরের মধ্যে।
এর আগে, গত বুধবার সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। যার সভাপতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন-জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদলে রয়েছেন জমির উদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আছেন নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মশিউল আলম।
ইসলামী আন্দোলনের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমেদ ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
খেলাফতে মজলিশের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন আমিরে মজলিশ মাওলানা আবদুল বাছিদ আজাদ ও মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সাত সদস্যের ‘জাতীয় ঐকমত্য মিশন’ গঠন করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেন অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কমিশনের মধ্যে চারটি কমিশন ১৫ জানুয়ারি প্রাথমিক প্রতিবেদন এবং গত ৮ ফেব্রুয়ারি সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন জমা দেয়। এরপর সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কারে কমিশনগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ৮ ফেব্রুয়ারি।