ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্য গ্রেফতার

ফাইল ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কথা কাটাকাটির জেরে মো. আব্দুল্লাহ খাঁন রায়হান (১৬) নামে এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

এর আগে নিহত কিশোরের বাবা মো. সামিম খান (৪২) বাদী হয়ে আট আসামির নাম উল্লেখসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার মৃত আলী আহম্মদের ছেলে হৃদয় ওরফে পাইটু হৃদয় (১৫), মো. মেহেদী (১৫), শুভ (১৫), আব্দুল সামাদের ছেলে মো. হৃদয় (৩০), সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল নয়াপাড়া এলাকার মো. ফারুকের ছেলে মো. সাব্বির (১৮), সিদ্ধিরগঞ্জের কাশেমপাড়া কদমতলি এলাকার দুলালের ছেলে মো. আতিক (২২), সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী নাভানা সিটি এলাকার মো. আবুল কাশেমের ছেলে মো. জাহিদ (১৮), নোয়াখালী জেলার মাইজদী থানার মনির হোসেনের ছেলে আল আমিন (২০)। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরও আটজনকে আসামি করা হয়েছে।

 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন-হৃদয়, সাব্বির, আতিক ও আল আমিন।

 

মামলার বাদী মো. সামিম খান বলেন, আমার ছেলে মো. আব্দুল্লাহ খান রায়হান আমার সঙ্গে এসি সার্ভিসিংয়ের কাজ শিখত। ২৩ মে বিকেল ৫টার দিকে সে তার আরও ৪-৫ জন বন্ধুর সঙ্গে দক্ষিণ কদমতলী ডিএন্ডডি লেকপাড়ে হৃদয়ের ক্লাবের ভেতরে মোবাইল ফোনে ফ্রি-ফায়ার গেম খেলতে যায়। গেম খেলা শেষে তারা ক্লাবের দক্ষিণ পাশে আড্ডা দিচ্ছিল।

 

এ সময় মো. মেহেদী, শুভ এবং তাদের সঙ্গে থাকা এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি সেখানে দিয়ে যাচ্ছিল। তখন ১নং সাক্ষী মো. আশরাফুল ইসলাম আমার ছেলেকে জানায়, তারা একদিন আগে তাকে মারধর করেছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।

 

এক পর্যায়ে মেহেদীর সঙ্গে থাকা অজ্ঞাত ব্যক্তি মোবাইল ফোনে হৃদয়, আতিক, জাহিদসহ আরও ৭-৮ জনকে ডেকে আনে। এরপর আমার ছেলে ও তার বন্ধুরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে চাইলে তারা বাধা দিয়ে বলে, “তোমরা যেতে পারবে না, ক্লাবে চলো।”

 

পরবর্তীতে সবাই ক্লাবের সামনে পৌঁছালে অভিযুক্তরা আমার ছেলে ও তার বন্ধুদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে হৃদয় তার সঙ্গে থাকা সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে আমার ছেলের বাম বুকের পাশে সজোরে আঘাত করে। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

 

তার বন্ধুরা দ্রুত তাকে সুফিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে নারায়ণগঞ্জের খাঁনপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতাল এবং সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢামেক হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

 

তিনি বলেন,  মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।

 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনুর আলম জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে। এঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» হাসিনার বিচার নিয়ে উপদেষ্টাদের সতর্ক থাকতে হবে : এ্যানি

» ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৫ বছর থাকার বিষয়ে এনসিপির সংশ্লিষ্টতা নেই’ : আখতার হোসেন

» উপদেষ্টা আসিফের সাবেক এপিএসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও এনআইডি ব্লকের সিদ্ধান্ত দুদকের

» “জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সস্তা নাটক করছেন ড.ইউনূস” : রুমিন ফারহানা

» সৌম্যকে মুক্তি দিয়ে ‘ডাক’ মারার রেকর্ডে শীর্ষে সাকিব

» ঈদে আসছে নতুন টাকা, থাকছে না কোনও ব্যক্তির ছবি: গভর্নর

» জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১৭৪৪ জন গ্রেফতার

» উচ্চ আদালত নিয়ে মন্তব্যে সারজিস আলমকে আইনি নোটিশ

» পার্কে ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্য গ্রেফতার

ফাইল ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কথা কাটাকাটির জেরে মো. আব্দুল্লাহ খাঁন রায়হান (১৬) নামে এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

এর আগে নিহত কিশোরের বাবা মো. সামিম খান (৪২) বাদী হয়ে আট আসামির নাম উল্লেখসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার মৃত আলী আহম্মদের ছেলে হৃদয় ওরফে পাইটু হৃদয় (১৫), মো. মেহেদী (১৫), শুভ (১৫), আব্দুল সামাদের ছেলে মো. হৃদয় (৩০), সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল নয়াপাড়া এলাকার মো. ফারুকের ছেলে মো. সাব্বির (১৮), সিদ্ধিরগঞ্জের কাশেমপাড়া কদমতলি এলাকার দুলালের ছেলে মো. আতিক (২২), সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী নাভানা সিটি এলাকার মো. আবুল কাশেমের ছেলে মো. জাহিদ (১৮), নোয়াখালী জেলার মাইজদী থানার মনির হোসেনের ছেলে আল আমিন (২০)। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরও আটজনকে আসামি করা হয়েছে।

 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন-হৃদয়, সাব্বির, আতিক ও আল আমিন।

 

মামলার বাদী মো. সামিম খান বলেন, আমার ছেলে মো. আব্দুল্লাহ খান রায়হান আমার সঙ্গে এসি সার্ভিসিংয়ের কাজ শিখত। ২৩ মে বিকেল ৫টার দিকে সে তার আরও ৪-৫ জন বন্ধুর সঙ্গে দক্ষিণ কদমতলী ডিএন্ডডি লেকপাড়ে হৃদয়ের ক্লাবের ভেতরে মোবাইল ফোনে ফ্রি-ফায়ার গেম খেলতে যায়। গেম খেলা শেষে তারা ক্লাবের দক্ষিণ পাশে আড্ডা দিচ্ছিল।

 

এ সময় মো. মেহেদী, শুভ এবং তাদের সঙ্গে থাকা এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি সেখানে দিয়ে যাচ্ছিল। তখন ১নং সাক্ষী মো. আশরাফুল ইসলাম আমার ছেলেকে জানায়, তারা একদিন আগে তাকে মারধর করেছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।

 

এক পর্যায়ে মেহেদীর সঙ্গে থাকা অজ্ঞাত ব্যক্তি মোবাইল ফোনে হৃদয়, আতিক, জাহিদসহ আরও ৭-৮ জনকে ডেকে আনে। এরপর আমার ছেলে ও তার বন্ধুরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে চাইলে তারা বাধা দিয়ে বলে, “তোমরা যেতে পারবে না, ক্লাবে চলো।”

 

পরবর্তীতে সবাই ক্লাবের সামনে পৌঁছালে অভিযুক্তরা আমার ছেলে ও তার বন্ধুদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে হৃদয় তার সঙ্গে থাকা সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে আমার ছেলের বাম বুকের পাশে সজোরে আঘাত করে। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

 

তার বন্ধুরা দ্রুত তাকে সুফিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে নারায়ণগঞ্জের খাঁনপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতাল এবং সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢামেক হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

 

তিনি বলেন,  মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।

 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনুর আলম জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে। এঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com