সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর গুলশানে একজন সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায় সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদা আনতে গিয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের সাপোর্ট (সমর্থন) দেওয়ার অনেক লোক আছে বলে মন্তব্য করেছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল। তিনি বলেন, চাঁদাবাজদের সাপোর্ট দেওয়ার লোক এনসিপিতেও আছে। চাঁদার টাকার ভাগ শুধু গ্রেপ্তার পাঁচজনই নিতেন না, এর ভাগ অনেককেই দিতেন যারা খুবই পরিচিত মুখ, অনেক বড় নেতা। আমি এই সম্ভাবনাটাকেই গ্রহণ করছি।
গতকাল (রবিবার) একটি ইউটিউব ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন। মাসুদ কামাল বলেন, এই চাঁদাবাজির নেতৃত্বে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ। প্রথম দিন তাদের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের স্বামী আবু জাফর ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিয়েছেন। গতকাল তারা আরো ৪০ লাখ টাকা আনতে যায় এবং এ সময় ওই বাড়ির লোকজন পুলিশে খবর দিতে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
তিনি বলেন, গতকালের এই ঘটনা যখন সর্বত্র প্রচারিত হয়েছে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। কিন্তু একটা কথা মাথায় রাখবেন, আপনি কিন্তু একেবারে কাউকে না জানিয়ে কোন দুর্নীতি করতে পারবেন না। আপনি কাউকে না জানালেও যার সঙ্গে দুর্নীতিটা করলেন তিনি তো জানলেন। তিনি তো আর আনন্দের সঙ্গে আপনাকে টাকাটা দিবেন না।
তিনি হয়তো ভয় পেয়ে টাকা দিচ্ছেন, কিন্তু একটা সময় অতিষ্ঠ হয়ে তিনি বিষয়টি প্রকাশ করে দিবেন। কাজেই আপনি দুর্নীতি করবেন কিন্তু কেউ জানবে না, এটা সম্ভব না।
তিনি আরো বলেন, এই ঘটনার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেছেন— বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ৫ জনের চাঁদাবাজির খবর শুনে আমার পরিচিত ব্যক্তিবর্গ এতটাই আশ্চার্যান্বিত হওয়ার অভিনয় করছেন। এ বিষয়ে মাসুদ কামাল বলেন, মানে তার (উমামা) বক্তব্য হলো তার পরিচিত ব্যক্তিদের যারা আশ্চর্যান্বিত হয়েছেন, তারা আসলে অভিনয় করেছেন। উমামা ফাতেমার ধারণা তারাও সব জানতেন।
মাসুদ কামাল আরো বলেন, উমামা ফাতেমা শেষের লাইনে লিখেছেন— ঠিকমত খোঁজ দিলে বুঝবেন এদের শেকড় অনেক গভীরে। এই কথাটার কী অর্থ? এর অর্থ আমি যেভাবে বুঝি সেটা হলো— এদের সাপোর্ট দেওয়ার অনেক লোক আছে। এদের (চাঁদাবাজ) সাপোর্ট দেওয়ার লোক এনসিপিতেও আছে। চাঁদার টাকা শুধু গ্রেপ্তার পাঁচজনই নিতেন না, এর ভাগ অনেককেই দিতেন যারা খুবই পরিচিত মুখ, অনেক বড় নেতা। আমি এই সম্ভাবনাটাকে গ্রহণ করছি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারজিস আলমের দেওয়া এক স্ট্যাটাসের তিনি সেনাবাহিনীকে ‘তেল দিয়েছেন’ উল্লেখ করে মাসুদ কামাল বলেন, এতদিন পরে সারজিস আলম এমন ‘নির্জলা তেল মর্দন’ করতে চান কেন? এখন কেন? তিনি কি আইএসপিআর এ চাকরি পেয়েছেন? তিনি কি সেনাবাহিনীর পিআরও এর চাকরি নিয়েছেন? নাকি আপনি কোন চাপে আছেন? আপনাকে কেউ চাপ দিয়েছে।
সারজিস আলমের উদ্দেশে মাসুদ কামাল আরো বলেন, আপনার কোনো অপকর্ম ফাঁস হয়ে যেতে পারে এই ভেবে কি আপনি কাজটা করেছেন? যখন আপনার অপকর্মের কথা ভাবি, তখন কি আমি উমামা ফাতেমার সেই মন্তব্য— বিষয়টার শেকড় অনেক গভীরে; এটা ভাবব? সেই গভীরে কি আপনি অবস্থান করছেন? এই বিষয়গুলো কিন্তু আসবে, পুলিশ কিন্তু পাঁচজনকে রিমান্ডে নিয়েছে, অনেক তথ্য কিন্তু পেয়ে যাবে। গভীরে থাকা সকল নেতৃবৃন্দকে বলব— ভাই আপনারাও এ ধরনের স্ট্যাটাস দেওয়া শুরু করেন।