ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : খিলক্ষেত বাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অবশেষে বড় ধরনের ব্যবস্থা নিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ১০ আগষ্ট রবিবার রাতে পূর্বাচল আর্মি ক্যাম্পের একটি বিশেষ টহল দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শীর্ষ চাঁদাবাজ সাইদুল ইসলাম ওরফে সমাজ (৪৮) এবং তার দুই সহযোগী মো. সাইফুল ইসলাম (৫৮) ও কাঞ্চন খান (৫৫)-কে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।
অভিযান চলাকালে তারা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা গ্যারেজ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছিল। এসময় তাদের কাছ থেকে ২৩ হাজার ৪০০ টাকা নগদ এবং চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন খাতা, নোটবুক ও নথি জব্দ করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব টাকা সেদিনের চাঁদা সংগ্রহের অংশ ছিল।স্থানীয় অটোচালক ও মালিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা ‘অটোরিকশা মালিক সমিতি’ নামে একটি সংগঠনের নাম ব্যবহার করে অটোরিকশা মালিক ও চালকদের কাছ থেকে দৈনিক চাঁদা আদায় করত। প্রতিটি অটো থেকে দৈনিক ২০ টাকা করে নেওয়া হতো, তবে স্টিকার থাকা সত্ত্বেও অনেক চালককে নির্দিষ্ট এলাকায় গাড়ি চালাতে দেওয়া হতো না। ফলে বাধ্য হয়ে চালকরা চাঁদা দিতেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, খিলক্ষেত এলাকার সব অটো গ্যারেজ থেকে দৈনিক প্রায় ১২ হাজার টাকা এবং মাসে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করত এই চক্র। নিজেদের মধ্যে ভাগ করার পর এই টাকার একটি অংশ নিয়মিতভাবে স্থানীয় বিএনপি-সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতার কাছে মাসিক ভিত্তিতে পৌঁছে দেওয়া হতো।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা যে তালিকা দিয়েছে, তাতে অন্তত ১৭ জন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীর নাম রয়েছে, যাদের মধ্যে বিতরণ করতে তারা হলেন, খিলক্ষেত থানা বিএনপি ফজলু আহ্বায়ক– ১০,০০০ টাকা, বিএনপি কর্মী মারফত– ১০,০০০ টাকা, যুগ্ম আহ্বায়ক সিয়াম আনোয়ার– ৫,০০০ টাকা, থানা সেক্রেটারি স্বপন, – ১০,০০০ টাকা, বিএনপি কর্মী আক্তার– ৫,০০০ টাকা
চাঁদাবাজির কারণে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ ছিলেন অটোচালক, মালিক এবং সাধারণ মানুষ। তারা জানিয়েছেন, প্রতিদিনের এই অবৈধ চাঁদা তাদের জীবনে বড় ধরনের আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছিল। অভিযানের পর এলাকাবাসী সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং এই ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
গ্রেপ্তারের পর আসামিদের খিলক্ষেত থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেনাবাহিনী বলেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং অবৈধ কর্মকাণ্ড দমনে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।