গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে আ.লীগ : প্রেস উইং

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। এক বিবৃবিতে বলা হয়েছে, একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে এসব মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।

 

বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের ওপর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকদের হামলার জেরে সৃষ্ট সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগপন্থি একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও পেজ। সকাল থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন এবং আগুন দেওয়া হয়েছে পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতে। সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় প্রশাসন গোপালগঞ্জে রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কঠোর কারফিউ জারি করেছে। অথচ সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ ও প্রেক্ষাপট আড়াল করতে আওয়ামী লীগপন্থি সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীরা সমন্বিত প্রচারণা শুরু করে।

 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে আ.লীগপন্থিরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছে। এসব ছবিকে সহিংসতার দৃশ্য বলে উপস্থাপন করা হয়েছে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এস এম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি এসব ছবি পোস্ট করেচেন। তারা ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে বলেও দাবি করেন।

 

একটি ছবিতে দেখা গেছে, একজন আহত কিশোরকে স্থানীয়রা বহন করছে এবং সেখানে আগুন জ্বলছে, রাস্তায় উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে নৃশংসতার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু রিভার্স ইমেজ সার্চে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি পুরোনো ঘটনার ছবি।

 

অন্য একটি বহুল প্রচারিত পোস্টে, জাকির হোসেন এবং আশরাফুল আলম খোকন একজন ডিবি (ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ) পুলিশ কর্মকর্তার ছবি শেয়ার করেছেন। ওই কর্মকর্তাকে বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি চালাতে দেখা গেছে। প্রকৃতপক্ষে ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপির একটি সমাবেশের সময়ের। ওই সময়ে ছবিতে থাকা ডিবি কর্মকর্তাকে জনতার দিকে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছিল।

 

জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেছেন, যেখানে হাসপাতালে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ছবি বলে এটি প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এটিও ২০২৩ সালের ২০ মার্চের একটি ভিন্ন ঘটনার ছবি।

 

এ ছাড়া একটি শিশুর হাতে লাঠি নিয়ে দাঁড়ানোর ছবি ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে। এটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং এতে রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের জড়িত করা হচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে।। কিন্তু এই ছবিটি গোপালগঞ্জের নয়, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওর স্ক্রিনশট এটি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ‘ছাত্রশিবির বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী’

» দুর্নীতির মামলায় সম্রাটের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

» শেখা হাসিনাকে ‘ডেভিল রানী’ আখ্যা দিয়ে সোহেল তাজের ফেসবুক পোষ্ট

» আমরা মারা গেলে কেউ না কেউ আবার উঠে আসবে: হাসনাত

» ‘বাবারা, রাজনীতির ময়দানে আরও অভিজ্ঞতা সঞ্চার করার নসিহত করছি’: সালাহউদ্দিন

» সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জে এনসিপির পথসভা

» সবার আগে এক দফা ঘোষণা দেন তারেক রহমান: ইশরাক

» গোপালগঞ্জকে আওয়ামী লীগ মুক্ত করা হবে: নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী

» কিছু ঘটলে সরকারকে না বলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিছিল হচ্ছে কেন : প্রশ্ন রিজভীর

» সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করলে গোপালগঞ্জে লং মার্চ : নাহিদ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে আ.লীগ : প্রেস উইং

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। এক বিবৃবিতে বলা হয়েছে, একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে এসব মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।

 

বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের ওপর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকদের হামলার জেরে সৃষ্ট সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগপন্থি একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও পেজ। সকাল থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন এবং আগুন দেওয়া হয়েছে পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতে। সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় প্রশাসন গোপালগঞ্জে রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কঠোর কারফিউ জারি করেছে। অথচ সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ ও প্রেক্ষাপট আড়াল করতে আওয়ামী লীগপন্থি সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীরা সমন্বিত প্রচারণা শুরু করে।

 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে আ.লীগপন্থিরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছে। এসব ছবিকে সহিংসতার দৃশ্য বলে উপস্থাপন করা হয়েছে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এস এম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি এসব ছবি পোস্ট করেচেন। তারা ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে বলেও দাবি করেন।

 

একটি ছবিতে দেখা গেছে, একজন আহত কিশোরকে স্থানীয়রা বহন করছে এবং সেখানে আগুন জ্বলছে, রাস্তায় উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে নৃশংসতার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু রিভার্স ইমেজ সার্চে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি পুরোনো ঘটনার ছবি।

 

অন্য একটি বহুল প্রচারিত পোস্টে, জাকির হোসেন এবং আশরাফুল আলম খোকন একজন ডিবি (ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ) পুলিশ কর্মকর্তার ছবি শেয়ার করেছেন। ওই কর্মকর্তাকে বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি চালাতে দেখা গেছে। প্রকৃতপক্ষে ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপির একটি সমাবেশের সময়ের। ওই সময়ে ছবিতে থাকা ডিবি কর্মকর্তাকে জনতার দিকে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছিল।

 

জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেছেন, যেখানে হাসপাতালে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ছবি বলে এটি প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এটিও ২০২৩ সালের ২০ মার্চের একটি ভিন্ন ঘটনার ছবি।

 

এ ছাড়া একটি শিশুর হাতে লাঠি নিয়ে দাঁড়ানোর ছবি ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে। এটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং এতে রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের জড়িত করা হচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে।। কিন্তু এই ছবিটি গোপালগঞ্জের নয়, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওর স্ক্রিনশট এটি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com