সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, গোপালগঞ্জের ঘটনায় সরকার-প্রশাসন দায় এড়াতে পারবে না।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পল্টন থানা আয়োজিত গণসংযোগ ও প্রচার মিছিলপূর্ব বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গোপালগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের সমাবেশের মঞ্চ ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে জুলাই যোদ্ধাদের অবরুদ্ধ করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের ঘটনায় সরকার ও প্রশাসন দায় এড়াতে পারবে না। প্রশাসনকে এর জবাব দিতে হবে, কীভাবে তাদের উপস্থিতিতে আওয়ামী ফ্যাসিস্টের দোসররা এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের অংশ, এটা মনে রাখতে হবে। গোপালগঞ্জ আধিপত্যবাদী দিল্লির অংশ নয়। মহান স্বাধীনতার রক্তে অর্জিত বাংলাদেশের ভূখণ্ডের একটি অংশ এটি। এখানে আধিপত্যবাদের দোসররা রাজত্ব কায়েম করতে পারে না, পারবে না।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ১৯ জুলাইয়ের জাতীয় সমাবেশের গুরুত্ব অপরিসীম। এই সমাবেশ থেকে জাতীয় নেতৃবৃন্দ আগামীর বাংলাদেশের দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন।
সারাদেশ থেকে দলে দলে সমাবেশে যোগ দিতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে অত্যাচার, অনাচার, জুলুম, নির্যাতন, অর্থনৈতিক নিপীড়ন, খুন, গুম, ক্রসফায়ার, সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও মানবিক সব অধিকার লুণ্ঠিত করায় জনগণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সেই প্রতিরোধে আওয়ামী লীগের বিদায় হওয়ায় আমরা একটি নতুন রাজনৈতিক পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ সব দলের শাসন ব্যবস্থা দেখেছে। এবার মানুষ নতুন পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তন ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অনাহার, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন একটি সুবিচারপূর্ণ বাংলাদেশ চায়। যেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জাতিকে উপহার দিতে প্রস্তুত রয়েছে। পরিবর্তনের জন্য নির্বাচনের প্রয়োজন। তবে নির্বাচনের আগে বিগত ১৭ বছরের সব গণহত্যার বিচার নিশ্চিত, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণের দাবিতে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দীতে ১৯ জুলাই জাতীয় সমাবেশ হবে।
তিনি ৭ দফা দাবি আদায়ে দেশবাসীকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, জামায়াতে ইসলামীর উত্থাপিত ৭ দফা দাবি আদায়ে দেশবাসীকে ১৯ জুলাইয়ে জাতীয় সমাবেশে যোগদানের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই দাবি জামায়াতে ইসলামীর দলীয় কোনো দাবি নয়। এই দাবি দেশের প্রয়োজনে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণমানুষের দাবি।
তিনি সমাবেশ থেকে গোপালগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের পদযাত্রায় আওয়ামী দোসরদের হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের পথ বন্ধ করে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে জামায়াতে ইসলামী ৭ দফা দাবি উত্থাপন করেছে। এই দাবি আদায় হলেই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে।
সমাবেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, মহানগর সহকারী প্রচার সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমনসহ মহানগরী ও পল্টন থানা জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।