গৃহকর্মীকে জাকাত ও ফিতরার টাকা দেওয়া যাবে?

গৃহকর্মী যদি ফকির বা মিসকিনের পর্যায়ে পড়ে যায়, তাহলে তাকে জাকাত ও ফিতরা দেওয়া যাবে। উনি যেহেতু বলেছেন, তার গৃহকর্মী দিন আনে দিন খায়। মানে, তাদের তেমন কোনো সঞ্চয় নেই। যদি এমন হয়, তাহলে তাদের জাকাত কিংবা ফিতরা দিতে কোনো রকমের বাধা নেই।

 

তবে, আপনি যদি তাকে জাকাত ও ফিতরার টাকা দেন, তাহলে অবশ্যই তাকে বলে দিতে হবে। না হলে সে ভাববে আপনি কাজের জন্য বোনাস দিচ্ছেন কিংবা সাহায্য করছেন। যদি না বলে দেন, তাহলে জাকাত কিংবা ফিতরা কোনোটাই আদায় হবে না। তাই, অবশ্যই আপনাকে বলে দিতে হবে সুনির্দিষ্টভাবে। দেওয়ার সময় তাকে বলে দেবেন—এটা জাকাতের টাকা, এটা ফিতরার টাকা। এটা কোনো কাজের বিনিময়ে দেওয়া অর্থ নয়। তাহলে আর সমস্যা থাকবে না।

জাকাত: প্রত্যেক ধনবান ব্যক্তি বা নেসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী ব্যক্তির উপর জাকাত ফরজ। সাড়ে সাত তোলা (৮৫ গ্রাম) সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা (৫৯৫ গ্রাম) রূপা অথবা তার সমমূল্যের সম্পদকে নেসাব বলা হয়।

 

এই পরিমাণ সম্পদ যখন কোন ব্যক্তির জীবন ধারনের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণাদির অতিরিক্ত হবে এবং পূর্ণ এক বছর সে ঐ সম্পদের মালিক থাকবে, তখন তার উপর জাকাত ফরজ হবে। স্বর্ণ-রূপা ও নগদ অর্থ ও ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের বছরান্তে ৪০ ভাগের এক ভাগ বা শতকরা ২.৫% জাকাত বাবত আদায় করতে হবে।

 

সোনার নেসাব অনুযায়ী সোনার জাকাত এবং রূপার নেসাব অনুযায়ী রূপার জাকাত আদায় করতে হবে। নগদ টাকা এবং ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের জাকাত রূপার নেসাবের হিসাবে আদায় করতে হবে। অর্থাৎ নগদ টাকা বা ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের জাকাত আদায় করার সময় সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যকে পরিমাণ ধার্য করতে হবে।

 

ফিতরা :ফিতরা দেওয়া ফরজ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের রোজা শেষ হওয়ার আগেই ফিতরা আদায় করতে বলেছেন। জাকাতুল ফিতর ওইসব মুমিন মুসলমান রোজাদারের জন্য আবশ্যক; যারা ঈদের রাত ও দিনে একান্ত প্রয়োজনীয় এবং নিজের ও পরিবারের খাবারের অতিরিক্ত খাদ্য মজুদ থাকে। আর ফরজ আদায়ে সবার জন্য এ বিধান সমান।

 

যারা জাকাত নিতে পারবেন, তারাই সাদাকাতুল ফিতর পাওয়ার উপযুক্ত। তবে সমাজের দরিদ্র-অনাথ এবং নিজের গরীব আত্মীয় ও প্রতিবেশীকে দেয়াটাই অধিক উত্তম। কেননা হাদীসে সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, দরিদ্রের খাবারের ব্যবস্থা করা। অতএব সাদাকাতুল ফিতর একমাত্র দরিদ্র-অনাথকে দিয়ে ঈদের আনন্দে তাদের শামিল করবে এবং নিজের রোজাকে ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে পরিচ্ছন্ন করবে- এটাই হবে সাদাকাতুল ফিতরের লক্ষ্য।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আপনার অন্তর্বর্তী সরকারের দুই এনসিপি মার্কা উপদেষ্টাকো পদত্যাগ করতে বলুন- ড. ইউনুসকে সালাউদ্দিন

» দেশের মানুষ দিল্লির দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়েছে ওয়াশিংটনের গোলামী করতে নয়: মামুনুল হক

» শেখ হাসিনার মধু খেয়ে রাজনীতি করেছি কিনা তার জবাব জনগণই দিবে: ইশরাক

» জামায়াতের সপ্তাহব্যাপী তৃষ্ণার্ত পথচারীদের মাঝে সুপেয় পানি বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন

» “আলহামদুলিল্লাহ, জামায়াতে ইসলামী এখন দেশের একটি শক্তিশালী ও জনভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠন: মাসুদ

» ৫ আগস্টের পরে আমরা আবারও সাংস্কৃতিক যুদ্ধে জড়িয়ে গেছি: হাসনাত

» দু-এক মাসের মধ্যে ইন্টারনেটের দাম কমবে: উপদেষ্টা আসিফ

» নির্বাচন কমিশন কখন তফসিল ঘোষণা করবে জাতি জানতে চায় :  রুহুল কবির রিজভী

» জনগণের অগ্রগতির একমাত্র অবলম্বন বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা-উপদেষ্টা এএসএম আঃ হালিম

» শাওমির ঈদ ক্যাম্পেইনে জয়ী প্রথম পাঁচজনের হাতে মেগাপুরস্কার তুলে দিলেন ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবাল

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : dhakacrimenewsbd@gmail.com

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

গৃহকর্মীকে জাকাত ও ফিতরার টাকা দেওয়া যাবে?

গৃহকর্মী যদি ফকির বা মিসকিনের পর্যায়ে পড়ে যায়, তাহলে তাকে জাকাত ও ফিতরা দেওয়া যাবে। উনি যেহেতু বলেছেন, তার গৃহকর্মী দিন আনে দিন খায়। মানে, তাদের তেমন কোনো সঞ্চয় নেই। যদি এমন হয়, তাহলে তাদের জাকাত কিংবা ফিতরা দিতে কোনো রকমের বাধা নেই।

 

তবে, আপনি যদি তাকে জাকাত ও ফিতরার টাকা দেন, তাহলে অবশ্যই তাকে বলে দিতে হবে। না হলে সে ভাববে আপনি কাজের জন্য বোনাস দিচ্ছেন কিংবা সাহায্য করছেন। যদি না বলে দেন, তাহলে জাকাত কিংবা ফিতরা কোনোটাই আদায় হবে না। তাই, অবশ্যই আপনাকে বলে দিতে হবে সুনির্দিষ্টভাবে। দেওয়ার সময় তাকে বলে দেবেন—এটা জাকাতের টাকা, এটা ফিতরার টাকা। এটা কোনো কাজের বিনিময়ে দেওয়া অর্থ নয়। তাহলে আর সমস্যা থাকবে না।

জাকাত: প্রত্যেক ধনবান ব্যক্তি বা নেসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী ব্যক্তির উপর জাকাত ফরজ। সাড়ে সাত তোলা (৮৫ গ্রাম) সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা (৫৯৫ গ্রাম) রূপা অথবা তার সমমূল্যের সম্পদকে নেসাব বলা হয়।

 

এই পরিমাণ সম্পদ যখন কোন ব্যক্তির জীবন ধারনের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণাদির অতিরিক্ত হবে এবং পূর্ণ এক বছর সে ঐ সম্পদের মালিক থাকবে, তখন তার উপর জাকাত ফরজ হবে। স্বর্ণ-রূপা ও নগদ অর্থ ও ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের বছরান্তে ৪০ ভাগের এক ভাগ বা শতকরা ২.৫% জাকাত বাবত আদায় করতে হবে।

 

সোনার নেসাব অনুযায়ী সোনার জাকাত এবং রূপার নেসাব অনুযায়ী রূপার জাকাত আদায় করতে হবে। নগদ টাকা এবং ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের জাকাত রূপার নেসাবের হিসাবে আদায় করতে হবে। অর্থাৎ নগদ টাকা বা ব্যবসায় নিয়োজিত পণ্যের জাকাত আদায় করার সময় সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যকে পরিমাণ ধার্য করতে হবে।

 

ফিতরা :ফিতরা দেওয়া ফরজ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের রোজা শেষ হওয়ার আগেই ফিতরা আদায় করতে বলেছেন। জাকাতুল ফিতর ওইসব মুমিন মুসলমান রোজাদারের জন্য আবশ্যক; যারা ঈদের রাত ও দিনে একান্ত প্রয়োজনীয় এবং নিজের ও পরিবারের খাবারের অতিরিক্ত খাদ্য মজুদ থাকে। আর ফরজ আদায়ে সবার জন্য এ বিধান সমান।

 

যারা জাকাত নিতে পারবেন, তারাই সাদাকাতুল ফিতর পাওয়ার উপযুক্ত। তবে সমাজের দরিদ্র-অনাথ এবং নিজের গরীব আত্মীয় ও প্রতিবেশীকে দেয়াটাই অধিক উত্তম। কেননা হাদীসে সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, দরিদ্রের খাবারের ব্যবস্থা করা। অতএব সাদাকাতুল ফিতর একমাত্র দরিদ্র-অনাথকে দিয়ে ঈদের আনন্দে তাদের শামিল করবে এবং নিজের রোজাকে ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে পরিচ্ছন্ন করবে- এটাই হবে সাদাকাতুল ফিতরের লক্ষ্য।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : dhakacrimenewsbd@gmail.com

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com