গাজায় তীব্র বোমাবর্ষণ, কি বলছে আন্তর্জাতিক মহল?

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক : গাজা সিটিতে আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাস-নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানিয়েছে, গত তিন দিন ধরে শহরের জেইতুন ও সাবরা এলাকায় ব্যাপক বিমান ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। যাতে অসংখ্য বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রচণ্ড গোলাবর্ষণের কারণে নিহত ও আহতদের উদ্ধারে ব্যর্থ হচ্ছেন বাসিন্দারা।

 

একই সময়ে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপান এক যৌথ বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, আমাদের চোখের সামনে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। তারা গাজায় অবিলম্বে পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিতের জন্য স্থায়ী ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। ইসরায়েল অবশ্য গাজাবাসীকে অনহারে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সাহায্য বিতরণকেন্দ্র ও ট্রাকের কাছে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ইতিমধ্যে ১৩শ’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ‘বিপর্যয়কর’ স্বাস্থ্য সংকট তৈরি হয়েছে। তারা ইসরায়েলকে হাসপাতালের জন্য জরুরি ওষুধ ও সরঞ্জাম মজুত করার অনুমতি দিতে আহ্বান জানিয়েছে।

 

ইসরায়েলের যুদ্ধ মন্ত্রিসভা সোমবার গাজা সিটি দখলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করা হয়। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজা সিটি ও আল-মাওয়াসি ঘিরে থাকা দুটি অবশিষ্ট হামাস ঘাঁটি ধ্বংস করা হবে এবং সহায়তা পৌঁছাতে নিরাপদ করিডর ও আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানো হবে।

 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩১ জন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র থেকে। এছাড়াও ৫ জন অপুষ্টিতে মারা গেছেন।

 

আন্তর্জাতিক প্রবীণ নেতাদের সংগঠন “দ্য এল্ডার্স”-এর সদস্য হেলেন ক্লার্ক ও মেরি রবিনসন পরিস্থিতিকে “চলমান গণহত্যা” বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলেছেন, গাজায় দুর্ভিক্ষ মানবসৃষ্ট এবং ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডই এর জন্য দায়ী।

 

এদিকে, রবিবার গাজা সিটিতে এক মিডিয়া তাঁবুতে ইসরায়েলের লক্ষ্যভিত্তিক হামলায় আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত হন, যাদের মধ্যে ছিলেন খ্যাতনামা প্রতিবেদক আনাস আল-শরিফ। ইসরায়েল দাবি করেছে, তিনি হামাসের একটি সেলের নেতা ছিলেন, তবে প্রমাণ খুব সামান্যই দেখানো হয়েছে। আল জাজিরা অভিযোগ করেছে, এটি গাজার ভেতরের খবর প্রচার বন্ধ করার প্রচেষ্টা।

 

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের চালানো অভিযানে গাজায় অন্তত ৬১ হাজার ৫৯৯ জন নিহত হয়েছেন।   সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আন্দোলন না হলে তারেক জিয়া দেশে ফেরার স্বপ্নও দেখতো না: ফয়জুল করীম

» জাতীয় ঐক্য ধরে না রাখা গেলে আরেকটি ১/১১ আসবে: নাহিদ

» ‘আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে মানহানি মামলা হয়’: সারজিস

» ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে মার্কিন প্রতিনিধিদলের বৈঠক

» ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

» দিল্লি-পিন্ডি বাদ দিয়ে বাংলাদেশের স্লোগান দিতে হবে: ডা. তাহের

» আইএল টি-টোয়েন্টি: দুবাই ক্যাপিটালসে মুস্তাফিজ

» জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে : ডিএমপি কমিশনার

» ভিন্ন পথে হাঁটতে চাইছেন দীপিকা

» ভোট দিলে ধানের শীষে, দেশ গড়ব মিলেমিশে: তারেক রহমান

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

গাজায় তীব্র বোমাবর্ষণ, কি বলছে আন্তর্জাতিক মহল?

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক : গাজা সিটিতে আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাস-নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানিয়েছে, গত তিন দিন ধরে শহরের জেইতুন ও সাবরা এলাকায় ব্যাপক বিমান ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। যাতে অসংখ্য বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রচণ্ড গোলাবর্ষণের কারণে নিহত ও আহতদের উদ্ধারে ব্যর্থ হচ্ছেন বাসিন্দারা।

 

একই সময়ে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপান এক যৌথ বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, আমাদের চোখের সামনে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। তারা গাজায় অবিলম্বে পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিতের জন্য স্থায়ী ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। ইসরায়েল অবশ্য গাজাবাসীকে অনহারে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সাহায্য বিতরণকেন্দ্র ও ট্রাকের কাছে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ইতিমধ্যে ১৩শ’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ‘বিপর্যয়কর’ স্বাস্থ্য সংকট তৈরি হয়েছে। তারা ইসরায়েলকে হাসপাতালের জন্য জরুরি ওষুধ ও সরঞ্জাম মজুত করার অনুমতি দিতে আহ্বান জানিয়েছে।

 

ইসরায়েলের যুদ্ধ মন্ত্রিসভা সোমবার গাজা সিটি দখলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করা হয়। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজা সিটি ও আল-মাওয়াসি ঘিরে থাকা দুটি অবশিষ্ট হামাস ঘাঁটি ধ্বংস করা হবে এবং সহায়তা পৌঁছাতে নিরাপদ করিডর ও আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানো হবে।

 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩১ জন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র থেকে। এছাড়াও ৫ জন অপুষ্টিতে মারা গেছেন।

 

আন্তর্জাতিক প্রবীণ নেতাদের সংগঠন “দ্য এল্ডার্স”-এর সদস্য হেলেন ক্লার্ক ও মেরি রবিনসন পরিস্থিতিকে “চলমান গণহত্যা” বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলেছেন, গাজায় দুর্ভিক্ষ মানবসৃষ্ট এবং ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডই এর জন্য দায়ী।

 

এদিকে, রবিবার গাজা সিটিতে এক মিডিয়া তাঁবুতে ইসরায়েলের লক্ষ্যভিত্তিক হামলায় আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত হন, যাদের মধ্যে ছিলেন খ্যাতনামা প্রতিবেদক আনাস আল-শরিফ। ইসরায়েল দাবি করেছে, তিনি হামাসের একটি সেলের নেতা ছিলেন, তবে প্রমাণ খুব সামান্যই দেখানো হয়েছে। আল জাজিরা অভিযোগ করেছে, এটি গাজার ভেতরের খবর প্রচার বন্ধ করার প্রচেষ্টা।

 

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের চালানো অভিযানে গাজায় অন্তত ৬১ হাজার ৫৯৯ জন নিহত হয়েছেন।   সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com