গাছে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে নারী কণ্ঠ, কেন হচ্ছে এমন?

ছবি সংগৃহীত

 

গাছে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে নারী কণ্ঠ। এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।  দূর-দূরান্ত থেকে গাছের কথা শুনতে ছুটে আসছেন উৎসুক জনতা। এমন ঘটনা ঘটছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের গজিনা গ্রামে। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে আশপাশের এলাকাজুড়ে।

তবে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বলছে গাছ থেকে কথা শোনার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কেন গাছ থেকে নারীকণ্ঠ শুনতে পাচ্ছেন অনেকেই?- এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে মনোবিজ্ঞানে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

স্থানীয়দের দাবি, গত এক সপ্তাহ আগে ওই এলাকার নিরব নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু গাছটিতে ধারালো দা দিয়ে কোপ দিলে গাছ বলে ওঠে ‘আমাকে মারিস না’। পরে সে এ ঘটনা পাশের একজন মহিলাকে বললে, বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। দলে দলে এসে গাছে কান পেতে শোনার চেষ্টা করে সবাই। তাদেরও একই দাবি, গাছে কান পাতলে নারী কণ্ঠে কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কেউ সালামের উত্তর শুনছেন, আবার কেউ কান্না বা আর্তনাদের আওয়াজ শুনছেন। আবার অনেকেই বলছেন ভুয়া। কান পাতলে গাছ ও পাতা নড়ার শব্দ শোনা যায়।

এমন ঘটনা আশপাশের কয়েক এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গাছটি দেখতে ও কথা শুনতে ছুটে আসে উৎসুক জনতা। গাছটিকে পবিত্র আখ্যা দিয়ে গাছের চারপাশ ঘিরে বাঁশের বেড়া দেন এলাকাবাসী। কেউ কেউ আবার মানত করে গাছের গোড়ায় ফেলতে থাকে টাকা।  পরে কয়েকজন মুসল্লির অনুরোধ বেড়া ভাঙা ও টাকা তোলা বন্ধ হয়। তবে এখনো এলাকাবাসীর দাবি, গাছ সত্যি সত্যিই কথা বলছে। গাছটি দেখতে মাদারীপুর, বরিশালসহ আশপাশের কয়েকটি জেলা থেকে মানুষ আসছেন।

শেফালী নামে এক নারী বলেন, আমার ভাতিজা নিরব সপ্তাহ খানেক আগে গাছে কোপ দিলে গাছ তাকে বলে, ‘আমাকে মারিস না’। পরে আমাদের এসে বললে আমরা সবাই গিয়ে কান পাতি। তখন সবাই ভেতর থেকে নারীর কণ্ঠ শুনতে পাই। আমাদের প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছে গাছ।

 

স্থানীয় রাঘদি ইউপি মেম্বার সাদ্দাম হোসেন, রাঘদি গ্রামের লিয়াকত হোসেন, টেকেরহাট সোহেল মাতুব্বর, গর্জিনা গ্রামের ফরিদ মোল্লা সহ আগন্তুক ও কৌতুহলী মানুষ গাছের গায়ে কান পেতে কথা শোনার চেষ্টা করেন। শুধু বড়রাই নয়, কথা শোনার চেষ্টা করে শিশুরাও। এতে অনেক দর্শনার্থী গাছের কথা শুনতে পান দাবি করেন।

 

তবে এ ঘটনায় বিজ্ঞান বলছে ভিন্ন কথা। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক নাহমিনা বেগম বলেন, গাছে কান পাতলে কথা শোনা যায় এটার বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। তবে গাছের একটি শক্ত নেটওয়ার্ক রুট রয়েছে। যা অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর মাধ্যমে এক গাছ আরেক গাছ কে উপকার করে থাকে। তবে গাছে কান পাতলে কথা শোনার বিষয়টি গুজব বলে দাবি তার।

 

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক নুসরাত শারমিন বলেন, শুনে মনে হচ্ছে বিষয়টি প্যারিডোলিয়া হতে পারে। প্যারাডোলিয়া এমন মনস্তাত্ত্বিক রোগ যা, এতে কোনো বস্তুগত বিষয়কে ব্যক্তি অর্থবহ করে তুলতে পছন্দ করে। এছাড়া মানুষের মাস হিস্ট্রেরিয়া থেকেও মানুষের মাঝে এমন ভ্রাবত ধারণা ছড়িয়ে পড়তে পারে। সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» শান্তি প্রতিষ্ঠায় তথ্যের সততা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করতে হবে

» আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় আসছেন নেতাকর্মীরা

» সিলেট-সুনামগঞ্জে আবারও বন্যার শঙ্কা

» একসাথে

» তৈরি করুন জাপানি সুশি, রইলো রেসিপি

» জমি বিরোধের জেরে কৃষককে পিটিয়ে ও পানিতে চুবিয়ে হত্যা

» বৃদ্ধ পাহারাদারকে পুড়িয়ে হত্যা

» শরীর সুস্থ রাখে যেসব ভিটামিন

» পুকুরে ধরা পড়ল ১০ রুপালি ইলিশ

» দুই মাস পর চালু হল দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

গাছে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে নারী কণ্ঠ, কেন হচ্ছে এমন?

ছবি সংগৃহীত

 

গাছে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে নারী কণ্ঠ। এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।  দূর-দূরান্ত থেকে গাছের কথা শুনতে ছুটে আসছেন উৎসুক জনতা। এমন ঘটনা ঘটছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের গজিনা গ্রামে। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে আশপাশের এলাকাজুড়ে।

তবে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বলছে গাছ থেকে কথা শোনার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কেন গাছ থেকে নারীকণ্ঠ শুনতে পাচ্ছেন অনেকেই?- এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে মনোবিজ্ঞানে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

স্থানীয়দের দাবি, গত এক সপ্তাহ আগে ওই এলাকার নিরব নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু গাছটিতে ধারালো দা দিয়ে কোপ দিলে গাছ বলে ওঠে ‘আমাকে মারিস না’। পরে সে এ ঘটনা পাশের একজন মহিলাকে বললে, বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। দলে দলে এসে গাছে কান পেতে শোনার চেষ্টা করে সবাই। তাদেরও একই দাবি, গাছে কান পাতলে নারী কণ্ঠে কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কেউ সালামের উত্তর শুনছেন, আবার কেউ কান্না বা আর্তনাদের আওয়াজ শুনছেন। আবার অনেকেই বলছেন ভুয়া। কান পাতলে গাছ ও পাতা নড়ার শব্দ শোনা যায়।

এমন ঘটনা আশপাশের কয়েক এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গাছটি দেখতে ও কথা শুনতে ছুটে আসে উৎসুক জনতা। গাছটিকে পবিত্র আখ্যা দিয়ে গাছের চারপাশ ঘিরে বাঁশের বেড়া দেন এলাকাবাসী। কেউ কেউ আবার মানত করে গাছের গোড়ায় ফেলতে থাকে টাকা।  পরে কয়েকজন মুসল্লির অনুরোধ বেড়া ভাঙা ও টাকা তোলা বন্ধ হয়। তবে এখনো এলাকাবাসীর দাবি, গাছ সত্যি সত্যিই কথা বলছে। গাছটি দেখতে মাদারীপুর, বরিশালসহ আশপাশের কয়েকটি জেলা থেকে মানুষ আসছেন।

শেফালী নামে এক নারী বলেন, আমার ভাতিজা নিরব সপ্তাহ খানেক আগে গাছে কোপ দিলে গাছ তাকে বলে, ‘আমাকে মারিস না’। পরে আমাদের এসে বললে আমরা সবাই গিয়ে কান পাতি। তখন সবাই ভেতর থেকে নারীর কণ্ঠ শুনতে পাই। আমাদের প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছে গাছ।

 

স্থানীয় রাঘদি ইউপি মেম্বার সাদ্দাম হোসেন, রাঘদি গ্রামের লিয়াকত হোসেন, টেকেরহাট সোহেল মাতুব্বর, গর্জিনা গ্রামের ফরিদ মোল্লা সহ আগন্তুক ও কৌতুহলী মানুষ গাছের গায়ে কান পেতে কথা শোনার চেষ্টা করেন। শুধু বড়রাই নয়, কথা শোনার চেষ্টা করে শিশুরাও। এতে অনেক দর্শনার্থী গাছের কথা শুনতে পান দাবি করেন।

 

তবে এ ঘটনায় বিজ্ঞান বলছে ভিন্ন কথা। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক নাহমিনা বেগম বলেন, গাছে কান পাতলে কথা শোনা যায় এটার বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। তবে গাছের একটি শক্ত নেটওয়ার্ক রুট রয়েছে। যা অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর মাধ্যমে এক গাছ আরেক গাছ কে উপকার করে থাকে। তবে গাছে কান পাতলে কথা শোনার বিষয়টি গুজব বলে দাবি তার।

 

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক নুসরাত শারমিন বলেন, শুনে মনে হচ্ছে বিষয়টি প্যারিডোলিয়া হতে পারে। প্যারাডোলিয়া এমন মনস্তাত্ত্বিক রোগ যা, এতে কোনো বস্তুগত বিষয়কে ব্যক্তি অর্থবহ করে তুলতে পছন্দ করে। এছাড়া মানুষের মাস হিস্ট্রেরিয়া থেকেও মানুষের মাঝে এমন ভ্রাবত ধারণা ছড়িয়ে পড়তে পারে। সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com