গণহত্যাকারীদের সঙ্গে জড়িতদের ক্ষমা করার অধিকার কারও নেই: ডা. শফিকুর রহমান

ছবি সংগৃহীত

 

কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন পর্যন্ত তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সুস্পষ্ট গণহত্যা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

 

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘এই গণহত্যাকারীদের সঙ্গে জড়িতদের ক্ষমা করার অধিকার কারও নেই। এছাড়াও প্রতিশোধ নেবো না বলতে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া হবে না এমনটাই বোঝানো হয়েছিল।

আজ  মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রসমাজ এই আন্দোলন শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছিল। কোলের দেড় মাসের শিশু থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বৃদ্ধাও এই আন্দোলনে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। মা তার দেড় মাসের বাচ্চাকে নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন হাজারো মায়ের শিশু যেখানে অধিকার আদায়ে রাস্তায় নেমে এসেছে, আমার আর বড় শিশু নেই থাকলে পাঠিয়ে দিতাম। আমারতো আর বড় সন্তান নেই। তাই কোলের শিশুকে নিয়ে এসেছি।

 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাদের পরিকল্পনা ছিল সরকার টিকিয়ে রাখতে হবে। মানুষ যা মারা যাবে কোনো অসুবিধা নেই। এজন্য শুধু স্থলভাগেই গুলি ছোড়েনি, আকাশ থেকেও গুলি ছুড়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এমন কিছু এদেশের মানুষকে দেখতে হবে তার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। এসময় ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের মরদেহ গুম করা হয়েছে। আশুলিয়ার ঘটনা দেখেছেন, সেখানে ভ্যানের ওপর মরদেহের স্তূপ, সেখানে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে আগুন। আমরা কোন সভ্যতায় বসবাস করছি! এসব ঘটনা যারা ঘটিয়েছে আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাবো তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতেই হবে। এই গণহত্যা ক্ষমা করার অধিকার কারও নেই।

 

বিগত সাড়ে ১৫ বছরের কষ্টের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দল হিসেবে আমাদের সঙ্গে যে বৈরী আচরণ করা হয়েছে, আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে, আমাদের অফিস কেড়ে নেওয়া হয়েছে, স্বস্তির সঙ্গে আমাদের চলতে দেওয়া হয়নি, দফায় দফায় নির্যাতন করা হয়েছে বিভিন্নভাবে, শেষ পর্যন্ত দিশেহারা সরকার আমাদের নিষিদ্ধ করে তাদের কলিজা ঠান্ডা করেছে। আমরা বলেছি যে আমরা প্রতিশোধ নেবো না। এর মানে হচ্ছে আমরা আইন হাতে তুলে নেবো না। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অপরাধ যিনি করেছেন তার বিরুদ্ধে মামলাও হবে। তাকে শাস্তি পেতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে, আবার সাড়ে ১৫ বছর ধরে যেসব অপরাধ করা হয়েছে তারও বিচার করতে হবে।

 

শাপলা চত্বরে যা হয়েছে তা আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা নিজ মুখে স্বীকার করেছেন মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা হুমকি দিতেন বাড়াবাড়ি করলে শাপলা চত্বরের অবস্থা হবে। তারা সেদিন কী করেছিলেন যা দিয়ে হুমকি দিতো! এটিও আরেকটি গণহত্যা ছিল। এই সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে আমাদের রাস্তায় নামতে দেওয়া হয়নি। আমরা তবুও তাদের সেই কথা অমান্য করে রাজপথে নেমেছি।’

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘তবে তারা নানাভাবে ছলে বলে কৌশলে তিনটা নির্বাচন করে নিয়েছিল। যেখানে জনগণ ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ পায়নি। আর এক নির্বাচন তো দিন শুরুর আগে রাতের বেলাই শেষ করে দিয়েছিল।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারী ঢাবির ছাত্রলীগ নেতা ইমনকে গ্রেফতার

» গুলিভর্তি ম্যাগাজিন চুরি: ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

» একদিনের ব্যবধানে কমল স্বর্ণের দাম

» নাগরিক কমিটিতে যুক্ত হলেন সারজিসসহ আরও ৪৫ জন

» সকল ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা

» অহিংস গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক মাহবুবুল আলম গ্রেপ্তার

» চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তার: প্রতিবাদে ডিবির সামনে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ

» ডিবি হেফাজতে সনাতন জাগরণ মঞ্চের চিন্ময় কৃষ্ণ

» অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদশের আহ্বায়ক আ ব ম মোস্তফা আমীন আটক

» ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ৮ দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

গণহত্যাকারীদের সঙ্গে জড়িতদের ক্ষমা করার অধিকার কারও নেই: ডা. শফিকুর রহমান

ছবি সংগৃহীত

 

কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন পর্যন্ত তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সুস্পষ্ট গণহত্যা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

 

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘এই গণহত্যাকারীদের সঙ্গে জড়িতদের ক্ষমা করার অধিকার কারও নেই। এছাড়াও প্রতিশোধ নেবো না বলতে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া হবে না এমনটাই বোঝানো হয়েছিল।

আজ  মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রসমাজ এই আন্দোলন শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছিল। কোলের দেড় মাসের শিশু থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বৃদ্ধাও এই আন্দোলনে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। মা তার দেড় মাসের বাচ্চাকে নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন হাজারো মায়ের শিশু যেখানে অধিকার আদায়ে রাস্তায় নেমে এসেছে, আমার আর বড় শিশু নেই থাকলে পাঠিয়ে দিতাম। আমারতো আর বড় সন্তান নেই। তাই কোলের শিশুকে নিয়ে এসেছি।

 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাদের পরিকল্পনা ছিল সরকার টিকিয়ে রাখতে হবে। মানুষ যা মারা যাবে কোনো অসুবিধা নেই। এজন্য শুধু স্থলভাগেই গুলি ছোড়েনি, আকাশ থেকেও গুলি ছুড়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এমন কিছু এদেশের মানুষকে দেখতে হবে তার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। এসময় ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের মরদেহ গুম করা হয়েছে। আশুলিয়ার ঘটনা দেখেছেন, সেখানে ভ্যানের ওপর মরদেহের স্তূপ, সেখানে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে আগুন। আমরা কোন সভ্যতায় বসবাস করছি! এসব ঘটনা যারা ঘটিয়েছে আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাবো তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতেই হবে। এই গণহত্যা ক্ষমা করার অধিকার কারও নেই।

 

বিগত সাড়ে ১৫ বছরের কষ্টের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দল হিসেবে আমাদের সঙ্গে যে বৈরী আচরণ করা হয়েছে, আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে, আমাদের অফিস কেড়ে নেওয়া হয়েছে, স্বস্তির সঙ্গে আমাদের চলতে দেওয়া হয়নি, দফায় দফায় নির্যাতন করা হয়েছে বিভিন্নভাবে, শেষ পর্যন্ত দিশেহারা সরকার আমাদের নিষিদ্ধ করে তাদের কলিজা ঠান্ডা করেছে। আমরা বলেছি যে আমরা প্রতিশোধ নেবো না। এর মানে হচ্ছে আমরা আইন হাতে তুলে নেবো না। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অপরাধ যিনি করেছেন তার বিরুদ্ধে মামলাও হবে। তাকে শাস্তি পেতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে, আবার সাড়ে ১৫ বছর ধরে যেসব অপরাধ করা হয়েছে তারও বিচার করতে হবে।

 

শাপলা চত্বরে যা হয়েছে তা আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা নিজ মুখে স্বীকার করেছেন মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা হুমকি দিতেন বাড়াবাড়ি করলে শাপলা চত্বরের অবস্থা হবে। তারা সেদিন কী করেছিলেন যা দিয়ে হুমকি দিতো! এটিও আরেকটি গণহত্যা ছিল। এই সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে আমাদের রাস্তায় নামতে দেওয়া হয়নি। আমরা তবুও তাদের সেই কথা অমান্য করে রাজপথে নেমেছি।’

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘তবে তারা নানাভাবে ছলে বলে কৌশলে তিনটা নির্বাচন করে নিয়েছিল। যেখানে জনগণ ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ পায়নি। আর এক নির্বাচন তো দিন শুরুর আগে রাতের বেলাই শেষ করে দিয়েছিল।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com