সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক :গণমাধ্যমকর্মীদের স্বার্থে গণমাধ্যমে সপ্তাহে দুদিন ছুটি থাকা উচিত বলে মনে করেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ।
তিনি বলেন, নতুন কোনো গণমাধ্যম আসার পর তাদের কর্মীদের জেন্ডার বিষয়ক অঙ্গীকার সনদ ও জেন্ডার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত পিআইবি। গণমাধ্যমে কাউকে একক ক্ষমতাবান করা উচিত নয়। গণমাধ্যমে কর্মীদের স্বার্থে একদিন নয় দুদিন ছুটি চালু করা উচিত।
রোববার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার ভবনে এমআরডিআই আয়োজিত ‘সংবাদ মাধ্যমের জন্য জেন্ডার বিষয়ক অঙ্গীকার সনদ প্রকাশ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, চাকরিতে অনিশ্চয়তা, সামাজিক বাধাসহ নানান কারণে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন দেশের নারীরা। গণমাধ্যমগুলো টিকে থাকতে হলে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যমে জেন্ডার সমতা, ন্যায্যতা, মর্যাদা ও সংবেদনশীলতা প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেন তারা।
এমআরডিআই নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস। তিনি সংবাদ মাধ্যমের জন্য জেন্ডার বিষয়ক অঙ্গীকার সনদ প্রকাশ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
জেন্ডার চার্টার্র ওয়ার্কিং গ্রুপ জানিয়েছে, মোট ২০টি গণমাধ্যম এই সংবাদ মাধ্যমের জন্য জেন্ডার বিষয়ক অঙ্গীকার সনদ সই করেছে। এছাড়া আরও দুটি টেলিভিশন চ্যানেলের এই অঙ্গীকার সনদে সই করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস বলেন, মিডিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হলো সমাজের বিভিন্ন দিক প্রতিফলিত করা। গণতন্ত্রের জন্য নারী ও পুরুষকে সমানভাবে চিত্রিত করা অত্যাবশ্যক।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রকে উৎসাহিত করতে এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমের নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যমে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সহনশীল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। গণমাধ্যমে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে হবে। মানসম্মত সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক এবং জেন্ডার চার্টার ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রধান গীতি আরা নাসরিন বলেন, বাংলাদেশের সংবাদকর্মীদের মধ্যে এবং পরিবেশিত সংবাদে নারী, পুরুষ ও অন্যান্য জেন্ডারের উপস্থিতির ক্ষেত্রে সমতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে সংবাদমাধ্যমের জন্য জেন্ডার সংবেদনশীলতা বিষয়ে একটি অঙ্গীকার সনদ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই সনদ সংবাদপ্রতিষ্ঠানে এবং তাদের পরিবেশিত সংবাদে সব জেন্ডারের উপস্থিতি, অংশগ্রহণ এবং সমতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে তাদের অঙ্গীকারবদ্ধ করবে।
তিনি বলেন, নারীদের সাংবাদিকতায় নেওয়া হয় না। এর কারণ হিসেবে বলা হয় সাংবাদিকতা ৯টা- ৫টার চাকরি নয়। কিন্তু ধাত্রীসেবা ও উন্নয়ন পেশায় নারীরা কাজ করছে। কর্মক্ষেত্রে সমতা নিশ্চিত করতে হবে। নারীর জন্য শোভন কর্মক্ষেত্র ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
গণমাধ্যম সংস্কার বিষয়ক কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ বলেন, গণমাধ্যম সংস্কারের জন্য আমি বলছি কম, শুনছি, পড়ছি, জানার চেষ্টা করছি বেশি। আর যাতে কোনো গণমাধ্যম অফিস পুড়িয়ে দেওয়া না হয়, সেজন্য কী করা যায় সেটা নিয়ে একটা নীতিগত অবস্থান তৈরি করতে হবে।