ছবি সংগৃহীত
ডেস্ক রিপোর্ট : আমরা যারা দিনের অনেকটা সময় বিভিন্ন কাজে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে থাকি, তখন আমাদেরকে প্রায়ই “আমি রোবট নাকি মানুষ?” অর্থাৎ ‘ক্যাপচা’ (বিশেষ ফন্টে লেখা শব্দ বা ছবির ধাঁধা) পূরণ করে এর প্রমাণ দিতে হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না, কী এই ক্যাপচা?
তথ্যপ্রযুক্তিতে ব্যবহৃত বিশেষ একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা হচ্ছে ক্যাপচা। এটির পূর্ণরূপ হলো-কমপ্লিটলি অটোমেটেড পাবলিক টার্নিং টেস্ট টু টেল কম্পিউটার এন্ড হিউম্যানস অ্যাপারট।
সাধারণভাবে বলতে গেলে, এটি এমন একটি পদ্ধতি যা মানুষ ও রোবটের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিতে সক্ষম হয়। অতএব কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোন স্কিনের সামনে যিনি এটি পরিচালনা করছেন তিনি আসলেই একজন মানুষ নাকি কোনো রোবট, এটি নির্ধারণ করাই এই ক্যাপচার মূল কাজ।
ওয়েবসাইটে থাকা ক্যাপচার তথ্য সঠিকভাবে লিখতে না পারলে সেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যায় না। কিন্তু এবার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বোকা বানাতে ভুয়া ক্যাপচার মাধ্যমে স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করছে একদল সাইবার অপরাধী।
সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ম্যালওয়্যারবাইটস জানিয়েছে, নতুন ধরনের এই সাইবার হামলার ক্ষেত্রে সাধারণত অনলাইনে সিনেমা, গান, ছবি বা সংবাদের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করা হয়। এরপর কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করে ক্যাপচা সমাধান করতে বলা হয়, যা আসলে একটি প্রতারণার ফাঁদ। যদি কেউ ক্যাপচায় নির্দেশিত ধাপ অনুসরণ করেন, তাহলে ওয়েবসাইটগুলো গোপনে উইন্ডোজ ক্লিপবোর্ডে একটি টেক্সট স্ট্রিং কপি করে। এরফলে ক্যাপচার ‘আই অ্যাম নট রোবট’ চেক বক্সে টিক দেওয়ার পরপরই ব্যবহারকারীদের অজান্তে তাঁদের যন্ত্রে এমএসএইচটিএডটএক্সই কমান্ড চালু হয়ে যায়, যা কাজে লাগিয়ে সাইবার অপরাধীরা দূর থেকে ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার ইনস্টল করে থাকে।
এ ধরনের প্রতারণা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বেশ কিছু সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে ম্যালওয়্যারবাইটস। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, যেকোনো ওয়েবসাইটের নির্দেশনা অনুসরণ করার আগে তা যাচাই করা উচিত। এ ছাড়া ক্ষতিকর ওয়েবসাইট ও স্ক্রিপ্ট ব্লক করার জন্য সব সময় জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা সফটওয়্যার ও ব্রাউজার এক্সটেনশন ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে অপরিচিত বা সন্দেহজনক ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় জাভাস্ক্রিপ্ট নিষ্ক্রিয় রাখতে হবে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, ক্যাপচার মাধ্যমে আগে লুমা স্টিলার নামের ম্যালওয়্যার ছড়ানো হলেও সম্প্রতি সেকটপআরএটি নামের আরও উন্নত ম্যালওয়্যার ছড়ানো হচ্ছে। ম্যালওয়্যারটি শুধু তথ্য চুরিই নয়, আক্রান্ত স্মার্টফোন বা কম্পিউটার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগও দিয়ে থাকে। আর তাই অনলাইনে বিভিন্ন সুবিধা পেতে তাড়াহুড়ো করলে বা অসাবধান থাকলে ব্যবহারকারীরা এ ধরনের প্রতারণার শিকার হতে পারেন। ক্যাপচার মাধ্যমে ম্যালওয়্যার প্রবেশ ঠেকাতে সন্দেহজনক ওয়েবসাইট দ্রুত বন্ধের পরামর্শও দিয়েছেন তারা।