ক্যানারি উপকূলে দুই বাংলাদেশিসহ নিখোঁজ ১৮

স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে বিভিন্ন উপকূল থেকে ৩০০ জনেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে করা উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় লানজারোট দ্বীপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে নিখোঁজ হয়েছেন ২ বাংলাদেশিসহ প্রায় ১৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী।

 

স্প্যানিশ উদ্ধারকর্মীরা চলতি বছরের শুরু থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে প্রতিদিনই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে।এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার ২৬ জানুয়ারি, স্পেনের জরুরি উদ্ধারবিষয়ক কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী নৌকায় ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন দ্বীপে পৌঁছাতে চেষ্টা করা ৩১৯ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২৩৬ জন পুরুষ, ৫৯ নারী এবং ২৪ জন শিশু।

উদ্ধার অভিবাসীরা ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন ডিঙ্গি নৌকায় করে যাত্রা করেন। এর মধ্যে একটি নৌকাতেই একসঙ্গে ছিলেন ১২০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী।

 

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জনায়, উদ্ধারের পর অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের লানজারোট এবং গ্র্যান্ড ক্যানারিয়া দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে একজন নারীসহ মোট দশজনকে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তবে তারা শংকামুক্ত।

 

অন্যদিকে স্প্যানিশ এনজিও ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস স্পেনের জরুরি উদ্ধার বিষয়ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সমুদ্র বিপদে থাকা নৌকার সংকেতে সাড়া না দেওয়ার অভিযোগ করেছে।

 

এনজিওটি জানায়, মঙ্গলবার ২৫ জানুয়ারি ল্যানজারোট থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে একটি নৌকা সাগরে দুর্ঘটনায় পড়েছিল। বারবার সংকেত দেওয়ার পরেও তাদেরকে উদ্ধার করা হয়নি বলে অভিযোগ এনজিওর।

স্প্যানিশ রেডিও এসইআর-এর মতে, সাগরে বিপদেপড়া নৌকা থেকে ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস একটি কল পেয়েছিল। নৌকাটি মরক্কো আখফেনির উপকূল থেকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দিকে যাওয়ার পথে সাগরে প্রতিকূল আবহাওয়ায় পড়ে যায়।

 

রেডিওটি আরও জানায়, ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে ২৭ জন অভিবাসী ছিল। যাদের মধ্যে ২৫ জন সাব-সাহারা আফ্রিকার দেশের নাগরিক এবং ২ জন বাংলাদেশি। সাব সাহারা আফ্রিকার নাগরিকদের মধ্যে সাতজন নারী ও একজন শিশুও ছিলেন।

 

ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস দাবি, বিকেল ৫টার দিকে নৌকাটি থেকে প্রথম বিপদ সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের জরুরি উদ্ধার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছিল। কিন্তু তারা আমাদের আবেদনে সাড়া দিতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় নেয়। উদ্ধারকর্মীরা আনুমানিক রাত ১১টায় নৌকাটির কাছে পৌঁছায়। তখন তারা নয়জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও বাকি ১৮ জন যাত্রী এখনও নিখোঁজ।

 

রেডিও এসইআর-এর জানিয়েছে, ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস এই দুর্ঘটনা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত শুরু করার অনুরোধ জানিয়েছে। সংস্থাটির সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে উঠা বিভিন্ন প্রশ্ন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার অফ রাইটসের কাছে পাঠিয়েছে। এছাড়া সংস্থাটি এই ঘটনায় সামুদ্রের দুর্ঘটনাগুলোর তদন্তের দায়িত্বে স্থায়ী কমিশনকেও অবহিত করেছে।

 

ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের রুটটি ২০০০ সালের দিকে একটা সময় খুব ব্যস্ত অভিবাসন রুট ছিল। পরবর্তীতে ভূমধ্যসাগর ব্যবহার করে অভিবাসী আগমন বেড়ে গেলে এই রুটটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। কিন্তু সস্প্রতি উত্তর আফ্রিকার সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা হলে ২০২০ সাল থেকে পুনরায় অভিবাসীরা এই রুটে সক্রিয় হয়েছে।  সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ওয়ানশুটার গান ও দেশীয় অস্ত্রসহ তিনজন আটক

» রাজনৈতিক দলের বিচারে ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ

» নিজের আকিকা করা যাবে?

» যুবককে কুপিয়ে হত্যা

» হাতিয়ায় ইলিশসহ দুই ট্রলারের ৩০ জেলেকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড

» সুস্থ খালেদা জিয়াকে কাছে পেয়ে উৎফুল্ল স্বজনরা

» প্রেম বিয়ে সংসার নিয়ে মুখ খুললেন জয়া আহসান!

» অনলাইনেও নিষিদ্ধ হচ্ছে আওয়ামী লীগ, বন্ধ হবে সব পেজ

» নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে অনেক সময় লাগবে : আইন উপদেষ্টা

» যারা মানুষ মা’রে, তাদের অনলাইনেও থাকার অধিকার নেই: রাফি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ক্যানারি উপকূলে দুই বাংলাদেশিসহ নিখোঁজ ১৮

স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে বিভিন্ন উপকূল থেকে ৩০০ জনেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে করা উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় লানজারোট দ্বীপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে নিখোঁজ হয়েছেন ২ বাংলাদেশিসহ প্রায় ১৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী।

 

স্প্যানিশ উদ্ধারকর্মীরা চলতি বছরের শুরু থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে প্রতিদিনই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে।এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার ২৬ জানুয়ারি, স্পেনের জরুরি উদ্ধারবিষয়ক কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী নৌকায় ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন দ্বীপে পৌঁছাতে চেষ্টা করা ৩১৯ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২৩৬ জন পুরুষ, ৫৯ নারী এবং ২৪ জন শিশু।

উদ্ধার অভিবাসীরা ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন ডিঙ্গি নৌকায় করে যাত্রা করেন। এর মধ্যে একটি নৌকাতেই একসঙ্গে ছিলেন ১২০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী।

 

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জনায়, উদ্ধারের পর অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের লানজারোট এবং গ্র্যান্ড ক্যানারিয়া দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে একজন নারীসহ মোট দশজনকে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তবে তারা শংকামুক্ত।

 

অন্যদিকে স্প্যানিশ এনজিও ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস স্পেনের জরুরি উদ্ধার বিষয়ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সমুদ্র বিপদে থাকা নৌকার সংকেতে সাড়া না দেওয়ার অভিযোগ করেছে।

 

এনজিওটি জানায়, মঙ্গলবার ২৫ জানুয়ারি ল্যানজারোট থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে একটি নৌকা সাগরে দুর্ঘটনায় পড়েছিল। বারবার সংকেত দেওয়ার পরেও তাদেরকে উদ্ধার করা হয়নি বলে অভিযোগ এনজিওর।

স্প্যানিশ রেডিও এসইআর-এর মতে, সাগরে বিপদেপড়া নৌকা থেকে ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস একটি কল পেয়েছিল। নৌকাটি মরক্কো আখফেনির উপকূল থেকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দিকে যাওয়ার পথে সাগরে প্রতিকূল আবহাওয়ায় পড়ে যায়।

 

রেডিওটি আরও জানায়, ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে ২৭ জন অভিবাসী ছিল। যাদের মধ্যে ২৫ জন সাব-সাহারা আফ্রিকার দেশের নাগরিক এবং ২ জন বাংলাদেশি। সাব সাহারা আফ্রিকার নাগরিকদের মধ্যে সাতজন নারী ও একজন শিশুও ছিলেন।

 

ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস দাবি, বিকেল ৫টার দিকে নৌকাটি থেকে প্রথম বিপদ সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের জরুরি উদ্ধার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছিল। কিন্তু তারা আমাদের আবেদনে সাড়া দিতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় নেয়। উদ্ধারকর্মীরা আনুমানিক রাত ১১টায় নৌকাটির কাছে পৌঁছায়। তখন তারা নয়জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও বাকি ১৮ জন যাত্রী এখনও নিখোঁজ।

 

রেডিও এসইআর-এর জানিয়েছে, ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস এই দুর্ঘটনা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত শুরু করার অনুরোধ জানিয়েছে। সংস্থাটির সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে উঠা বিভিন্ন প্রশ্ন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার অফ রাইটসের কাছে পাঠিয়েছে। এছাড়া সংস্থাটি এই ঘটনায় সামুদ্রের দুর্ঘটনাগুলোর তদন্তের দায়িত্বে স্থায়ী কমিশনকেও অবহিত করেছে।

 

ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের রুটটি ২০০০ সালের দিকে একটা সময় খুব ব্যস্ত অভিবাসন রুট ছিল। পরবর্তীতে ভূমধ্যসাগর ব্যবহার করে অভিবাসী আগমন বেড়ে গেলে এই রুটটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। কিন্তু সস্প্রতি উত্তর আফ্রিকার সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা হলে ২০২০ সাল থেকে পুনরায় অভিবাসীরা এই রুটে সক্রিয় হয়েছে।  সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com