কী কারণে ঠোঁটে সমস্যা হয়?

সংগৃহীত ছবি
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল : মুখমণ্ডলের শ্রীবৃদ্ধিতে ঠোঁটের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। কবি-সাহিত্যিকদের রচিত অনেক কবিতা, সংলাপ, উক্তিতে ওষ্ঠ শব্দটি গুরুত্বসহকারে ব্যবহৃত হয়েছে। সেদিক থেকে সাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ উপাদান হলো এই ঠোঁট বা ওষ্ঠ। এর সৌন্দর্য ধরে না রাখলে সবকিছুই শ্রীহীন। তাই ঠোঁটের যত্ন নেওয়া অপরিহার্য—ঠোঁট ফাটা : 

ঠোঁটের ওপরের যে আবরণ তা কিন্তু বেশ পাতলা এবং সংবেদনশীল। তাই সহজেই আবহাওয়ার প্রভাব এতে ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা কমে গেলে (বা বাতাসের শুষ্কতা বেড়ে গেলে) যেমন শীতকালে ঠোঁটকে ভেজা রাখা পানি দ্রুত শুকিয়ে যায়। অত্যধিক শুষ্কতার জন্য ঠোঁট চটচট করে এবং ফেটে যায়। তখন খেতে গেলে ঝাল ধরে এবং কথা বলতে অসুবিধা হয়। অনেক সময় ফাটা স্থান দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে এবং প্রদাহের সৃষ্টি হয়। এতে ঠোঁটের শ্রী তো নষ্ট হয়ই, তাছাড়া মানসিক দিক থেকে এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকতে হয়।

 

এ সমস্যা প্রতিরোধে ভ্যাসলিন, গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ঠোঁটে লাগাতে হবে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর সময় এটা লাগাতে ভুল করবেন না। তবে অনেকের ঠোঁট বেশি শুষ্ক হয়, অনেকের হয় না। শীতকাল ছাড়াও পরিবেশ রুক্ষ পরিলক্ষিত হলেও সেগুলো লাগানো উচিত।

 

প্রসাধন ব্যবহারে অসতর্কতা : 

সাজতে মানা, তা কিন্তু নয়। তবে লিপস্টিক, লিপলাইনার ইত্যাদি ব্যবহারের ব্যাপারে গুণগত মান একটা চিন্তার বিষয় এবং এসব ব্যবহারে কোনো অ্যালার্জি দেখা গেলে তা অবশ্যই বাদ দিতে হবে। অনেক সময় উল্টাপাল্টা প্রসাধনী ব্যবহারে ঠোঁটে প্রদাহের সৃষ্টি হতে পারে। তাই প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে গুণগতমান সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং প্রসাধনী ব্যবহারে যদি অ্যালার্জি হয় তবে ব্যবহার বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

জীবাণুর আক্রমণ : 

হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস দ্বারা ঠোঁটে ঘা হতে পারে। যাকে বলা হয় জ্বরঠুঁটো। এটার আক্রমণে ঠোঁটে ব্যথা হয় সৌন্দর্য নষ্ট হয়। অনেক সময় ক্যানডিডা নামক ছত্রাকের আক্রমণে ঠোঁটে সমস্যা হয়। দুই ঠোঁটের কোণে অনেক সময় সাদা ঘা হয় যা ভিটামিন বি-২-এর অভাবে হয়। এক্ষেত্রে ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন শাক-সবজি, ফলমূল খেতে হবে।  তাছাড়া ইনফেকশন যাই হোক না কেন, ঠোঁটের বিভিন্ন অস্বাভাবিক পরিবর্তন যেমন— ফোলা, চুলকানো, জ্বালাপোড়া জাতীয় সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

মুদ্রা দোষের কারণ : 

অনেকে অভাস আছে দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ানোর বা জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট চোষা। প্রথমত এ দুটো ব্যাপার দৃষ্টিকটু তারপর এ দুটোর কারণে ঠোঁটের শ্রী নষ্ট হয়। অনেকে আছেন অতি উদ্বিগ্নতাকে হালকা করতে হাতের নখ দিয়ে ঠোঁটের পর্দা চিমটিয়ে চিমটিয়ে তোলেন। এগুলো পরিহার করা উচিত। তাই এসব ছোটখাটো বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। এসব থেকেই স্বাস্থের জটিলতা বাড়তে পারে।

লেখক : উপাধ্যক্ষ ও সহযোগী অধ্যাপক অর্থোপেডিক সার্জারি, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।   সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ভারতের মিডিয়া ‘সার্কাস’ দেখাচ্ছে- বললেন সোনাক্ষী

» দুঃখের সঙ্গে বলছি, বিনিয়োগ নিয়ে সার্কাস হচ্ছে : আমীর খসরু

» আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনরতদের শাহবাগে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে ছাত্রশিবির

» আ.লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার: তারেক রহমান

» দ্রুত সিদ্ধান্ত না আসলে সারা দেশ থেকে ঢাকা মার্চ : নাহিদ

» সরকার চাইলে ১৯ ধারায় আ. লীগ নিষিদ্ধ করতে পারে : অ্যাটর্নি জেনারেল

» আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন ছাত্র-জনতা

» বাগেরহাটে আধুনিক ‘পর্যটন মোটেল এ্যান্ড ইয়ুথ ইন উদ্বোধন   

» ইসলামপুরে ওরা ১১জন শহীদ স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

» ই-ক্যাব নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা করলো ‘টিম ইউনাইটেড’

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কী কারণে ঠোঁটে সমস্যা হয়?

সংগৃহীত ছবি
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল : মুখমণ্ডলের শ্রীবৃদ্ধিতে ঠোঁটের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। কবি-সাহিত্যিকদের রচিত অনেক কবিতা, সংলাপ, উক্তিতে ওষ্ঠ শব্দটি গুরুত্বসহকারে ব্যবহৃত হয়েছে। সেদিক থেকে সাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ উপাদান হলো এই ঠোঁট বা ওষ্ঠ। এর সৌন্দর্য ধরে না রাখলে সবকিছুই শ্রীহীন। তাই ঠোঁটের যত্ন নেওয়া অপরিহার্য—ঠোঁট ফাটা : 

ঠোঁটের ওপরের যে আবরণ তা কিন্তু বেশ পাতলা এবং সংবেদনশীল। তাই সহজেই আবহাওয়ার প্রভাব এতে ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা কমে গেলে (বা বাতাসের শুষ্কতা বেড়ে গেলে) যেমন শীতকালে ঠোঁটকে ভেজা রাখা পানি দ্রুত শুকিয়ে যায়। অত্যধিক শুষ্কতার জন্য ঠোঁট চটচট করে এবং ফেটে যায়। তখন খেতে গেলে ঝাল ধরে এবং কথা বলতে অসুবিধা হয়। অনেক সময় ফাটা স্থান দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে এবং প্রদাহের সৃষ্টি হয়। এতে ঠোঁটের শ্রী তো নষ্ট হয়ই, তাছাড়া মানসিক দিক থেকে এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকতে হয়।

 

এ সমস্যা প্রতিরোধে ভ্যাসলিন, গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ঠোঁটে লাগাতে হবে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর সময় এটা লাগাতে ভুল করবেন না। তবে অনেকের ঠোঁট বেশি শুষ্ক হয়, অনেকের হয় না। শীতকাল ছাড়াও পরিবেশ রুক্ষ পরিলক্ষিত হলেও সেগুলো লাগানো উচিত।

 

প্রসাধন ব্যবহারে অসতর্কতা : 

সাজতে মানা, তা কিন্তু নয়। তবে লিপস্টিক, লিপলাইনার ইত্যাদি ব্যবহারের ব্যাপারে গুণগত মান একটা চিন্তার বিষয় এবং এসব ব্যবহারে কোনো অ্যালার্জি দেখা গেলে তা অবশ্যই বাদ দিতে হবে। অনেক সময় উল্টাপাল্টা প্রসাধনী ব্যবহারে ঠোঁটে প্রদাহের সৃষ্টি হতে পারে। তাই প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে গুণগতমান সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং প্রসাধনী ব্যবহারে যদি অ্যালার্জি হয় তবে ব্যবহার বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

জীবাণুর আক্রমণ : 

হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস দ্বারা ঠোঁটে ঘা হতে পারে। যাকে বলা হয় জ্বরঠুঁটো। এটার আক্রমণে ঠোঁটে ব্যথা হয় সৌন্দর্য নষ্ট হয়। অনেক সময় ক্যানডিডা নামক ছত্রাকের আক্রমণে ঠোঁটে সমস্যা হয়। দুই ঠোঁটের কোণে অনেক সময় সাদা ঘা হয় যা ভিটামিন বি-২-এর অভাবে হয়। এক্ষেত্রে ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন শাক-সবজি, ফলমূল খেতে হবে।  তাছাড়া ইনফেকশন যাই হোক না কেন, ঠোঁটের বিভিন্ন অস্বাভাবিক পরিবর্তন যেমন— ফোলা, চুলকানো, জ্বালাপোড়া জাতীয় সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

মুদ্রা দোষের কারণ : 

অনেকে অভাস আছে দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ানোর বা জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট চোষা। প্রথমত এ দুটো ব্যাপার দৃষ্টিকটু তারপর এ দুটোর কারণে ঠোঁটের শ্রী নষ্ট হয়। অনেকে আছেন অতি উদ্বিগ্নতাকে হালকা করতে হাতের নখ দিয়ে ঠোঁটের পর্দা চিমটিয়ে চিমটিয়ে তোলেন। এগুলো পরিহার করা উচিত। তাই এসব ছোটখাটো বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। এসব থেকেই স্বাস্থের জটিলতা বাড়তে পারে।

লেখক : উপাধ্যক্ষ ও সহযোগী অধ্যাপক অর্থোপেডিক সার্জারি, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।   সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com