কারা প্রসবপরবর্তী বিষন্নতার ঝুঁকিতে থাকেন?

প্রসব পরবর্তী সময়কাল ৬ সপ্তাহ ধরা হয়। এই সময়ের মধ্যে অনেক মা বিষন্নতায় ভোগেন। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বয়স কম ও অল্প শিক্ষিত নারীদের প্রসবোত্তর বিষন্নতায় ভোগার সম্ভাবনা বেশি। বয়স, জাতি নির্বিশেষে যে-কোনো নতুন প্রসূতি মা প্রসবোত্তর বিষণ্ণতায় পড়তে পারে।

 

তবে যাদের ঝুঁকি বেশি হতে পারে:

 

পূর্ববর্তী বিষন্নতা বা অন্যান্য মানসিক ব্যাধির ইতিহাস

 

বিষন্নতার পারিবারিক ইতিহাস

 

গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা

 

সাম্প্রতিক মানসিক চাপ, যেমন বিবাহবিচ্ছেদ, মৃত্যু বা প্রিয়জনের গুরুতর অসুস্থতা

 

অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ

 

যমজ, ট্রিপলেট বা অন্যান্য জটিলতা

 

সময়ের আগে শিশুর জন্ম বা স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে জন্ম হওয়া

 

একাকিত্ববোধ বা মানসিক সহযোগিতার অভাব

 

ঘুমের সমস্যা এবং ক্লান্তি

প্রসবোত্তর বিষন্নতা প্রতিরোধ করার উপায়

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, যদি কারো মধ্যে লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে কাউন্সেলিং করতে হবে। সঙ্গে ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ গুরুতর পর্যায়ে গেলে মা তার নিজের সন্তানকে বোঝা মনে করেন, এমনকি তাকে মেরেও ফেলতে চান। প্রসব পরবর্তী বিষন্নতায় আক্রান্ত হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

 

বিশেষজ্ঞরা প্রসবোত্তর বিষণ্ণতাকে প্রতিরোধে নিচের এই চারটি উপায়ের কথা বলেন। সেক্ষেত্রে মাকে সচেতন হয়ে এই পদক্ষেপ গুলো নিতে হবে।

 

কথা বলুন :আপনি আপনার অনুভূতিগুলোকে নিজের মধ্যে না রেখে বিশ্বস্ত কারো সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। তখন মনে হবে অন্যরা আপনার বিষয়গুলো শুনতে ইচ্ছুক এবং আপনি একা নন।

 

একা না থাকার চেষ্টা করুন :একা না থেকে বরং পছন্দের মানুষগুলোর সাথে বেশি বেশি সময় কাটান। এটি আপনার একাকিত্ব দুর করে অন্যদের সংস্পর্শে যেতে সাহায্য করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের গ্রুপে যুক্ত হতে পারেন। একটি গ্রুপে থাকলে অন্যান্য বিষয়গুলোতে ফোকাস করতে হয় ফলে নিজের মানসিক চাপ এমনিতেই কিছুটা হালকা হয়ে যায়। নিজের বন্ধু- বান্ধবী কিংবা আত্মীয়স্বজনের সাথে বেশি সময় কাটান।

 

নিজেকে জোর করে কাজে অন্তর্ভুক্ত করবেন না  :আপনি যদি কাজ বা চাকরির জন্য প্রস্তুত না হন, তবে নিজের ওপর জোর করবেন না। মনে রাখবেন এই সময়টা আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রয়োজনে আরো কিছুদিনের জন্য কাজ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।

বিশ্রাম করুন এবং শান্ত থাকুন :মন ও শরীর উভয়কে ভালো রাখার জন্য রাতের ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার শিশু অনেকক্ষণ জেগে থাকে তাহলে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিন, যাতে আপনি পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারেন। আপনার শিশুর যত্নের জন্যই আপনার যথেষ্ট বিশ্রাম প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, শিশুর সঙ্গে মায়ের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। নরমাল ডেলিভারি হোক বা সি-সেকশন হোক না কেন, মায়ের যত্ন নিতে হবে। কারণ মনে রাখতে হবে মা কিন্তু একই সঙ্গে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছে। তাই তার (মায়ের) খাওয়া, ঘুম, বিশ্রামের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে তৈরি বস্ত্রের প্রসারে কাজ করতে হবে : রিজওয়ানা হাসান

» আ.লীগ ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে আবারও ফ্যাসিবাদ তৈরি করবে : এ্যানি

» ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে প্রস্তুত ‘আ-আম জনতা পার্টি’ : ফাতিমা তাসনিম

» পুরোনো শত্রু মিত্র হওয়ার অনেক উদাহরণ আছে : উপ-প্রেস সচিব

» আমি যাদের নিয়োগ দিয়েছি, তারা সবাই আল্লাহভীরু, ঘুষ নেয় না: ধর্ম উপদেষ্টা

» গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেস সচিব

» যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আসামি গ্রেফতার

» ভারতে মুসলিমদের ‘নিরাপত্তা’ নিশ্চিতে ঢাকার আহ্বানে যা বলল দিল্লি

» বিদেশে পাঠানো কর্মীদের ৮০ ভাগ সমস্যা দেশেই তৈরি হয় : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

» মাইক্রোবাস ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেল দুই জনের, আহত ৪

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কারা প্রসবপরবর্তী বিষন্নতার ঝুঁকিতে থাকেন?

প্রসব পরবর্তী সময়কাল ৬ সপ্তাহ ধরা হয়। এই সময়ের মধ্যে অনেক মা বিষন্নতায় ভোগেন। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বয়স কম ও অল্প শিক্ষিত নারীদের প্রসবোত্তর বিষন্নতায় ভোগার সম্ভাবনা বেশি। বয়স, জাতি নির্বিশেষে যে-কোনো নতুন প্রসূতি মা প্রসবোত্তর বিষণ্ণতায় পড়তে পারে।

 

তবে যাদের ঝুঁকি বেশি হতে পারে:

 

পূর্ববর্তী বিষন্নতা বা অন্যান্য মানসিক ব্যাধির ইতিহাস

 

বিষন্নতার পারিবারিক ইতিহাস

 

গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা

 

সাম্প্রতিক মানসিক চাপ, যেমন বিবাহবিচ্ছেদ, মৃত্যু বা প্রিয়জনের গুরুতর অসুস্থতা

 

অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ

 

যমজ, ট্রিপলেট বা অন্যান্য জটিলতা

 

সময়ের আগে শিশুর জন্ম বা স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে জন্ম হওয়া

 

একাকিত্ববোধ বা মানসিক সহযোগিতার অভাব

 

ঘুমের সমস্যা এবং ক্লান্তি

প্রসবোত্তর বিষন্নতা প্রতিরোধ করার উপায়

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, যদি কারো মধ্যে লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে কাউন্সেলিং করতে হবে। সঙ্গে ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ গুরুতর পর্যায়ে গেলে মা তার নিজের সন্তানকে বোঝা মনে করেন, এমনকি তাকে মেরেও ফেলতে চান। প্রসব পরবর্তী বিষন্নতায় আক্রান্ত হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

 

বিশেষজ্ঞরা প্রসবোত্তর বিষণ্ণতাকে প্রতিরোধে নিচের এই চারটি উপায়ের কথা বলেন। সেক্ষেত্রে মাকে সচেতন হয়ে এই পদক্ষেপ গুলো নিতে হবে।

 

কথা বলুন :আপনি আপনার অনুভূতিগুলোকে নিজের মধ্যে না রেখে বিশ্বস্ত কারো সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। তখন মনে হবে অন্যরা আপনার বিষয়গুলো শুনতে ইচ্ছুক এবং আপনি একা নন।

 

একা না থাকার চেষ্টা করুন :একা না থেকে বরং পছন্দের মানুষগুলোর সাথে বেশি বেশি সময় কাটান। এটি আপনার একাকিত্ব দুর করে অন্যদের সংস্পর্শে যেতে সাহায্য করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের গ্রুপে যুক্ত হতে পারেন। একটি গ্রুপে থাকলে অন্যান্য বিষয়গুলোতে ফোকাস করতে হয় ফলে নিজের মানসিক চাপ এমনিতেই কিছুটা হালকা হয়ে যায়। নিজের বন্ধু- বান্ধবী কিংবা আত্মীয়স্বজনের সাথে বেশি সময় কাটান।

 

নিজেকে জোর করে কাজে অন্তর্ভুক্ত করবেন না  :আপনি যদি কাজ বা চাকরির জন্য প্রস্তুত না হন, তবে নিজের ওপর জোর করবেন না। মনে রাখবেন এই সময়টা আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রয়োজনে আরো কিছুদিনের জন্য কাজ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।

বিশ্রাম করুন এবং শান্ত থাকুন :মন ও শরীর উভয়কে ভালো রাখার জন্য রাতের ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার শিশু অনেকক্ষণ জেগে থাকে তাহলে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিন, যাতে আপনি পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারেন। আপনার শিশুর যত্নের জন্যই আপনার যথেষ্ট বিশ্রাম প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, শিশুর সঙ্গে মায়ের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। নরমাল ডেলিভারি হোক বা সি-সেকশন হোক না কেন, মায়ের যত্ন নিতে হবে। কারণ মনে রাখতে হবে মা কিন্তু একই সঙ্গে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছে। তাই তার (মায়ের) খাওয়া, ঘুম, বিশ্রামের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com