কলকাতায় ওয়েব সিরিজের নামে চলছে নীল ছবির ব্যবসা

কলকাতায় নিদারুণ ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে পর্নো ছবির চক্র। ওয়েব সিরিজের শুটিং করার নামে চলছে নীল ছবির ব্যবসা। বেলঘরিয়া থেকে সম্প্রতি নীল ছবি তৈরির এক আড়কাঠিকে গ্রেপ্তারের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশ যৌথ তদন্ত শুরু করেছে পর্নো ছবির উৎস সন্ধানে। এই বিষয়ে নানা তথ্য তারা জানতে পেরেছে যা হিচকক এর ক্রাইম থ্রিলার এর থেকে কম রোমাঞ্চকর নয়। মূলত রাজারহাট নিউ টাউন এলাকার দুটি হোটেলে পর্নো ছবির শুটিং এর জন্য রুম ভাড়া দেয়া হয়।

রাজারহাট নিউ টাউন এর জনবিরলতা এবং নির্জনতা পছন্দ এই ছবির প্রযোজকদের। এদের মধ্যে আছেন উঠতি প্রোমোটার, ক্ষুদ্র শিল্পউদ্যোগী, কয়েকজন বিফল চিত্রনির্মাতা। ওয়েব সিরিজের ছদ্মবেশে পর্নো ছবির শুটিং হয়।

তবে, শতকরা চল্লিশ শতাংশ ক্ষেত্রে পর্নো ছবির কথা বলেই কলাকুশলীদের আনা হয়। বেলঘরিয়ার পর্নো ছবি কাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে এখনও ধরা সম্ভব না হলেও সাহায্যকারী যাদের ধরা হয়েচ্ছে তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা যায় টলিগুঞ্জ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এক্সট্রা সরবরাহকারীরা পর্নো ছবির ছেলে মেয়ে সাপ্লাই দেয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়।

স্বাস্থ্যবান ও স্বাস্থ্যবতী এক্সট্রাদের কাছে অফার পৌঁছে যায়। এক শিফটে কাজ করার জন্যে মেলে ২০ হাজার টাকা। নীল ছবির দুনিয়ায় শিফট কথাটা অবশ্য পরিচিত নয়, বলা হয় সেশন। ১০ ঘন্টায় একটি সেশনে কাজ করতে হয়। পারিশ্রমিক ছাড়াও খানাপিনা ফ্রি। আড়কাঠিরা জানিয়েছে, সিরিয়ালে কাজ করতে ইচ্ছুক, অভিনয়ে পারঙ্গম ছেলে মেয়েদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে তাদের ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের সুযোগের কথা বলে জাল ফেলা হয়। জালে মাছ উঠলে তাদের বলা হয় ওয়েব সিরিজ মানেই খোলামেলা দৃশ্য।

এই খোলামেলা দৃশ্য শেষপর্যন্ত পরিণত হয় যৌন দৃশ্যতে। অভিনয় করার পর বেশির ভাগ ছেলে মেয়েই লজ্জায় কাউকে এই কথা বলে না। তাছাড়া নগদ অর্থের হাতছানিও আছে। শোভাবাজারের যুবকটি যেমন পুলিশের কাছে নাসিম আখতার নামে আড়কাঠির কথা ফাঁস করেছিল, এমনটা বেশিরভাগই করে না। উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা মূলত নীল ছবির আর্টিস্ট হয়। তাদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে দিঘল চেহারা, গুরু নিতাম্বিনী, সুস্তনিরা অগ্রাধিকার পায়। এই পর্নো ছবিগুলি বানানো হয় বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মের জন্যে। এক্স, টু এক্স এবং থ্রি এক্স নামের তিনটি সিরিজ আছে।

কেবলমাত্র থ্রি এক্স সিরিজে সরাসরি যৌন মিলনের ছবি দেখানো হয়। অনলাইনে এক একটি সিরিজের দাম ওঠে আড়াই লক্ষ টাকা থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা। ক্যামেরাম্যান, আলোকশিল্পী এবং শব্দযন্ত্রী মাস মাইনেতে নিয়োগ করা। ধ্বনি সংগ্রহ করার জন্য ব্যবহার করা হয় বডি মাইক। কলকাতার পর্নো ছবির বাজারটি সুবিস্তৃত। চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সাম্যতা রাখতে পর্নো ছবির কারবার জমে উঠেছে। সূএ:মানবজমিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সুবিচার নিশ্চিত করে সরকার প্রমাণ করতে চায় শেখ হাসিনার চাইতে ভিন্ন: আইন উপদেষ্টা

» হাসিনা ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার: দুদু

» সংস্কার প্রতিবেদনের আলোকে গণঅভ্যুত্থানের চার্টার তৈরি হবে: ড. ইউনূস

» মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে জামায়াত আমিরের সৌজন্য সাক্ষাৎ

» শর্তহীন মার্জনা

» ভুলে শিশুর বাম চোখের বদলে ডান চোখে অপারেশনের অভিযোগ

» ন্যায়বিচার পেয়েছি, আমরা সন্তুষ্ট: আইনজীবী জয়নুল আবেদীন

» আবারও রিমান্ডে সালমান-পলক

» শীতে পরিযায়ী পাখিরা কীভাবে সহস্র মাইল পথ চিনে যায়-আসে?

» নারীকে গলা কেটে হত্যা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কলকাতায় ওয়েব সিরিজের নামে চলছে নীল ছবির ব্যবসা

কলকাতায় নিদারুণ ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে পর্নো ছবির চক্র। ওয়েব সিরিজের শুটিং করার নামে চলছে নীল ছবির ব্যবসা। বেলঘরিয়া থেকে সম্প্রতি নীল ছবি তৈরির এক আড়কাঠিকে গ্রেপ্তারের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশ যৌথ তদন্ত শুরু করেছে পর্নো ছবির উৎস সন্ধানে। এই বিষয়ে নানা তথ্য তারা জানতে পেরেছে যা হিচকক এর ক্রাইম থ্রিলার এর থেকে কম রোমাঞ্চকর নয়। মূলত রাজারহাট নিউ টাউন এলাকার দুটি হোটেলে পর্নো ছবির শুটিং এর জন্য রুম ভাড়া দেয়া হয়।

রাজারহাট নিউ টাউন এর জনবিরলতা এবং নির্জনতা পছন্দ এই ছবির প্রযোজকদের। এদের মধ্যে আছেন উঠতি প্রোমোটার, ক্ষুদ্র শিল্পউদ্যোগী, কয়েকজন বিফল চিত্রনির্মাতা। ওয়েব সিরিজের ছদ্মবেশে পর্নো ছবির শুটিং হয়।

তবে, শতকরা চল্লিশ শতাংশ ক্ষেত্রে পর্নো ছবির কথা বলেই কলাকুশলীদের আনা হয়। বেলঘরিয়ার পর্নো ছবি কাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে এখনও ধরা সম্ভব না হলেও সাহায্যকারী যাদের ধরা হয়েচ্ছে তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা যায় টলিগুঞ্জ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এক্সট্রা সরবরাহকারীরা পর্নো ছবির ছেলে মেয়ে সাপ্লাই দেয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়।

স্বাস্থ্যবান ও স্বাস্থ্যবতী এক্সট্রাদের কাছে অফার পৌঁছে যায়। এক শিফটে কাজ করার জন্যে মেলে ২০ হাজার টাকা। নীল ছবির দুনিয়ায় শিফট কথাটা অবশ্য পরিচিত নয়, বলা হয় সেশন। ১০ ঘন্টায় একটি সেশনে কাজ করতে হয়। পারিশ্রমিক ছাড়াও খানাপিনা ফ্রি। আড়কাঠিরা জানিয়েছে, সিরিয়ালে কাজ করতে ইচ্ছুক, অভিনয়ে পারঙ্গম ছেলে মেয়েদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে তাদের ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের সুযোগের কথা বলে জাল ফেলা হয়। জালে মাছ উঠলে তাদের বলা হয় ওয়েব সিরিজ মানেই খোলামেলা দৃশ্য।

এই খোলামেলা দৃশ্য শেষপর্যন্ত পরিণত হয় যৌন দৃশ্যতে। অভিনয় করার পর বেশির ভাগ ছেলে মেয়েই লজ্জায় কাউকে এই কথা বলে না। তাছাড়া নগদ অর্থের হাতছানিও আছে। শোভাবাজারের যুবকটি যেমন পুলিশের কাছে নাসিম আখতার নামে আড়কাঠির কথা ফাঁস করেছিল, এমনটা বেশিরভাগই করে না। উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা মূলত নীল ছবির আর্টিস্ট হয়। তাদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে দিঘল চেহারা, গুরু নিতাম্বিনী, সুস্তনিরা অগ্রাধিকার পায়। এই পর্নো ছবিগুলি বানানো হয় বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মের জন্যে। এক্স, টু এক্স এবং থ্রি এক্স নামের তিনটি সিরিজ আছে।

কেবলমাত্র থ্রি এক্স সিরিজে সরাসরি যৌন মিলনের ছবি দেখানো হয়। অনলাইনে এক একটি সিরিজের দাম ওঠে আড়াই লক্ষ টাকা থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা। ক্যামেরাম্যান, আলোকশিল্পী এবং শব্দযন্ত্রী মাস মাইনেতে নিয়োগ করা। ধ্বনি সংগ্রহ করার জন্য ব্যবহার করা হয় বডি মাইক। কলকাতার পর্নো ছবির বাজারটি সুবিস্তৃত। চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সাম্যতা রাখতে পর্নো ছবির কারবার জমে উঠেছে। সূএ:মানবজমিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com