কবে ফিরবে সড়কে শৃঙ্খলা?

তপন কুমার ঘোষ:১০ দিন আগে মারা যাওয়া বাবার শ্রাদ্ধের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভোরে বাড়ি ফেরার পথে দ্রুতগামী পিকআপ ভ্যানের চাপায় প্রাণ হারিয়েছেন সহোদর পাঁচ ভাই। অপর এক ভাই ও বোন গুরুতর আহত হয়ে এখন হাসপাতালে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করতে ভাইবোনরা যার যার কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। একসঙ্গে পাঁচ ছেলে হারানোর শোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন মা মানু রানী (৬৫)। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একসঙ্গে মুছে গেছে একই পরিবারের পাঁচ পুত্রবধূর সিঁথির সিঁদুর। একে একে ভেঙে ফেলা হয়েছে তাঁদের হাতে পরা শাখা। শ্মশানে দাউ দাউ করে জ্বলছে আপন পাঁচ ভাইয়ের সারিবদ্ধ চিতা। এসব দৃশ্য কল্পনা করতেও গায়ে কাঁটা দেয়! এর এক দিন পরের ঘটনা। চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ট্রাফিক পুলিশের সংকেত না মেনে পালানোর সময় ‘চাঁদের গাড়ি’ নামে স্থানীয়ভাবে পরিচিত একটি জিপ দুই স্কুলছাত্রীকে চাপা দিয়ে হত্যা করেছে। মহাসড়কের বাঁকে বাঁকে মৃত্যু যেন ওতপেতে আছে। সড়কে-মহাসড়কে সর্বত্র বিশৃঙ্খলা। কেউ নিয়ম-কানুন মানতে চান না। বলতে গেলে, প্রায় সবার মধ্যেই ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা। কেউ কাউকে এক চুল জায়গা ছেড়ে দিতে নারাজ। একে অন্যকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে চান। ফলশ্রুতিতে, এক সময় সবাই যানজটে আটকা পড়েন। তখন শুরু হয় একে অন্যকে দোষারোপের পালা। নিজের দোষ কেউ স্বীকার করতে চান না। সড়ক দখল করে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়েছে। পথচারী পারাপারে জেব্রাক্রসিং কেউ মানছেন না। ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহারে আমাদের অনাগ্রহ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত গাড়ির সামনে হাত উঁচিয়ে দৌড়ে সড়ক পার হচ্ছেন পথচারীরা-এটি অতি পরিচিত দৃশ্য। রাস্তা পারাপারের সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা বা হেডফোনে গান শোনাও স্বাভাবিক ঘটনা। অকারণে গাড়ির হর্ন বাজানো হয়। ঘন ঘন লেন পরিবর্তন করা ড্রাইভারদের কাছে যেন ‘ডাল-ভাত’। মহাসড়কে তিন চাকার বাহন ‘ইজিবাইক’-এর রাজত্ব। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মহাসড়কে দিব্যি চলছে ব্যাটারিচালিত ধীরগতির এ হালকা যান। সব মিলিয়ে সড়কে-মহাসড়কে একটা হযবরল অবস্থা।

 

রাজধানীর ফুটপাথগুলো পথচারীবান্ধব নয়। ফুটপাথ হকারদের দখলে। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরে একই অবস্থা। পণ্যসামগ্রী সাজিয়ে রাখা হয়েছে ফুটপাথে। কোথাও আবার নির্মাণসামগ্রী বা আবর্জনার স্তূপ। ফুটপাথে মোটরসাইকেল। মূল সড়কে যানজট লাগলে মোটরসাইকেল ফুটপাথে উঠে পড়ে। এমনিতেই যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। তার ওপর ফুটপাথ ধরে হাঁটাচলার সুযোগটুকুও সীমিত হয়ে পড়েছে। মাঝে-মধ্যে ফুটপাথ থেকে দখলদার উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু আবার তা দখল হয়ে যায়। এ নিয়ে চলে চোর-পুলিশ খেলা। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। শব্দ আর বায়ুদূষণ নিয়ে স্বস্তিতে নেই ঢাকাবাসী। রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জে সর্বত্র জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দুই চাকার বাহন মোটরসাইকেল। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। এমন একটা দিন পার হচ্ছে না যেদিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় হতাহতের খবর প্রচার হচ্ছে না। মোটরসাইকেলচালকদের বেশির ভাগই তরুণ ও যুবক। অভিযোগ আছে, অনেকের লাইসেন্স নেই। অনভিজ্ঞ। মুহূর্তেই গতি ওঠা মোটরসাইকেল নিয়ে বিপজ্জনক প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন কমবয়সী চালকরা। সর্পিল (সাপের গতির মতো আঁকাবাঁকা) ভঙ্গিতে ছুটতে গিয়ে অযথা বিপদ ডেকে আনছেন। গতির আনন্দে দিশাহারা হয়ে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছেন কেউ কেউ। সমীক্ষা বলছে, গত তিন বছরে দেশে মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩১ শতাংশই ঘটেছে মোটরসাইকেলে। আর দুর্ঘটনায় নিহতের ২৭ শতাংশই মারা গেছেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গত তিন বছরে রাজপথে ঝরে পড়েছে অন্তত সাড়ে ৪ হাজার প্রাণ। গুরুতর আহত হয়ে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে পড়েছেন অনেকে। সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো আমরা সবাই জানি। ট্রাফিক আইন না মানা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনকভাবে ওভারটেকিং, ঘন ঘন লেন পরিবর্তন, গাড়ি চালানোর সময় মুঠোফোনে কথা বলা-এসব কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। এ ছাড়া আছে চালকের অদক্ষতা, অনভিজ্ঞতা, মাদকাসক্তি, অবসাদগ্রস্ততা ইত্যাদি। সড়কের ডিজাইন পরিকল্পনাতেও গলদ আছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের সাফ কথা, ‘দেশে পথচারীদের কথা চিন্তা করে সড়ক ডিজাইন করা হয় না।’ সড়কে বিশৃঙ্খলার জন্য এককভাবে কাউকে দায়ী করা যায় না। আমরা সবাই দায়ী। ব্যতিক্রম তো আছেই। সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে করণীয় বিষয়ে সভা, সেমিনার, টকশো, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয় এবং প্রতিবেদনে অনেক মতামত ও সুপারিশ উঠে এসেছে। কিন্তু এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে আন্তরিকতার অভাব লক্ষ্য করা যায়। কেন এই গড়িমসি, তা বোঝা দায়। কোথায় যেন গোল বেঁধেছে!

 

সড়কে-মহাসড়কে এই বিশৃঙ্খলার অবসান হওয়া দরকার। এ অবস্থা চলতে পারে না। চলতে দেওয়া যায় না। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি এক মতবিনিময় সভায় বলেছেন, ‘যে কোনো মূল্যে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা না এলে যতই উন্নয়ন হোক তাতে কোনো লাভ হবে না।’ এই বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে, সবার মাঝে।

 

লেখক : পরিচালক, পরিচালনা পর্ষদ, বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম করলে কঠোর ব্যবস্থা: পরিবেশ উপদেষ্টা

» চিন্ময় দাসকে গ্রেফতারের বিষয়ে যা জানালেন উপদেষ্টা আসিফ

» ‘শ্রম অধিকার চর্চার দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করা জরুরি’

» জুলাই বিপ্লব ইতিহাসের ইতিবাচক পরিবর্তন : শফিকুর রহমান

» মিরপুর থানার ৩ নং বিট পুলিশ নিয়ে আলোচনা সভা

» রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম

» শালিস করা নিয়ে ইউপি সদস্যেল ওপর হামলার চেষ্টার অভিযোগ অস্ত্র সহ তিনজন আটক

» শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কঠোর হতে চায় না সরকার: উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম

» চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর

» জনগণ প্রত্যাশা মতো গণমাধ্যমের সহায়তা পাচ্ছি না: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কবে ফিরবে সড়কে শৃঙ্খলা?

তপন কুমার ঘোষ:১০ দিন আগে মারা যাওয়া বাবার শ্রাদ্ধের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভোরে বাড়ি ফেরার পথে দ্রুতগামী পিকআপ ভ্যানের চাপায় প্রাণ হারিয়েছেন সহোদর পাঁচ ভাই। অপর এক ভাই ও বোন গুরুতর আহত হয়ে এখন হাসপাতালে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করতে ভাইবোনরা যার যার কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। একসঙ্গে পাঁচ ছেলে হারানোর শোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন মা মানু রানী (৬৫)। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একসঙ্গে মুছে গেছে একই পরিবারের পাঁচ পুত্রবধূর সিঁথির সিঁদুর। একে একে ভেঙে ফেলা হয়েছে তাঁদের হাতে পরা শাখা। শ্মশানে দাউ দাউ করে জ্বলছে আপন পাঁচ ভাইয়ের সারিবদ্ধ চিতা। এসব দৃশ্য কল্পনা করতেও গায়ে কাঁটা দেয়! এর এক দিন পরের ঘটনা। চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ট্রাফিক পুলিশের সংকেত না মেনে পালানোর সময় ‘চাঁদের গাড়ি’ নামে স্থানীয়ভাবে পরিচিত একটি জিপ দুই স্কুলছাত্রীকে চাপা দিয়ে হত্যা করেছে। মহাসড়কের বাঁকে বাঁকে মৃত্যু যেন ওতপেতে আছে। সড়কে-মহাসড়কে সর্বত্র বিশৃঙ্খলা। কেউ নিয়ম-কানুন মানতে চান না। বলতে গেলে, প্রায় সবার মধ্যেই ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা। কেউ কাউকে এক চুল জায়গা ছেড়ে দিতে নারাজ। একে অন্যকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে চান। ফলশ্রুতিতে, এক সময় সবাই যানজটে আটকা পড়েন। তখন শুরু হয় একে অন্যকে দোষারোপের পালা। নিজের দোষ কেউ স্বীকার করতে চান না। সড়ক দখল করে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়েছে। পথচারী পারাপারে জেব্রাক্রসিং কেউ মানছেন না। ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহারে আমাদের অনাগ্রহ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত গাড়ির সামনে হাত উঁচিয়ে দৌড়ে সড়ক পার হচ্ছেন পথচারীরা-এটি অতি পরিচিত দৃশ্য। রাস্তা পারাপারের সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা বা হেডফোনে গান শোনাও স্বাভাবিক ঘটনা। অকারণে গাড়ির হর্ন বাজানো হয়। ঘন ঘন লেন পরিবর্তন করা ড্রাইভারদের কাছে যেন ‘ডাল-ভাত’। মহাসড়কে তিন চাকার বাহন ‘ইজিবাইক’-এর রাজত্ব। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মহাসড়কে দিব্যি চলছে ব্যাটারিচালিত ধীরগতির এ হালকা যান। সব মিলিয়ে সড়কে-মহাসড়কে একটা হযবরল অবস্থা।

 

রাজধানীর ফুটপাথগুলো পথচারীবান্ধব নয়। ফুটপাথ হকারদের দখলে। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরে একই অবস্থা। পণ্যসামগ্রী সাজিয়ে রাখা হয়েছে ফুটপাথে। কোথাও আবার নির্মাণসামগ্রী বা আবর্জনার স্তূপ। ফুটপাথে মোটরসাইকেল। মূল সড়কে যানজট লাগলে মোটরসাইকেল ফুটপাথে উঠে পড়ে। এমনিতেই যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। তার ওপর ফুটপাথ ধরে হাঁটাচলার সুযোগটুকুও সীমিত হয়ে পড়েছে। মাঝে-মধ্যে ফুটপাথ থেকে দখলদার উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু আবার তা দখল হয়ে যায়। এ নিয়ে চলে চোর-পুলিশ খেলা। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। শব্দ আর বায়ুদূষণ নিয়ে স্বস্তিতে নেই ঢাকাবাসী। রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জে সর্বত্র জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দুই চাকার বাহন মোটরসাইকেল। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। এমন একটা দিন পার হচ্ছে না যেদিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় হতাহতের খবর প্রচার হচ্ছে না। মোটরসাইকেলচালকদের বেশির ভাগই তরুণ ও যুবক। অভিযোগ আছে, অনেকের লাইসেন্স নেই। অনভিজ্ঞ। মুহূর্তেই গতি ওঠা মোটরসাইকেল নিয়ে বিপজ্জনক প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন কমবয়সী চালকরা। সর্পিল (সাপের গতির মতো আঁকাবাঁকা) ভঙ্গিতে ছুটতে গিয়ে অযথা বিপদ ডেকে আনছেন। গতির আনন্দে দিশাহারা হয়ে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছেন কেউ কেউ। সমীক্ষা বলছে, গত তিন বছরে দেশে মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩১ শতাংশই ঘটেছে মোটরসাইকেলে। আর দুর্ঘটনায় নিহতের ২৭ শতাংশই মারা গেছেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গত তিন বছরে রাজপথে ঝরে পড়েছে অন্তত সাড়ে ৪ হাজার প্রাণ। গুরুতর আহত হয়ে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে পড়েছেন অনেকে। সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো আমরা সবাই জানি। ট্রাফিক আইন না মানা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনকভাবে ওভারটেকিং, ঘন ঘন লেন পরিবর্তন, গাড়ি চালানোর সময় মুঠোফোনে কথা বলা-এসব কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। এ ছাড়া আছে চালকের অদক্ষতা, অনভিজ্ঞতা, মাদকাসক্তি, অবসাদগ্রস্ততা ইত্যাদি। সড়কের ডিজাইন পরিকল্পনাতেও গলদ আছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের সাফ কথা, ‘দেশে পথচারীদের কথা চিন্তা করে সড়ক ডিজাইন করা হয় না।’ সড়কে বিশৃঙ্খলার জন্য এককভাবে কাউকে দায়ী করা যায় না। আমরা সবাই দায়ী। ব্যতিক্রম তো আছেই। সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে করণীয় বিষয়ে সভা, সেমিনার, টকশো, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয় এবং প্রতিবেদনে অনেক মতামত ও সুপারিশ উঠে এসেছে। কিন্তু এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে আন্তরিকতার অভাব লক্ষ্য করা যায়। কেন এই গড়িমসি, তা বোঝা দায়। কোথায় যেন গোল বেঁধেছে!

 

সড়কে-মহাসড়কে এই বিশৃঙ্খলার অবসান হওয়া দরকার। এ অবস্থা চলতে পারে না। চলতে দেওয়া যায় না। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি এক মতবিনিময় সভায় বলেছেন, ‘যে কোনো মূল্যে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা না এলে যতই উন্নয়ন হোক তাতে কোনো লাভ হবে না।’ এই বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে, সবার মাঝে।

 

লেখক : পরিচালক, পরিচালনা পর্ষদ, বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com