সুইডেনে চরম ডানপন্থী ও অভিবাসী বিরোধী গোষ্ঠী স্ট্রাম কুর্স-এর নেতা রাসমুস পালুদারার পবিত্র কোরআন শরীফ পোড়ানোর প্রতিবাদে সুইডেনের বেশ কয়েকটি শহরে চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, রোববার সুইডেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর নরকোপিং-এ পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে গুলি চালালে তিন জন আহত হন। খবর বিবিসির।
সুইডেনের বেশ কয়েকটি স্থানে গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এবং অন্তত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সুইডেনের মালমো শহরে গত শনিবার রাতে স্ট্রাম কুর্স নামের কট্টরপন্থী সংগঠনের বিরুদ্ধে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এ সংগঠনটি অভিবাসনবিরোধী এবং ইসলাম-বিদ্বেষী বলে পরিচিত। সংগঠনটির নেতৃত্ব দেন রাসমুস পালুডান নামের ড্যানিশ-সুইডিশ একজন উগ্রপন্থি। সুইডেনের কট্টর ডানপন্থি গোষ্ঠীটি গত বৃহস্পতিবার পবিত্র কোরআনের একটি কপি পোড়ায় এবং রাসমুস পালুডান সামনের দিনে আবারও একই কাজ করার কথা জানান। এর বিরুদ্ধে সুইডেনে তীব্র ধিক্কার উঠেছে এবং সুইডেনের বাইরেও এ ঘটনার প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।
সুইডেনে বিক্ষোভকারীরা গাড়িতে আগুন দেন এবং অনেকে পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ছোড়েন। সুইডেনের কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ-পাল্টা বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এতে অনেক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন এবং পুলিশের কিছু গাড়ির ক্ষতি করা হয়েছে। স্টকহোমের উপকণ্ঠে এবং লিনকোপিন ও নরকোপিন শহরে উগ্র ডানপন্থিদের মিছিলের পর গোলযোগ হয়েছে।
সুইডেনের পুলিশপ্রধান অ্যান্ডার্স থর্নবার্গ বলেন, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলতে পর্যন্ত পরোয়া করছেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও সহিংস দাঙ্গা দেখেছি, কিন্তু এটা মনে হচ্ছে একেবারেই ভিন্ন কিছু।’
এদিকে, ইরাকি পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বাগদাদে সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কোরআন অবমাননার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এ ঘটনায় সুইডেনের সঙ্গে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সম্পর্কের মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। ইরানও সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কঠোর ভাষায় এ ঘটনার নিন্দা করেছে।
সুইডেনে স্ট্রাম কুর্সের কোরআন পোড়ানোর বিরুদ্ধে এর আগেও সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে।
২০২০ সালে বিক্ষোভকারীরা একই ধরনের বিক্ষোভের সময় গাড়িতে আগুন দিয়েছিলেন এবং দোকানপাট ভাঙচুর করেছিলেন।