এবার আলুর দামে আগুন, কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা

ছবি: সংগৃহীত

 

মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় যুক্ত হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আলু। সরবরাহ কমের অজুহাতে দিনাজপুরের হিলিতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। এদিকে হঠাৎ করে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

 

আজ (৮ জুলাই) সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের প্রতিটি সবজির দোকানেই আলুর যথেস্ট সরবরাহ রয়েছে প্রতিটি দোকানেই বস্তা বস্তা আলু সাজিয়ে রাখা, এরপরও দাম উর্দ্ধমুখী। ঈদের আগে যে দেশিয় লোকাল আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল বর্তমানে তা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই জাতের হিমাগারে থাকা আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে যা ঈদের আগে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া কাটিনাল নামের বড় আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে যা ঈদের আগে ৩০ টাকা ছিল।

 

হিলি বাজারে আলু কিনতে আসা রুহুল আমিন বলেন, বাজারে যে হারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে তাতে করে আমাদের মত সাধারণ মানুষদের বেঁচে থাকা খুব কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে। তেল চাল ডাল থেকে শুরু করে এই সময়ে আদা, রসুন ও কাঁচামরিচের যে দাম তাতে করে আমাদের কোন হিসেব মিলছে না। এক হিসেব করে বাজার করতে টাকা নিয়ে আসছি কিন্তু বাজারে এসে পণ্যের দাম শুনে সব হিসেব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।

 

আর এক ক্রেতা শাকিল বলেন, সকালে আলু কিনতে এসে দেখি দাম বেড়ে গেছে। আমরা গরিব মানুষ কিভাবে কি করবো যদি আলুর দামও বেড়ে যায় এভাবে।

 

হিলি বাজারের আলু বিক্রেতা আবু সালেহ বলেন, এবারে অনেক কৃষক আলু না আবাদ করে সরিষার প্রতি ঝুঁকেছিলেন যার কারণে এবারে অন্যান্য বছরের তুলনায় আলুর উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। এছাড়া আমাদের হিলিতে তেমন আলুর আবাদ হয় না। এসব আলু পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলার কালাই ও ক্ষেতলাল অঞ্চল থেকে কিনে এনে বিক্রয় করা হয়। বর্তমানে কৃষকের ঘরে তেমন কোন আলু নেই অল্প কিছু সংখ্যক রয়েছে যেটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন বাজারে যেসব আলু বিক্রি হচ্ছে বেশীরভাগই হিমাগারের আলু। হিমাগারেই আলুর দাম বাড়তি যার কারণে আমাদের বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে সেই হিসেব মোতাবেক বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

 

তিনি আরও বলেন, আমরা পাইকারদের নিকট থেকে যে দামে আলু কিনছি তার সঙ্গে ২ থেকে ৩ টাকা লাভ যোগ করে বিক্রি করি। বর্তমানে কৃষকের কাছে থাকা লোকাল দেশিয় আলু ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা কেজি দরে ক্রয় করে ৫০ টাকায় বিক্রি করছি। আর একই জাতের হিমাগারের আলু ৪২ থেকে ৪৩ টাকায় কিনে ৪৫ টাকায় বিক্রি করছি। এছাড়া কাটিনাল আলু ৩২ টাকায় কিনে ৩৫ টাকায় বিক্রি করছি। বাজারে নতুন আলু না উঠা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিনাজপুর এর সহকারি পরিচালক মমতাজ বেগম বলেন, অহেতুক কেউ যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় কোন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে সেজন্য আমরা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করছি। এসময় বিক্রেতাদের ক্রয় বিক্রয়ের ম্যামো দেখে দামের বিষয়টি যাচাই বাছাই করে দেখছি। তারা কি দামে কিনছে আর কি দামে বিক্রি করছে সেটি খতিয়ে দেখছি। এক্ষেত্রে যাদের গাফিলতি পরিলক্ষিত হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» প্রতীক তালিকায় থাকছে না শাপলা, ইসির নীতিগত সিদ্ধান্ত

» গুলি চালানোর নির্দেশের কল রেকর্ড বিবিসি উদ্ধার করেনি, এটা ট্রেলার মাত্র: তাজুল ইসলাম

» বিএসএফের গুলিতে নিহত ইব্রাহীমের বাড়িতে নাহিদ-সারজিস

» বিএসএফ খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে : এনসিপির আহ্বায়ক

» গণমাধ্যম সংস্কারের লক্ষ্যে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে : তথ্য উপদেষ্টা

» ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে অতীতের মতো রেজাল্ট দেয়া হবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা

» ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ ‍প্রধান উপদেষ্টার: প্রেস সচিব

» ইরানের হামলার ক্ষতি দেখে ইসরায়েলের চক্ষু চড়ক গাছ!

» বেলারুশকে ঢাকায় দূতাবাস খোলার অনুরোধ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

» ফরিদা পারভীনকে দেখতে হাসপাতালে মির্জা ফখরুল

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

এবার আলুর দামে আগুন, কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা

ছবি: সংগৃহীত

 

মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় যুক্ত হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আলু। সরবরাহ কমের অজুহাতে দিনাজপুরের হিলিতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। এদিকে হঠাৎ করে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

 

আজ (৮ জুলাই) সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের প্রতিটি সবজির দোকানেই আলুর যথেস্ট সরবরাহ রয়েছে প্রতিটি দোকানেই বস্তা বস্তা আলু সাজিয়ে রাখা, এরপরও দাম উর্দ্ধমুখী। ঈদের আগে যে দেশিয় লোকাল আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল বর্তমানে তা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই জাতের হিমাগারে থাকা আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে যা ঈদের আগে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া কাটিনাল নামের বড় আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে যা ঈদের আগে ৩০ টাকা ছিল।

 

হিলি বাজারে আলু কিনতে আসা রুহুল আমিন বলেন, বাজারে যে হারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে তাতে করে আমাদের মত সাধারণ মানুষদের বেঁচে থাকা খুব কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে। তেল চাল ডাল থেকে শুরু করে এই সময়ে আদা, রসুন ও কাঁচামরিচের যে দাম তাতে করে আমাদের কোন হিসেব মিলছে না। এক হিসেব করে বাজার করতে টাকা নিয়ে আসছি কিন্তু বাজারে এসে পণ্যের দাম শুনে সব হিসেব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।

 

আর এক ক্রেতা শাকিল বলেন, সকালে আলু কিনতে এসে দেখি দাম বেড়ে গেছে। আমরা গরিব মানুষ কিভাবে কি করবো যদি আলুর দামও বেড়ে যায় এভাবে।

 

হিলি বাজারের আলু বিক্রেতা আবু সালেহ বলেন, এবারে অনেক কৃষক আলু না আবাদ করে সরিষার প্রতি ঝুঁকেছিলেন যার কারণে এবারে অন্যান্য বছরের তুলনায় আলুর উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। এছাড়া আমাদের হিলিতে তেমন আলুর আবাদ হয় না। এসব আলু পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলার কালাই ও ক্ষেতলাল অঞ্চল থেকে কিনে এনে বিক্রয় করা হয়। বর্তমানে কৃষকের ঘরে তেমন কোন আলু নেই অল্প কিছু সংখ্যক রয়েছে যেটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন বাজারে যেসব আলু বিক্রি হচ্ছে বেশীরভাগই হিমাগারের আলু। হিমাগারেই আলুর দাম বাড়তি যার কারণে আমাদের বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে সেই হিসেব মোতাবেক বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

 

তিনি আরও বলেন, আমরা পাইকারদের নিকট থেকে যে দামে আলু কিনছি তার সঙ্গে ২ থেকে ৩ টাকা লাভ যোগ করে বিক্রি করি। বর্তমানে কৃষকের কাছে থাকা লোকাল দেশিয় আলু ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা কেজি দরে ক্রয় করে ৫০ টাকায় বিক্রি করছি। আর একই জাতের হিমাগারের আলু ৪২ থেকে ৪৩ টাকায় কিনে ৪৫ টাকায় বিক্রি করছি। এছাড়া কাটিনাল আলু ৩২ টাকায় কিনে ৩৫ টাকায় বিক্রি করছি। বাজারে নতুন আলু না উঠা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিনাজপুর এর সহকারি পরিচালক মমতাজ বেগম বলেন, অহেতুক কেউ যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় কোন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে সেজন্য আমরা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করছি। এসময় বিক্রেতাদের ক্রয় বিক্রয়ের ম্যামো দেখে দামের বিষয়টি যাচাই বাছাই করে দেখছি। তারা কি দামে কিনছে আর কি দামে বিক্রি করছে সেটি খতিয়ে দেখছি। এক্ষেত্রে যাদের গাফিলতি পরিলক্ষিত হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com