এবারের ঈদে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দূর্ভোগ: রিজভী

এবারের ঈদে দেশবাসীকে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

 

আজ রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

রিজভী বলেন, এবারের ঈদে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে দেশবাসীকে। সড়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মাঝে মধ্যে মিডিয়ার সামনে এসে বিএনপিকে নিয়ে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন। কিন্তু ঘরমুখো মানুষের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্নে করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। ঈদের প্রাক্কালে ১০০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা গুণতে হয়েছে জনগণকে। সড়কে দূর্ভোগের সীমা ছিলনা। ৫ ঘণ্টার পথ ৩০/৩২ ঘণ্টায়ও শেষ হয়নি। যাত্রীদেরকে দিনরাত কাটাতে হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে।

 

তিনি বলেন, মন্ত্রীরা বলেছেন মহাসড়কে কোন যানজট নেই। অথচ অনেক মানুষকে ঈদ করতে হয়েছে রাস্তাতেই, কেউ ঈদের দিন দুপুরে বাড়িতে পৌঁছাতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের মস্তিস্ক কোষ থেকে সত্য হারিয়ে গেছে। ঘরমুখো মানুষকে ভয়াবহ দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে আর ছিল সড়কে মৃত্যুর মিছিল। এর জন্য দায়ী আওয়ামী প্রশাসন ও সড়ক মন্ত্রী।

 

বিএনপির এই নেতা বলেন, শ্রীলঙ্কাতেও প্রথমে শুরু হয়েছিল বিদ্যুৎ সংকট, তারপর সেখানে কি ঘটেছে দেশবাসী তা জানেন। বাংলাদেশেও উন্নয়নের নামে হরিলুট করে দেশ থেকে লক্ষ-লক্ষ কোটি টাকা পাচার করে দেশকে ফোঁকলা করে দেয়া হয়েছে। নজিরবিহীনভাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে দিশেহারা মানুষ, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ানো হচ্ছে পাল্লা দিয়ে। বিদ্যুতের জন্য যে জ্বালানির প্রয়োজন সেটি একেবারে শূণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে। উৎপাদনের রাজনীতি না করে সরকার আমদানী মুখি হলে এই অবস্থাই হয়। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর গ্যাস উত্তোলন না করেও তারা আমদানীর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। এখন কয়লা, গ্যাসসহ জ্বালানী সংকটে দেশে বিদ্যুৎ সংকট ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

 

তিনি আরও বলেন, শ্রীলঙ্কায় একটি পরিবার ক্ষমতায় থেকে কিভাবে উন্নয়নের নামে দেশটিকে বিপজ্জনক খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছিল, এখন তাদেরকে প্রাসাদ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। বাংলাদেশেও বেশ কয়েকবছর ধরে কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতায় রয়েছে যা মূলত একটি পরিবারের আধিপত্যই প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ কোন অংশগ্রহণ করতে পারেনি। বাংলাদেশেও সবকিছু লুটপাট করে দেশের সব টাকা সুইচ ব্যাংকসহ বিভিন্ন বিদেশি ব্যাংকে পাচার করার পর সরকার প্রধান এখন জনগণকে সঞ্চয়ী হওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। এরা ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নিয়েও দেশবাসী শঙ্কিত। ভবিষ্যত নির্বাচনেও একতরফা নির্বাচন করবে সেজন্য তারা পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন চালাবে- তার আলামত ফুঁটে উঠছে। কিন্তু এবার তারা সফল হবে না।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আন্দোলন কারো জন্যই কল্যাণ বয়ে আনবে না : রিজভী

» হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেলেন নুরুল হক নুর

» দোহায় তৌহিদ হোসেন-ইসহাক দার বৈঠক

» বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত ঢাকা

» যমুনা অভিমুখে প্রাথমিক শিক্ষকরা, পুলিশের জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

» জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহযোগিতা করা হবে: আসিফ মাহমুদ

» নবীর আদর্শ মনে প্রাণে ধারণ করে জীবন গঠন হবে ….. জেলা প্রশাসক নরসিংদী 

» ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের উত্তরা ক্যাম্পাসে ইয়াং লার্নার ইংলিশ লার্নিং সেন্টার-এর নতুন শাখা চালু করল ব্রিটিশ কাউন্সিল

» ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’-এর অধীনে ব্র্যাক ব্যাংকের দেশব্যাপী আর্থিক সাক্ষরতা প্রোগ্রাম আয়োজন

» নওগাঁয় ডিবি পুলিশের অভিযানে মাদক কারবারি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ আটক ৩

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

এবারের ঈদে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দূর্ভোগ: রিজভী

এবারের ঈদে দেশবাসীকে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

 

আজ রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

রিজভী বলেন, এবারের ঈদে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে দেশবাসীকে। সড়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মাঝে মধ্যে মিডিয়ার সামনে এসে বিএনপিকে নিয়ে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন। কিন্তু ঘরমুখো মানুষের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্নে করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। ঈদের প্রাক্কালে ১০০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা গুণতে হয়েছে জনগণকে। সড়কে দূর্ভোগের সীমা ছিলনা। ৫ ঘণ্টার পথ ৩০/৩২ ঘণ্টায়ও শেষ হয়নি। যাত্রীদেরকে দিনরাত কাটাতে হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে।

 

তিনি বলেন, মন্ত্রীরা বলেছেন মহাসড়কে কোন যানজট নেই। অথচ অনেক মানুষকে ঈদ করতে হয়েছে রাস্তাতেই, কেউ ঈদের দিন দুপুরে বাড়িতে পৌঁছাতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের মস্তিস্ক কোষ থেকে সত্য হারিয়ে গেছে। ঘরমুখো মানুষকে ভয়াবহ দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে আর ছিল সড়কে মৃত্যুর মিছিল। এর জন্য দায়ী আওয়ামী প্রশাসন ও সড়ক মন্ত্রী।

 

বিএনপির এই নেতা বলেন, শ্রীলঙ্কাতেও প্রথমে শুরু হয়েছিল বিদ্যুৎ সংকট, তারপর সেখানে কি ঘটেছে দেশবাসী তা জানেন। বাংলাদেশেও উন্নয়নের নামে হরিলুট করে দেশ থেকে লক্ষ-লক্ষ কোটি টাকা পাচার করে দেশকে ফোঁকলা করে দেয়া হয়েছে। নজিরবিহীনভাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে দিশেহারা মানুষ, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ানো হচ্ছে পাল্লা দিয়ে। বিদ্যুতের জন্য যে জ্বালানির প্রয়োজন সেটি একেবারে শূণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে। উৎপাদনের রাজনীতি না করে সরকার আমদানী মুখি হলে এই অবস্থাই হয়। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর গ্যাস উত্তোলন না করেও তারা আমদানীর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। এখন কয়লা, গ্যাসসহ জ্বালানী সংকটে দেশে বিদ্যুৎ সংকট ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

 

তিনি আরও বলেন, শ্রীলঙ্কায় একটি পরিবার ক্ষমতায় থেকে কিভাবে উন্নয়নের নামে দেশটিকে বিপজ্জনক খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছিল, এখন তাদেরকে প্রাসাদ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। বাংলাদেশেও বেশ কয়েকবছর ধরে কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতায় রয়েছে যা মূলত একটি পরিবারের আধিপত্যই প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ কোন অংশগ্রহণ করতে পারেনি। বাংলাদেশেও সবকিছু লুটপাট করে দেশের সব টাকা সুইচ ব্যাংকসহ বিভিন্ন বিদেশি ব্যাংকে পাচার করার পর সরকার প্রধান এখন জনগণকে সঞ্চয়ী হওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। এরা ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নিয়েও দেশবাসী শঙ্কিত। ভবিষ্যত নির্বাচনেও একতরফা নির্বাচন করবে সেজন্য তারা পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন চালাবে- তার আলামত ফুঁটে উঠছে। কিন্তু এবার তারা সফল হবে না।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com