এস. এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে বাগেরহাট জেলায় কোরবানির পশুর কোনো সংকট নেই। বরং জেলার ৯টি উপজেলায় কোরবানির উপযোগী গবাদি পশু রয়েছে চাহিদার তুলনায় বেশি। জেলার প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য মতে, চাহিদা যেখানে ৮৪ হাজার ৮৯৭টি, সেখানে প্রস্তুত রয়েছে ৮৫ হাজার ৪৮টি পশু। ফলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলাতেও পশু সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের হিসাবে, মোট পশুর মধ্যে রয়েছে ৩১ হাজার ৩২টি গরু (ষাঁড় ২২,০৪৪টি, বলদ ২,৭৩১টি, গাভী ৬,২৫৭টি), ছাগল ৫১ হাজার ৬৬২টি, ভেড়া ২,০২০টি এবং অন্যান্য ১৬টি।
উপজেলা ভিত্তিক হিসাব অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি পশু রয়েছে রামপাল (১৩,৬৭৯টি) ও মোল্লাহাট (১৩,৩১৭টি) উপজেলায়। এছাড়া চিতলমারী (১১,৬২০), কচুয়া (১০,৪৭০), ফকিরহাট (৯,০২০), সদর (৭,৭৩৯), শরণখোলা (১২,০২১), মোরেলগঞ্জ (৫,৯৩৩) এবং মোংলায় (১,২৩৫টি) কোরবানির উপযোগী পশু রয়েছে।
বাগেরহাটে বর্তমানে ৭২১টি গবাদি পশুর খামার রয়েছে। ভারতীয় গরু প্রবেশ বন্ধে প্রশাসনের কঠোর তৎপরতায় খামারিরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এতে তারা ন্যায্যমূল্যে পশু বিক্রির আশা করছেন। এ বছর গো-খাদ্যের দামও কিছুটা সহনীয় থাকায় খামারিরা স্বস্তিতে রয়েছেন।
বাগেরহাট সদর উপজেলার দেপাড়া এলাকার শাবানা এগ্রোফার্মস লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাবানা রহমান মুন্নি জানান, এবার প্রশাসনের সক্রিয়তায় ভারতীয় গরু প্রবেশ রোধ হওয়ায় তারা লাভবান হবেন বলে আশা করছেন। তার খামারে বর্তমানে ৬টি মহিষ, ৮০টি ছাগল, ৪৫টি গাভী এবং ১৬টি দেশি ষাঁড় রয়েছে। তিনি এবার মূলত দেশি ষাঁড় ও ছাগল বিক্রি করবেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছায়েব আলী জানান, “চাহিদার চেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। ঈদের আগে ভারতীয় গরু অনুপ্রবেশ রোধে জেলা প্রশাসন, বিজিবি, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে।”
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার তৌহিদুল আরিফ বলেন, “কোরবানির পশুবাহী ট্রাক ও বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। চাঁদাবাজি বা হয়রানি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
এরইমধ্যে অনেক খামারি পশু বিক্রি শুরু করেছেন। শেষ সময়ে গৃহস্থ ও খামারিরা পশুর পরিচর্যা ও খাদ্য ব্যবস্থাপনায় মনোযোগী হয়েছেন। অনেক ক্রেতা খামার ঘুরে পশু দেখছেন, কেনাকাটাও শুরু হয়েছে। অনেকে আবার অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বেচাকেনায় যুক্ত হয়েছেন।
সার্বিকভাবে পশুর প্রাপ্যতা, মূল্য ও প্রশাসনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন খামারি ও ক্রেতারা।