ই-কমার্স ব্যবসায় মেয়ে, যে কারণে বিনিয়োগ করলেন না বিল গেটস

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :বিলিয়নিয়ার ও মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের মেয়ে ফোবি গেটস এবার উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। সাবেক রুমমেট সোফিয়া কিয়ানির সঙ্গে মিলে তিনি চালু করেছেন নতুন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) শপিং অ্যাপ ‘ফিয়া’।

 

এই অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন কেনাকাটার অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ, সাশ্রয়ী ও কার্যকর করে তোলার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তবে অ্যাপটি তৈরিতে সরাসরি কোনো আর্থিক সহায়তা দেননি বিল গেটস নিজে। নিউইয়র্ক টাইমস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি ভাবছিলাম, ও তো এখন এসে টাকা চাইবে!”

পরে জানান, ইচ্ছাকৃতভাবেই মেয়ের এই উদ্যোগে বিনিয়োগ থেকে বিরত থেকেছেন তিনি। গেটসের মতে, বিনিয়োগ করলে হয়তো ব্যবসার খুঁটিনাটি বিষয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করতেন, যা ফোবির জন্য চাপের হয়ে দাঁড়াতো।

 

তবে মেয়েকে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করতে ভোলেননি গেটস। তিনি দলে সঠিক মানুষ নিয়োগ ও ম্যানেজমেন্ট পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে স্বীকার করেন, “শপিং আমার বিষয় নয়, আমি এই অ্যাপের টার্গেট ব্যবহারকারী নই।”

 

ফোবির এই উদ্যোগও তার বাবার দীর্ঘদিনের এক নীতির প্রতিফলন। সন্তানদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি নিজের বিপুল সম্পদের মাত্র ১ শতাংশেরও কম ভাগ সন্তানদের দিয়েছেন, যদিও এই ১ শতাংশই মিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।

 

বর্তমানে ‘ফিয়া’ অ্যাপটি আইওএস ও গুগল ক্রোম এক্সটেনশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা যখন কোনো পণ্যের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন, তখন সেখানে ‘Should I buy this?’ নামে একটি বাটন দেখতে পাবেন। বাটনে ক্লিক করলে ফিয়া অ্যাপটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইন্টারনেট বিশ্লেষণ করে জানাবে সেই পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি, কম, না গড়ের মধ্যে পড়ছে।

 

উদাহরণ হিসেবে, পরীক্ষামূলকভাবে একটি লুই ভুইতোঁর ১,৯৫০ ডলারের ব্যাগের ওয়েবপেজে গেলে ফিয়া জানায়, ব্যাগটি “এই মূল্যের যোগ্য”। পাশাপাশি ফ্যাশনফাইল ও ইবের মতো সাইট থেকে পাওয়া কমদামি (যেমন ১,৪৫৩ ডলারে ব্যবহৃত) বিকল্পের লিংকও দেখায়।

 

এছাড়া ব্যবহারকারীদের ফিয়ার নিজস্ব ওয়েবসাইটে পাঠিয়ে দেয়, যেখানে একই ধরনের ব্যাগের তুলনামূলক তালিকা দেখা যায়।

 

ফিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, অ্যাপটি বাজারের বর্তমান ট্রেন্ড বিশ্লেষণ এবং ১.৫ কোটির বেশি পুরোনো পণ্যের ডেটাবেইসের সঙ্গে তুলনা করে ফলাফল প্রদর্শন করে। ডেটাবেইসটি দ্য রিয়েলরিয়েল, ভেস্টিয়্যার কালেকটিভ, থ্রেডআপ, স্টকএক্স, ইবে এবং পশমার্কের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম থেকে সংগৃহীত।

 

যদিও ক্যাপিটাল ওয়ান শপিং, রাকুটেন ও হানির মতো অ্যাপগুলো আগে থেকেই বাজারে রয়েছে, ফিয়া তাদের থেকে আলাদা হওয়ার চেষ্টা করছে ফ্যাশন-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিবেশবান্ধব থ্রিফটিং সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ধমক দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করতে চাইলে বিএনপি সহ্য করবে না : ফারুক

» পিআর ইস্যুতে যা বললেন মঈন খান

» ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

» আসিফের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» দেশের স্বার্থে বন্দর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

» বিশেষ অভিযানে মোট ১ হাজার ৩৫৩ জন গ্রেফতার

» হজ শেষে ফিরেছেন ৬০ হাজার ৫১৩ হাজি

» জামালপুরে নারী এগিয়ে চলা প্রকল্পের সভা অনুষ্ঠিত

» জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে  মোরেলগঞ্জে বিএনপির বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি

» ইসলামপুরে রহিম মেম্বার হত্যা সন্দেহে দুইজন আটক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ই-কমার্স ব্যবসায় মেয়ে, যে কারণে বিনিয়োগ করলেন না বিল গেটস

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :বিলিয়নিয়ার ও মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের মেয়ে ফোবি গেটস এবার উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। সাবেক রুমমেট সোফিয়া কিয়ানির সঙ্গে মিলে তিনি চালু করেছেন নতুন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) শপিং অ্যাপ ‘ফিয়া’।

 

এই অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন কেনাকাটার অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ, সাশ্রয়ী ও কার্যকর করে তোলার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তবে অ্যাপটি তৈরিতে সরাসরি কোনো আর্থিক সহায়তা দেননি বিল গেটস নিজে। নিউইয়র্ক টাইমস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি ভাবছিলাম, ও তো এখন এসে টাকা চাইবে!”

পরে জানান, ইচ্ছাকৃতভাবেই মেয়ের এই উদ্যোগে বিনিয়োগ থেকে বিরত থেকেছেন তিনি। গেটসের মতে, বিনিয়োগ করলে হয়তো ব্যবসার খুঁটিনাটি বিষয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করতেন, যা ফোবির জন্য চাপের হয়ে দাঁড়াতো।

 

তবে মেয়েকে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করতে ভোলেননি গেটস। তিনি দলে সঠিক মানুষ নিয়োগ ও ম্যানেজমেন্ট পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে স্বীকার করেন, “শপিং আমার বিষয় নয়, আমি এই অ্যাপের টার্গেট ব্যবহারকারী নই।”

 

ফোবির এই উদ্যোগও তার বাবার দীর্ঘদিনের এক নীতির প্রতিফলন। সন্তানদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি নিজের বিপুল সম্পদের মাত্র ১ শতাংশেরও কম ভাগ সন্তানদের দিয়েছেন, যদিও এই ১ শতাংশই মিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।

 

বর্তমানে ‘ফিয়া’ অ্যাপটি আইওএস ও গুগল ক্রোম এক্সটেনশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা যখন কোনো পণ্যের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন, তখন সেখানে ‘Should I buy this?’ নামে একটি বাটন দেখতে পাবেন। বাটনে ক্লিক করলে ফিয়া অ্যাপটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইন্টারনেট বিশ্লেষণ করে জানাবে সেই পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি, কম, না গড়ের মধ্যে পড়ছে।

 

উদাহরণ হিসেবে, পরীক্ষামূলকভাবে একটি লুই ভুইতোঁর ১,৯৫০ ডলারের ব্যাগের ওয়েবপেজে গেলে ফিয়া জানায়, ব্যাগটি “এই মূল্যের যোগ্য”। পাশাপাশি ফ্যাশনফাইল ও ইবের মতো সাইট থেকে পাওয়া কমদামি (যেমন ১,৪৫৩ ডলারে ব্যবহৃত) বিকল্পের লিংকও দেখায়।

 

এছাড়া ব্যবহারকারীদের ফিয়ার নিজস্ব ওয়েবসাইটে পাঠিয়ে দেয়, যেখানে একই ধরনের ব্যাগের তুলনামূলক তালিকা দেখা যায়।

 

ফিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, অ্যাপটি বাজারের বর্তমান ট্রেন্ড বিশ্লেষণ এবং ১.৫ কোটির বেশি পুরোনো পণ্যের ডেটাবেইসের সঙ্গে তুলনা করে ফলাফল প্রদর্শন করে। ডেটাবেইসটি দ্য রিয়েলরিয়েল, ভেস্টিয়্যার কালেকটিভ, থ্রেডআপ, স্টকএক্স, ইবে এবং পশমার্কের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম থেকে সংগৃহীত।

 

যদিও ক্যাপিটাল ওয়ান শপিং, রাকুটেন ও হানির মতো অ্যাপগুলো আগে থেকেই বাজারে রয়েছে, ফিয়া তাদের থেকে আলাদা হওয়ার চেষ্টা করছে ফ্যাশন-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিবেশবান্ধব থ্রিফটিং সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com