ইরানের হামলার আশঙ্কায় বাগদাদের দূতাবাস থেকে কর্মী সরালো যুক্তরাষ্ট্র

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি ইস্যুতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। এতে করে নিরাপত্তার স্বার্থে ইরাকের বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস থেকে অপরিহার্য নয় এমন কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনা এবং ইরাকে মার্কিন দূতাবাসে ইরানের সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় এ পদক্ষেপ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন।

 

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

 

মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছেন তারা। আর ইসরায়েল ইরানে হামলা চালালে পাল্টা প্রতিশোধ নিতে পারে তেহরান। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের মদতদাতা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি কিংবা দূতাবাসেও হামলা চালাতে তারা। মূলত এসব কথা মাথায় রেখেই মার্কিন দূতাবাস থেকে কর্মীদের সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

 

এছাড়া, মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েত এবং বাহরাইনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমেরিকান সামরিক কর্মীদের পরিবারের লোকজনকে দেশে ফেরার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ।

 

সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা স্থবির হয়ে পড়েছে। যদিও আগামী ১৫ জুন ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ষষ্ঠ দফা বৈঠকে বসার পরিকল্পনা করছেন মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ।

 

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, আমেরিকানদের এই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ এটি একটি বিপজ্জনক জায়গা হতে পারে।

 

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেবে না। পাশাপাশি ইরান নিজে থেকেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

 

অন্যদিকে, পরমাণু চুক্তি যদি ব্যর্থ হয় এ নিয়ে মার্কিনিরা বাড়াবাড়ি করলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ। তিনি বলেন, যদি আলোচনা ব্যর্থ হয় এবং ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক হামলার নির্দেশ দেন, তাহলে মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালাবে তেহরান।

 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দফতর পেন্টাগনের দাবি, ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের মতো কিছু একটা তৈরি করার দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে তাদের কাছে স্পষ্ট তথ্য রয়েছে। তবে ইরান জানিয়েছে, তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি কেবল বেসামরিক জ্বালানি উৎপাদনের জন্য। এমনকি কোনো পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করা  হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে ইরান।

 

ইরানের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা ক্রমেই জটিল হচ্ছে। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে গাজা যুদ্ধের পর বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জেলের জালে ধরা পড়ল ১৯ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের কাতলা,বিক্রি ৪৪ হাজার

» অবৈধ অভিবাসন রোধে ইইউ’র সহযোগিতা চেয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» শিবির প্যানেলের চার নারী প্রার্থীই বিজয়ী

» “দুর্জন যে বিদ্বান হলেও সর্বদা পরিত্যাজ্য”: গণেশ

» ডাকসুতে ছাত্রলীগের সঙ্গে আঁতাত করেছে শিবির: মির্জা আব্বাস

» সবার আগে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দাবি করেছে জামায়াত: মাসুদ সাঈদী

» গভীর ষড়যন্ত্রের ফল হচ্ছে ডাকসু নির্বাচন : প্রিন্স

» গণেশ লুঙ্গির আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিপ্লবী নয় :বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায়

» ডাকসু বিজয়ীদের শুভেচ্ছা জানালেন সাবেক ভিপি নুর

» ডাকসু নির্বাচন জাতীয় ভোটের প্রতিফলন না: মান্না

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ইরানের হামলার আশঙ্কায় বাগদাদের দূতাবাস থেকে কর্মী সরালো যুক্তরাষ্ট্র

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি ইস্যুতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। এতে করে নিরাপত্তার স্বার্থে ইরাকের বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস থেকে অপরিহার্য নয় এমন কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনা এবং ইরাকে মার্কিন দূতাবাসে ইরানের সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় এ পদক্ষেপ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন।

 

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

 

মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছেন তারা। আর ইসরায়েল ইরানে হামলা চালালে পাল্টা প্রতিশোধ নিতে পারে তেহরান। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের মদতদাতা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি কিংবা দূতাবাসেও হামলা চালাতে তারা। মূলত এসব কথা মাথায় রেখেই মার্কিন দূতাবাস থেকে কর্মীদের সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

 

এছাড়া, মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েত এবং বাহরাইনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমেরিকান সামরিক কর্মীদের পরিবারের লোকজনকে দেশে ফেরার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ।

 

সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা স্থবির হয়ে পড়েছে। যদিও আগামী ১৫ জুন ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ষষ্ঠ দফা বৈঠকে বসার পরিকল্পনা করছেন মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ।

 

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, আমেরিকানদের এই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ এটি একটি বিপজ্জনক জায়গা হতে পারে।

 

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেবে না। পাশাপাশি ইরান নিজে থেকেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

 

অন্যদিকে, পরমাণু চুক্তি যদি ব্যর্থ হয় এ নিয়ে মার্কিনিরা বাড়াবাড়ি করলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ। তিনি বলেন, যদি আলোচনা ব্যর্থ হয় এবং ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক হামলার নির্দেশ দেন, তাহলে মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালাবে তেহরান।

 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দফতর পেন্টাগনের দাবি, ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের মতো কিছু একটা তৈরি করার দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে তাদের কাছে স্পষ্ট তথ্য রয়েছে। তবে ইরান জানিয়েছে, তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি কেবল বেসামরিক জ্বালানি উৎপাদনের জন্য। এমনকি কোনো পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করা  হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে ইরান।

 

ইরানের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা ক্রমেই জটিল হচ্ছে। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে গাজা যুদ্ধের পর বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com