ইয়ামিন হত্যা: ৫ দিনের রিমান্ডে পুলিশ কর্মকর্তা কাফি

ছবি সংগৃহীত

 

সাভারে গুলি করে পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে ফেলে দেওয়া শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন হত্যা মামলায় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফির (সুপার নিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

 

আজ সকালে ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলহাস উদ্দীন রিমান্ডের এ আদেশ দেন। রিমান্ড আবেদনের পক্ষে ওমর ফারুক ফারুকী, শামসুজ্জামান দিপু প্রমুখ আইনজীবী শুনানি করেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রিমান্ড বাতিলসহ জামিন চান। শুনানি শেষে বিচারক তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

 

গত ২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থেকে কাফিকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর গত ৪ সেপ্টেম্বর হাজারীবাগ থানার অপহরণ মামলায় তাকে আটদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। সেই রিমান্ড শেষে আজ তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় সাভার থানার ইয়ামিন হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে সাতদিনের জন্য রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক ইনটেলিজেন্স আব্দুল্লাহ বিশ্বাস।

 

জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট ঢাকার চিফ জুডি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইয়ামিন হত্যার ঘটনায় মামলা করেন তার মামা আব্দুল্লাহ আল কবির। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি সাভার থানা পুলিশকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন। এ মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা কাফি এজাহারভুক্ত আসামি।

 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৮ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে। তারা শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনকে ধরে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের নিকটে নিয়ে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে বুকের বামপাশে গুলি করে। বন্দুকের গুলিতে ইয়ামিনের বুকের বামপাশে অসংখ্য গুলির স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। এমতাবস্থায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ইয়ামিনকে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপরে ফেলে রেখে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য গাড়িটি এপাশ থেকে ওপাশ প্রদক্ষিণ করতে থাকে।

 

ইয়ামিনকে প্রায় মৃত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেয় এবং সাঁজোয়া যানের ভেতর থেকে একজন পুলিশ সদস্যকে বের করে তার পায়ে পুনরায় গুলির নির্দেশ দেয়। ওই পুলিশ সদস্য ইয়ামিনকে মৃত ভেবে পায়ে গুলি না করে রাস্তার ওপরের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে নিয়ে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেয়। গুলিবিদ্ধ শাইখ ইয়ামিনকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রচণ্ড কষ্টে নিশ্বাস নিতে তখনও দেখা যায়। এমতাবস্থায় পুলিশ সদস্যরা ধরাধরি করে উঁচু রোড ডিভাইডারের একপাশ হতে আরেক পাশ ছুড়ে ফেলে দেয়। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» অন্তর্বর্তী সরকার ফেল করলে আমাদের বিপদ আছে : এ্যানি

» আওয়ামী লীগ কখনই গণতান্ত্রিক দল ছিল না, তারা ফ্যাসিবাদী দল: মির্জা ফখরুল

» তিন মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় ৩৭০ কোটি টাকা: জ্বালানি উপদেষ্টা

» জামায়াত সেক্রেটারি গত ১৫ বছরে সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারিনি

» ‘বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো ফ্যাসিস্টকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না’

» ভবিষ্যত ধ্বংস করে দিয়ে পালিয়েছেন হাসিনা: রিজভী

» পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পর্শে তিন শিক্ষার্থী নিহত

» সোনার দামে বড় লাফ

» শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ ও আহতদের নামে স্মরণসভা করার নির্দেশ

» এক বছরের মধ্যেই নির্বাচন চান ৬১.১% মানুষ, সংস্কার শেষে নির্বাচনের পক্ষে ৬৫.৯%

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ইয়ামিন হত্যা: ৫ দিনের রিমান্ডে পুলিশ কর্মকর্তা কাফি

ছবি সংগৃহীত

 

সাভারে গুলি করে পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে ফেলে দেওয়া শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন হত্যা মামলায় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফির (সুপার নিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

 

আজ সকালে ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলহাস উদ্দীন রিমান্ডের এ আদেশ দেন। রিমান্ড আবেদনের পক্ষে ওমর ফারুক ফারুকী, শামসুজ্জামান দিপু প্রমুখ আইনজীবী শুনানি করেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রিমান্ড বাতিলসহ জামিন চান। শুনানি শেষে বিচারক তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

 

গত ২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থেকে কাফিকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর গত ৪ সেপ্টেম্বর হাজারীবাগ থানার অপহরণ মামলায় তাকে আটদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। সেই রিমান্ড শেষে আজ তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় সাভার থানার ইয়ামিন হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে সাতদিনের জন্য রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক ইনটেলিজেন্স আব্দুল্লাহ বিশ্বাস।

 

জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট ঢাকার চিফ জুডি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইয়ামিন হত্যার ঘটনায় মামলা করেন তার মামা আব্দুল্লাহ আল কবির। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি সাভার থানা পুলিশকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন। এ মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা কাফি এজাহারভুক্ত আসামি।

 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৮ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে। তারা শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনকে ধরে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের নিকটে নিয়ে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে বুকের বামপাশে গুলি করে। বন্দুকের গুলিতে ইয়ামিনের বুকের বামপাশে অসংখ্য গুলির স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। এমতাবস্থায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ইয়ামিনকে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপরে ফেলে রেখে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য গাড়িটি এপাশ থেকে ওপাশ প্রদক্ষিণ করতে থাকে।

 

ইয়ামিনকে প্রায় মৃত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেয় এবং সাঁজোয়া যানের ভেতর থেকে একজন পুলিশ সদস্যকে বের করে তার পায়ে পুনরায় গুলির নির্দেশ দেয়। ওই পুলিশ সদস্য ইয়ামিনকে মৃত ভেবে পায়ে গুলি না করে রাস্তার ওপরের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে নিয়ে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেয়। গুলিবিদ্ধ শাইখ ইয়ামিনকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রচণ্ড কষ্টে নিশ্বাস নিতে তখনও দেখা যায়। এমতাবস্থায় পুলিশ সদস্যরা ধরাধরি করে উঁচু রোড ডিভাইডারের একপাশ হতে আরেক পাশ ছুড়ে ফেলে দেয়। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com