ইতালিতে শোষণের শিকার কৃষি শ্রমিকেরা

ছবি: সংগৃহীত

 

ইতালির আব্রুজো অঞ্চলে কর্মরতদের এক তৃতীয়াংশই বিদেশি নাগরিক। কিন্তু অভিবাসী কর্মীরা স্থানীয়দের তুলনায় অনেক বেশি অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ওপেনপলিস ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

 

ওপেনপলিস ফাউন্ডেশন, রিপাবলিকা, আব্রুজো ফাউন্ডেশন, গ্রান সাসো সায়েন্স ইনস্টিটিউট এবং স্টার্টিংআপ-এর যৌথ প্রকল্পের অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

ইতালির রাজধানী রোমের পূর্বে দিকের জনপদ আব্রুজো। অ্যাড্রিয়াটিক সাগর এবং অ্যাপেনাইন পর্বতমালার মধ্যে এটির অবস্থান। ইতালীয় পরিসংখ্যান সংস্থা আইএসটিএটির খসড়া কৃষি সম্পর্কিত সর্বশেষ আদমশুমারির ভিত্তিতে এটি তৈরি করা হয়েছে।

 

আইএসটিএটি-এর তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে আট হাজার ৬০৬ জন ইইউ এং অ-ইউরোপীয় কর্মী কৃষিখাতে কর্মরত ছিলেন। এসব ব্যক্তিরা শুধু কৃষি কোম্পানির আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত ছিলেন। ব্যক্তি ও পারিবারিক মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর এই পরিসংখ্যানে ধরা হয়নি।

প্রতিবেদনের গবেষকেরা ব্যাখ্যা করেন, ‘বিদেশিরা কৃষিখাতে মোট কর্মশক্তির ৩৬.৬ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। তবে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি বিবেচনা করলে এই সংখ্যা ২৮ শতাংশ। স্বল্পমেয়াদি চুক্তির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ কর্মী বিদেশি নাগরিক। আব্রুজোতে অঞ্চলে অ-ইতালীয় কর্মীরা স্থানীয়দের তুলনায় অনিশ্চিয়তা নিয়ে কাজ করছে।

 

ইতালির কৃষিখাতে গ্যাং-মাস্টার সিস্টেম একটি বড় সমস্যা হিসেবে এখনও রয়ে গেছে। দক্ষিণ ইতালির অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় আব্রুজোতে ঐতিহাসিকভাবে শ্রম শোষণের হার কম হলেও ওপেনপলিসের গবেষণায় দেখা গেছে, এ অঞ্চলের কৃষি খাতে কর্মরত বিদেশিরা শোষণে শিকার হওয়ার বড় ঝুঁকি রয়েছে।

 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও আব্রুজোতেও সন্দেহভাজন গ্যাংমাস্টারদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেছে ইতালি কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া দেশটির তেরামো প্রদেশে, ফুচিনো অঞ্চলে, ল’আকিলা, পেসিনা এবং লুকো দে মার্সি শহরেও এমন অভিযানের খবর পাওয়া গেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

 

ইতালির ফুচিনো এবং ল’আকিলা অঞ্চলের এক হাজার হেক্টর জমিতে শাকসবজি এবং আলু চাষ করে ৫০০ জনেরও কৃষক বছরে ২০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি আয় করছে। বর্তমানে প্রায় এক হাজার কর্মী এসব খামারে কর্মরত।

 

ওপেনপলিস ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময়ে কনফ্যাগ্রিকোলটুরা অঞ্চলের স্থানীয় খামারগুলোতে বিদেশি কর্মীরা প্রধান সূত্র হিসেবে কাজ করেছে।

অনেক কর্মী মার্সিকা এবং আব্রুজো অঞ্চলের মূল সমাজের সঙ্গে ভালোভাবে একীভূত হলেও অনেকেই তাদের নিয়োগকর্তা এবং গ্যাংমাস্টারদের দ্বারা শোষিত হয়েছেন।   সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিশেষ অভিযানে ১৪৭৮ জন গ্রেফতার

» মৌলিক সংস্কারে ঐকমত্য অনেক দূর: আখতার হোসেন

» একজন উপদেষ্টা স্বার্থসিদ্ধির জন্য মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন: ফখরুল

» মুরাদনগরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি ‘বিএনপি কর্মী নয়’: রিজভী

» ইমাম ও খতিবদের বেতন ২০১৫ সালের পে স্কেল অনুযায়ী দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি

» সবার জন্য বাসযোগ্য ও বৈষম্যহীন পৃথিবী গড়তে চাই: প্রধান উপদেষ্টা

» বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে কানাডার হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

» গ্রীষ্মে খাবার সতেজ রাখার স্মার্ট উপায়

» আউটওয়ার্ড রেমিটেন্সের জন্য ভিসা ডিরেক্ট ফর অ্যাকাউন্ট চালু করতে ভিসার সঙ্গে ব্র্যাক ব্যাংকের চুক্তি

» বড়াইগ্রামে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে এক বৃদ্ধ গ্রেফতার

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ইতালিতে শোষণের শিকার কৃষি শ্রমিকেরা

ছবি: সংগৃহীত

 

ইতালির আব্রুজো অঞ্চলে কর্মরতদের এক তৃতীয়াংশই বিদেশি নাগরিক। কিন্তু অভিবাসী কর্মীরা স্থানীয়দের তুলনায় অনেক বেশি অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ওপেনপলিস ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

 

ওপেনপলিস ফাউন্ডেশন, রিপাবলিকা, আব্রুজো ফাউন্ডেশন, গ্রান সাসো সায়েন্স ইনস্টিটিউট এবং স্টার্টিংআপ-এর যৌথ প্রকল্পের অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

ইতালির রাজধানী রোমের পূর্বে দিকের জনপদ আব্রুজো। অ্যাড্রিয়াটিক সাগর এবং অ্যাপেনাইন পর্বতমালার মধ্যে এটির অবস্থান। ইতালীয় পরিসংখ্যান সংস্থা আইএসটিএটির খসড়া কৃষি সম্পর্কিত সর্বশেষ আদমশুমারির ভিত্তিতে এটি তৈরি করা হয়েছে।

 

আইএসটিএটি-এর তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে আট হাজার ৬০৬ জন ইইউ এং অ-ইউরোপীয় কর্মী কৃষিখাতে কর্মরত ছিলেন। এসব ব্যক্তিরা শুধু কৃষি কোম্পানির আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত ছিলেন। ব্যক্তি ও পারিবারিক মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর এই পরিসংখ্যানে ধরা হয়নি।

প্রতিবেদনের গবেষকেরা ব্যাখ্যা করেন, ‘বিদেশিরা কৃষিখাতে মোট কর্মশক্তির ৩৬.৬ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। তবে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি বিবেচনা করলে এই সংখ্যা ২৮ শতাংশ। স্বল্পমেয়াদি চুক্তির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ কর্মী বিদেশি নাগরিক। আব্রুজোতে অঞ্চলে অ-ইতালীয় কর্মীরা স্থানীয়দের তুলনায় অনিশ্চিয়তা নিয়ে কাজ করছে।

 

ইতালির কৃষিখাতে গ্যাং-মাস্টার সিস্টেম একটি বড় সমস্যা হিসেবে এখনও রয়ে গেছে। দক্ষিণ ইতালির অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় আব্রুজোতে ঐতিহাসিকভাবে শ্রম শোষণের হার কম হলেও ওপেনপলিসের গবেষণায় দেখা গেছে, এ অঞ্চলের কৃষি খাতে কর্মরত বিদেশিরা শোষণে শিকার হওয়ার বড় ঝুঁকি রয়েছে।

 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও আব্রুজোতেও সন্দেহভাজন গ্যাংমাস্টারদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেছে ইতালি কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া দেশটির তেরামো প্রদেশে, ফুচিনো অঞ্চলে, ল’আকিলা, পেসিনা এবং লুকো দে মার্সি শহরেও এমন অভিযানের খবর পাওয়া গেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

 

ইতালির ফুচিনো এবং ল’আকিলা অঞ্চলের এক হাজার হেক্টর জমিতে শাকসবজি এবং আলু চাষ করে ৫০০ জনেরও কৃষক বছরে ২০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি আয় করছে। বর্তমানে প্রায় এক হাজার কর্মী এসব খামারে কর্মরত।

 

ওপেনপলিস ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময়ে কনফ্যাগ্রিকোলটুরা অঞ্চলের স্থানীয় খামারগুলোতে বিদেশি কর্মীরা প্রধান সূত্র হিসেবে কাজ করেছে।

অনেক কর্মী মার্সিকা এবং আব্রুজো অঞ্চলের মূল সমাজের সঙ্গে ভালোভাবে একীভূত হলেও অনেকেই তাদের নিয়োগকর্তা এবং গ্যাংমাস্টারদের দ্বারা শোষিত হয়েছেন।   সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com