মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ আলী শিকদার (অব.): তিনি ছিলেন ক্ষমতার পূজারি। ক্ষমতাই ছিল তার একমাত্র ভালোবাসা। ফরাসি বিপ্লবের পথ ধরে উনিশ শতকের শুরুতে নেপোলিয়ান ফ্রান্সের সম্রাটের আসনে অধিষ্ঠিত হন। ঘোষণা করেন সারা ইউরোপকে তিনি একটি রাষ্ট্রের অধীনে আনবেন। সবার জন্য এক আইন এবং একটি মাত্র সরকার থাকবে। গ্লিমসেস অব ওয়ার্ল্ড হিস্টরি গ্রন্থের ৩৯২ পৃষ্ঠায় নেপোলিয়ানের উচ্চ আকাক্সক্ষার অভিব্যক্তি পাওয়া যায়। বইয়ের একই পৃষ্ঠায় পন্ডিত জওহুরলাল নেহেরু নিজের মন্তব্য লিখেছেন। তাতে বলেছেন, শাসকের সীমাহীন ক্ষমতার আকাক্সক্ষা শাসক ও রাষ্ট্র, উভয়ের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়। এবং আরও বলেছেন, এটি মাত্র সময়ের ব্যাপার যে, ওই শাসক ও তার রাজ্যের পতন অনিবার্য। নেপোলিয়ানের ভাগ্যে সেটাই ঘটেছে। ১৮১৫ সালে ওয়াটারলু যুদ্ধে পরাজয়ের পর নির্জন দ্বীপ সেল্ট হেলেনায় আটক থাকা অবস্থায় ১৮২১ সালে মাত্র ৫২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ডিক্টেটরগণ মূল্যবোধ ও নীতি-আদর্শ নয়; অন্যের আলোচনা-সমালোচনা নয়, সম্পূর্ণ নিজের ক্ষমতার অহংবোধ দ্বারা পরিচালিত হন। পারিপার্শ্বের সবাই তখন হয়ে যান কেতাদুরস্ত চাটুকার ও স্তাবক। রাজার কোনো ভুল হতে পারে না। রাজা যেটি শুনলে খুশি হবেন সেটাই সবাই বলেন। পরিস্থিতির সঠিক বিশ্লেষণ পুতিনের কাছে কেউ তুলে ধরেনি। নেপোলিয়ানের বেলায়ও তাই ঘটেছিল। ১৮০৮ সালে স্পেন দখল এবং নিজের অযোগ্য ভাই জোসেফকে সেখানকার শাসক নিয়োগ, দুটোই নেপোলিয়ানের জন্য মহাকাল হয়ে ওঠে। তারপর ১৮১২ সালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যর্থ সামরিক অভিযান নেপোলিয়ানকে ওয়াটারলুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। স্পেনের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর বড় এক অংশ আটকা পড়ায় এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে বিশাল বিপর্যয়ের ফলে পরবর্তীতে নেপোলিয়ান ওয়াটারলুতে আর কুলিয়ে উঠতে পারেনি। গ্লিমসেস অব ওয়ার্ল্ড হিস্টরি গ্রন্থের ৩৯১ পৃষ্ঠায় জওহুরলাল নেহেরু নেপোলিয়ানের শেষ উপলব্ধির কথা উল্লেখ করেছেন। নেপোলিয়ান বলেছেন, পৃথিবীতে শক্তি দুই প্রকারের হয়। প্রথমটি চেতনার আর দ্বিতীয়টি তলোয়ারের শক্তি। শেষ বিচারে চেতনার কাছে তলোয়ারের পরাজয় ঘটে। কিন্তু এই উপলব্ধি যখন হয়েছে তখন নেপোলিয়ানের জন্য সব দুয়ার বন্ধ হয়ে গেছে। নেপোলিয়ানের ইতিহাস থেকে হিটলার যদি শিক্ষা নিতেন তাহলে জার্মানি, ইউরোপ এবং পুরো বিশ্বের ইতিহাস অন্য রকম হতে পারত। সম্পূর্ণ ইউরোপকে পদদলিত করার লক্ষ্যে অনাক্রমণের চুক্তি ভঙ্গ করে ১৯৪১ সালের ২২ জুন হিটলার রাশিয়া (তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়ন) আক্রমণ করেন। এই সর্বনাশী ভুল না করলে ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর জাপান হয়তো পার্ল হারবার আক্রমণ করত না এবং আমেরিকাও হয়তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়াত না। সে রকম হলে হিটলার ও জার্মানির মহাবিপর্যয় হয়তো নাও ঘটতে পারত। মেইন ক্যাম্প গ্রন্থের ১১তম অধ্যায়ের ২৫২-২৬২ পৃষ্ঠায় হিটলারের চরম বর্ণবাদি চিন্তা ও অহংবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। হিটলার মনে করতেন জার্মানই সর্বশ্রেষ্ঠ কুলীন জাত। তাই বাকি সবাইকে জার্মানির অধীনস্থ হয়ে থাকতে হবে। জার্মানিরা কুলীন আর্য জাতি, শাসন করার অধিকার কেবল তাদের। অন্য সব অকুলীন নমশূদ্রের হাতে শাসন ক্ষমতা থাকলে তা মানবজাতির জন্য অমঙ্গল হবে। আজকের লেখার শুরুতে নেপোলিয়ান ও হিটলারের চিন্তা-চেতনা সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করলাম এই কারণে যে, ২০২১ সালের মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজস্ব চিন্তা চেতনা সম্পর্কিত বিশাল একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন, যার মাধ্যমে পুতিনের বৃহত্তর রাশান সাম্রাজ্য গঠন করার স্বপ্নের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে ইতিহাসকে রোলব্যাক করতে হবে এবং তার মধ্য দিয়ে যুদ্ধ, সহাযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠবে সেটাই স্বাভাবিক। প্রেসিডেন্ট পুতিন তার লেখায় নেপোলিয়ান, হিটলার, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, যুগে যুগে রাশিয়ার ওপর অন্যায় করা হয়েছে, আক্রমণের শিকার হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকে মহাবিপর্যয় ও লজ্জাজনক ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন পুতিন। প্রথম মহাযুদ্ধের পর স্বাক্ষরিত ভার্সাই চুক্তিকে লজ্জাজনক আখ্যা দিয়ে হিটলার জার্মান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ এবং গণজাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন। পুতিন তার লেখায় বলেছেন, ইউক্রেন, বেলারুশ, কাজাখস্তান আজ আলাদা রাষ্ট্র হলেও রাশানদের সঙ্গে এদের হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ও জাতিগত বন্ধন রয়েছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে একই ছাতার নিচে থাকাটা এসব দেশের জনগণের প্রকৃতিগত অধিকার। সুতরাং ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক অভিযানের মধ্য দিয়ে পুতিনের স্বপ্ন বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ রাশিয়া প্রতিষ্ঠার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যুদ্ধ ঘোষণার কারণ হিসেবে যে বিষয়গুলো সামনে আনা হয়েছে তার মধ্যে আপাত যথার্থতা থাকলেও সেটাই মূল কারণ নয়। অন্যদিকে যুদ্ধের ৪০তম দিনের মাথায় পরিস্থিতির মূল্যায়নে দেখা যায় হিসাব কষতে বিশাল ভুল করেছেন পুতিন। ইউক্রেনের তুলনায় রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা অনেক অনেক গুণ বেশি। দুয়ের মধ্যে কোনো তুলনাই চলে না। তাই পুতিন হয়তো ভেবেছিলেন, সাত থেকে দশ দিনের মাথায় তিনি বিজয়ীর ভুষায় কিয়েভে উপস্থিত হবেন, ইউক্রেনের মানুষ তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করবেন এবং তার মধ্য দিয়ে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত হয়ে যাবে। কিন্তু এর কিছুই এখনো হয়নি এবং সেরকম কিছু হওয়াটা এখন মরীচিকার মতোই দেখাচ্ছে। ন্যাটো দেশসমূহের মধ্যে রাজনৈতিক বিভক্তি তৈরি, চায়নার সর্বাত্মক সমর্থন পাওয়ার প্রত্যাশা এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার বিরূপ প্রভাব সাধারণ মানুষকে স্পর্শ করার আগেই কিয়েভের শাসক পরিবর্তন ও ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর বিলুপ্তির লক্ষ্য, এর কোনোটাই যুদ্ধের ৪০তম দিনের মাথা এসেও অর্জিত হয়নি। উল্টো, ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশসমূহ আমেরিকার নেতৃত্বে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি ঐক্যবদ্ধ। ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের মতো শান্তিকামী নিরপেক্ষ দেশ এখন ন্যাটোতে যোগদানের কথা বলছে। রাশিয়ার পক্ষে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন দিলেও সামরিক ও অর্থনৈতিক সমর্থনের কথা চীন প্রকাশ্যে বলছে না। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ফলে চীন বড় উভয় সংকটের মধ্যে পড়েছে। প্রথমত, শি জিন পিং কর্তৃক ঘোষিত ২০৪৯ সালের মধ্যে চীনকে বিশ্বের এক নম্বর অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি হতে হলে, এই সময়ের মধ্যে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের মধ্য দিয়ে তাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক অটুট রাখা অপরিহার্য। অন্যদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পুতিনের পতন এবং রাশিয়া দুর্বল হয়ে সেখানে পশ্চিমাপন্থি শাসক ও সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে স্ট্র্যাটেজিক্যালি চীন বড় ধরনের অসুবিধায় পড়বে। কারণ, তেমনটি হলে পশ্চিম ফ্রন্টে সম্পূর্ণ ভারমুক্ত হয়ে আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্ব পূর্ব ফ্রন্ট, অর্থাৎ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সব শক্তি নিয়োগের সুযোগ পাবে, যা চীনের জন্য বড় চাপের সৃষ্টি করবে। একা একা সেই চাপ মোকাবিলা করা চীনের জন্য কঠিন হবে। সুতরাং পুতিনের পতন ও রাশিয়ার বিপর্যয় মানে চীনের জন্য বড় বিপদ সংকেত। তাই শেষ পর্যন্ত চীনের অবস্থান কী হবে সেটা দেখার জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে পুতিন কী করবেন সেটাই এখন মুখ্য বিবেচ্য বিষয়। যুদ্ধের ৪০তম দিনেও ইউক্রেনের বড় কোনো শহর রাশিয়ার সেনাবাহিনীর দখল করতে পারেনি। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ যুদ্ধ ক্রমশই রাশিয়ান সেনাবাহিনীর জন্য কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। পোল্যান্ডসহ চারটি ন্যাটোভুক্ত দেশের সরাসরি ইউক্রেনের সঙ্গে স্থলসীমান্ত রয়েছে। এসব সীমান্ত দিয়ে মিসাইলসহ আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, ওষুধ, খাদ্য, পানি, সব ধরনের বড় বড় চালান ইউক্রেনের জন্য আসছে। এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট পুতিনের জন্য কী কী বিকল্প আছে তা নিয়ে একটু সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক। প্রথমত, বিমান থেকে নির্বিচারে বোম্বিং এবং দূরপাল্লার রকেট, মিসাইল ও গোলন্দাজ বাহিনীর গোলা নিক্ষেপ করে রাজধানী কিয়েভসহ বড় বড় শহরে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ ব্যূহ সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলতে পারে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। তারপর ট্যাংক বাহিনীর দ্বারা শহরগুলো দখলে নেওয়া। এই সক্ষমতা রাশিয়ার রয়েছে। কিন্তু এটা করতে গেলে হাজার নয়, লাখ লাখ বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটবে এবং সম্পূর্ণ ইউক্রেন একটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে। এর মধ্য দিয়ে হয়তো আপাতত ইউক্রেন রাশিয়ার দখলে আসবে। কিন্তু তারপর কী হবে। দখলদারিত্ব বজায় রাখার চেষ্টায় ইউক্রেনের পুনর্নির্মাণ ও পুনর্গঠনে রাশিয়াকে শত শত বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে, সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সেটা হবে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো অবস্থা। দ্বিতীয়ত, যুদ্ধ শেষ হবে না। ইউক্রেন গেরিলা যুদ্ধ শুরু করবে। বড় স্থলসীমান্ত রয়েছে এমন দেশ বা দেশসমূহ থেকে যখন কোনো গেরিলা বাহিনী সর্বাত্মক সমর্থন পায় তখন সেই গেরিলা বাহিনীকে কখনো পরাস্ত করা যায় না। তাই দীর্ঘ রক্তক্ষরণের মধ্য দিয়ে এক সময়ে আফগানিস্তানের মতো হাত গুটিয়ে শূন্য হাতে রাশিয়াকে ফিরে আসতে হতে পারে। সেই ধকল রাশিয়ার পক্ষে সামলানো কঠিন হবে। দ্বিতীয় বিকল্প- ইউক্রেনের সঙ্গে একটা মুখরক্ষার সমঝোতার চেষ্টা রাশিয়া করতে পারে। যদি ইউক্রেন ডনবাস অঞ্চলের ডোনেস্ক ও লুহনাস্কো, দুটিকে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে মেনে নেয় এবং ঘোষণা দেয় ইউক্রেন কখনো ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হবে না, তাহলে যুদ্ধবিরতি হতে পারে। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এ সবগুলো শর্ত মেনে নিতে পারবে না। কারণ, এই দাবিগুলো ২৪ ফেব্রুয়ারির আগে জেলেনস্কি মেনে নিলে হয়তো যুদ্ধই এড়ানো যেত। তাই এত ধ্বংসযজ্ঞের পর সেই সব দাবি মেনে নেওয়ার কি মানে থাকতে পারে। তাতে ইউক্রেনের প্রাপ্তি কী ঘটবে, কিছুই না। বরং ধ্বংসযজ্ঞের পুনর্নির্মাণে শত শত বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হবে, তা কোথা থেকে আসবে। তাই উপরোক্ত সব দাবি মেনে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার পক্ষে পশ্চিমা বিশ্ব সায় দিবে বলে মনে হয় না। এই দ্বিতীয় বিকল্প হতে পারে রাশিয়ার জন্য সম্মানজনক পশ্চাদপসরণ। কিন্তু এর সম্ভাবনা খুব কম। তৃতীয় বিকল্প হতে পারে ইউক্রেন ঘোষণা দিবে তারা ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদান করবে না এবং যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ চাইবে না। এটাও এখন জেলনস্কির জন্য কঠিন। অন্যদিকে রাশিয়া এতটুকু প্রাপ্তিতে ফিরে আসবে এমন পরিকল্পনা থাকলে সর্বাত্মক নয়, সীমিত সামরিক অভিযানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত। এরকম হলে রাশিয়ার অভ্যন্তরে পুতিনের জনপ্রিয়তায় ধস নামতে পারে। প্রশ্ন উঠবে কেন সর্বাত্মক সামরিক অভিযানে যাওয়া হলো। সুতরাং এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি যুদ্ধ শেষ হবে না। তাতে দীর্ঘায়িত যুদ্ধে রাশিয়ার অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। দ্রব্যমূল্যের কশাঘাতে রাশিয়ার মানুষ পুতিনের বিরুদ্ধে চলে যেতে পারে। এমন কি, অভ্যুত্থান ঘটে যাওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। বরফ গলে কাদা হলে তা অত্যন্ত পিচ্ছিল হয়। গাড়ি চালানো বা পায়ে হাঁটাও কঠিন হয়ে পড়ে। যে কোনো সময়ে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। ইউক্রেনের বরফ গলা কাদা মাটিতে পুতিন ও তার সেনাবাহিনী যেভাবে আটকা পড়েছে সেখান থেকে সহিসালামতে সহজে বের হয়ে আসতে পারবে তার কোনো লক্ষণ আপাতত দেখা যাচ্ছে না।
লেখক : রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক। সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন