আন্তর্জাতিক গৃহশ্রমিক দিবস আজ

আন্তর্জাতিক গৃহশ্রমিক দিবস আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জুন)। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে। ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে দিবসটি বেসরকারিভাবে পালিত হচ্ছে।

 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন ২০১১ সালে গৃহপরিচারিকা/পরিচারকদের কাজকে শ্রমিকের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কনভেনশন ১৮৯ প্রকাশ করে। পরে ১৬ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক গৃহশ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করতে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২৫টি দেশে এই কনভেনশনটি গৃহীত হয়েছে।

বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) সমীক্ষা বলছে, গত বছর ৩৮ জন গৃহকর্মী ধর্ষণসহ নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হন। তাদের মধ্যে ১২ জন নিহত হন, দুজন আত্মহত্যা করেন। ২০২০ সালে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ৪৪ জন গৃহশ্রমিক, এরমধ্যে নিহত হয়েছিলেন ২০ জন। আর চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১২ জন। এরমধ্যে নিহত হয়েছেন তিনজন।

 

গৃহশ্রমিকরে সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও গত বছর করা বিলসের জরিপ বলছে, সংখ্যাটি ২০ লাখ ছাড়িয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশে যারা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন, তাদের ৯৫ ভাগের বেশি নারী ও মেয়েশিশু। নিয়োগকারীর সঙ্গে ৯৯ শতাংশের বেশি গৃহশ্রমিকের কোনো লিখিত চুক্তি নেই। করোনাকালে ২৮ দশমিক ২ শতাংশ গৃহশ্রমিকের মজুরি কমেছে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার আগেও গৃহকর্মীদের অবস্থা নাজুক ছিল। তারা শ্রমিক হিসেবে কখনো স্বীকৃতি পাননি। ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬’ এর আওতাবহির্ভূত রাখায় তারা মানবিক অধিকার, শোভন কর্মপরিবেশ, ন্যায্যমজুরি, সামাজিক সুরক্ষা ও সংগঠিত হওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত। বেশির ভাগ গৃহকর্মীকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হতে হয়।

 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের কনভেনশনে গৃহশ্রমিকের অধিকার ও কাজ সম্পর্কে যে বিষয়গুলোর উল্লেখ রয়েছে– কাজের জায়গায় সম্মানজনক পরিবেশ বজায় রাখতে হবে, গৃহশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি থাকবে, তাদের ইউনিয়ন তৈরির অধিকার থাকবে, নিয়োগকারী ও শ্রমিকদের মধ্যে চুক্তিপত্র থাকবে, নির্দিষ্ট ছুটি থাকবে, শিশুশ্রমিক না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, সময়মতো বেতনের ব্যবস্থা থাকতে হবে, যৌন হেনস্তার মতো ঘটনা প্রতিরোধের যেন ব্যবস্থা থাকে ইত্যাদি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে : মান্না

» শিক্ষার্থীদের সততার চর্চা করতে হবে : অর্থ উপদেষ্টা

» বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়নি আরব আমিরাত : রাষ্ট্রদূত

» সেনাবাহিনীর সাথে ইউপিডিএফের গোলাগুলি, অস্ত্র উদ্ধার

» ১ বছর আগে বলেছিলাম, অদৃশ্য শক্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে, আজ দৃশ্যমান হচ্ছে: তারেক রহমান

» ছাত্রসংসদ নির্বাচনের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনেও পড়বে: জামায়াত আমির

» রাতের অন্ধকারে ‘জিনের আসর’ বসিয়ে নেতা নির্বাচন করে জামায়াত: আজিজুল বারী হেলাল

» ক্ষমতায় গেলে নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষ ঋণ দিয়ে স্বাবলম্বী করবে জামায়াত

» কেউ যেন বিএনপির নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে না পারে: তারেক রহমান

» বুক ফুলিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপন করুন: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপদেষ্টা

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আন্তর্জাতিক গৃহশ্রমিক দিবস আজ

আন্তর্জাতিক গৃহশ্রমিক দিবস আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জুন)। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে। ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে দিবসটি বেসরকারিভাবে পালিত হচ্ছে।

 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন ২০১১ সালে গৃহপরিচারিকা/পরিচারকদের কাজকে শ্রমিকের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কনভেনশন ১৮৯ প্রকাশ করে। পরে ১৬ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক গৃহশ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করতে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২৫টি দেশে এই কনভেনশনটি গৃহীত হয়েছে।

বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) সমীক্ষা বলছে, গত বছর ৩৮ জন গৃহকর্মী ধর্ষণসহ নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হন। তাদের মধ্যে ১২ জন নিহত হন, দুজন আত্মহত্যা করেন। ২০২০ সালে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ৪৪ জন গৃহশ্রমিক, এরমধ্যে নিহত হয়েছিলেন ২০ জন। আর চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১২ জন। এরমধ্যে নিহত হয়েছেন তিনজন।

 

গৃহশ্রমিকরে সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও গত বছর করা বিলসের জরিপ বলছে, সংখ্যাটি ২০ লাখ ছাড়িয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশে যারা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন, তাদের ৯৫ ভাগের বেশি নারী ও মেয়েশিশু। নিয়োগকারীর সঙ্গে ৯৯ শতাংশের বেশি গৃহশ্রমিকের কোনো লিখিত চুক্তি নেই। করোনাকালে ২৮ দশমিক ২ শতাংশ গৃহশ্রমিকের মজুরি কমেছে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার আগেও গৃহকর্মীদের অবস্থা নাজুক ছিল। তারা শ্রমিক হিসেবে কখনো স্বীকৃতি পাননি। ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬’ এর আওতাবহির্ভূত রাখায় তারা মানবিক অধিকার, শোভন কর্মপরিবেশ, ন্যায্যমজুরি, সামাজিক সুরক্ষা ও সংগঠিত হওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত। বেশির ভাগ গৃহকর্মীকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হতে হয়।

 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের কনভেনশনে গৃহশ্রমিকের অধিকার ও কাজ সম্পর্কে যে বিষয়গুলোর উল্লেখ রয়েছে– কাজের জায়গায় সম্মানজনক পরিবেশ বজায় রাখতে হবে, গৃহশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি থাকবে, তাদের ইউনিয়ন তৈরির অধিকার থাকবে, নিয়োগকারী ও শ্রমিকদের মধ্যে চুক্তিপত্র থাকবে, নির্দিষ্ট ছুটি থাকবে, শিশুশ্রমিক না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, সময়মতো বেতনের ব্যবস্থা থাকতে হবে, যৌন হেনস্তার মতো ঘটনা প্রতিরোধের যেন ব্যবস্থা থাকে ইত্যাদি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com