আওয়ামী লীগ সারাদেশকেই কারবালার প্রান্তরে পরিণত করেছিল : মির্জা ফখরুল

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শনিবার (৫ জুলাই) দেওয়া এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আশুরা কেবল শোকের দিন নয়, এটি ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের চিরন্তন প্রেরণা।

 

তিনি বলেন, “আশুরা হলো ইসলাম ধর্মের একটি স্মরণীয় দিন। হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.), তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের শাহাদাত বরণের স্মরণে ১০ মহররম ইতিহাসে এক মর্মস্পর্শী ও বেদনাদায়ক দিন। দিবসটি আজও আমাদেরকে গভীর দুঃখ ও বেদনায় ভারাক্রান্ত করে তোলে। আবার এ দিনটি সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে মজলুমের স্পষ্ট প্রতিবাদের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। অসত্য, জুলুম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে মরণপণ সংগ্রামের মাধ্যমে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার বার্তা দেয়। মানবিক সাম্য ও মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কারবালায় হযরত ইমাম হোসেন (রা.)-এর নিজ পরিবার, ঘনিষ্ঠজন ও অনুচরবৃন্দ জালিমের হাতে শহীদ হন। তাই শহীদে কারবালার মূল বার্তা হচ্ছে—নিপীড়িতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ।”

 

আওয়ামী নেতাদের পৈশাচিক দমন-পীড়নকে ইয়াজিদ বাহিনীর সমতুল্য করে বলেন, পতিত আওয়ামী স্বৈরাচার সারাদেশকেই কারবালার প্রান্তরে পরিণত করেছিল। জুলুম, হিংস্রতা ও রক্তপাতের এক দুঃসহ দুঃশাসনের মধ্যে জীবন কাটাতে হয়েছে এ দেশের মানুষকে। গত দেড় দশক ধরে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশ থেকে অদৃশ্য করা হয়েছিল। গণতন্ত্রকামী মানুষের স্থায়ী ঠিকানা ছিল কারাগারে। বিপুল জনপ্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। বিদেশে তাঁর সুচিকিৎসার আবেদনকে অগ্রাহ্য করে তাঁকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেওয়া হয়।

 

তিনি আরও বলেন, কারবালার প্রান্তরে ইমাম বাহিনীর মহিমান্বিত আত্মত্যাগের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আওয়ামী স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ ও রাজনৈতিক দলের সংগ্রামী নেতাকর্মীরা ৫ আগস্ট দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করে।

 

আশুরা ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি করে উল্লেখ করে তিনি বলেন , আশুরা ত্যাগ, নৈতিকতা ও অন্যায়কে প্রতিহত করার শিক্ষা দেয় এবং নিপীড়িতদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সংহতি জাগিয়ে তোলে। ব্যক্তিগত কোনো অভিলাষ নয়, বরং অবিচার, জবরদস্তি, মিথ্যা অহংকার ও আত্মসম্মানহীন নিপীড়কের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করাই ১০ মহররমের মূল বাণী। ইমাম হোসেন (রা.)-এর আত্মত্যাগের এই ঘটনা সারা দুনিয়ার সকল মজলুমকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে শতাব্দীর পর শতাব্দী প্রেরণা যুগিয়ে চলেছে।

 

ইমাম হোসেন (রা.)-এর প্রতি ও তাঁর পরিবার এবং কারবালার শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বানী শেষ করেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আ.লীগের ব্যবসাগুলো কারা চালায় আমরা জানি: হাসনাত আবদুল্লাহ

» এনসিপি ১০ জনের একটা দল, সেখানেও যৌন হয়রানি: রুমিন ফারহানা

» ‘দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন’: গয়েশ্বর

» ভারতের মোদিকে কসাই আখ্যা দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ

» রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থীর চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ

» সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতায় থাকতে চাওয়া হবে দুঃস্বপ্ন

» আওয়ামী লীগ সারাদেশকেই কারবালার প্রান্তরে পরিণত করেছিল : মির্জা ফখরুল

» পবিত্র আশুরা শোক, শ্রদ্ধা ও আত্মত্যাগের দিন: তারেক রহমান

» পবিত্র আশুরা অবিচারের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠায় সাহস জোগাবে : প্রধান উপদেষ্টা

» করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আওয়ামী লীগ সারাদেশকেই কারবালার প্রান্তরে পরিণত করেছিল : মির্জা ফখরুল

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শনিবার (৫ জুলাই) দেওয়া এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আশুরা কেবল শোকের দিন নয়, এটি ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের চিরন্তন প্রেরণা।

 

তিনি বলেন, “আশুরা হলো ইসলাম ধর্মের একটি স্মরণীয় দিন। হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.), তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের শাহাদাত বরণের স্মরণে ১০ মহররম ইতিহাসে এক মর্মস্পর্শী ও বেদনাদায়ক দিন। দিবসটি আজও আমাদেরকে গভীর দুঃখ ও বেদনায় ভারাক্রান্ত করে তোলে। আবার এ দিনটি সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে মজলুমের স্পষ্ট প্রতিবাদের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। অসত্য, জুলুম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে মরণপণ সংগ্রামের মাধ্যমে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার বার্তা দেয়। মানবিক সাম্য ও মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কারবালায় হযরত ইমাম হোসেন (রা.)-এর নিজ পরিবার, ঘনিষ্ঠজন ও অনুচরবৃন্দ জালিমের হাতে শহীদ হন। তাই শহীদে কারবালার মূল বার্তা হচ্ছে—নিপীড়িতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ।”

 

আওয়ামী নেতাদের পৈশাচিক দমন-পীড়নকে ইয়াজিদ বাহিনীর সমতুল্য করে বলেন, পতিত আওয়ামী স্বৈরাচার সারাদেশকেই কারবালার প্রান্তরে পরিণত করেছিল। জুলুম, হিংস্রতা ও রক্তপাতের এক দুঃসহ দুঃশাসনের মধ্যে জীবন কাটাতে হয়েছে এ দেশের মানুষকে। গত দেড় দশক ধরে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশ থেকে অদৃশ্য করা হয়েছিল। গণতন্ত্রকামী মানুষের স্থায়ী ঠিকানা ছিল কারাগারে। বিপুল জনপ্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। বিদেশে তাঁর সুচিকিৎসার আবেদনকে অগ্রাহ্য করে তাঁকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেওয়া হয়।

 

তিনি আরও বলেন, কারবালার প্রান্তরে ইমাম বাহিনীর মহিমান্বিত আত্মত্যাগের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আওয়ামী স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ ও রাজনৈতিক দলের সংগ্রামী নেতাকর্মীরা ৫ আগস্ট দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করে।

 

আশুরা ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি করে উল্লেখ করে তিনি বলেন , আশুরা ত্যাগ, নৈতিকতা ও অন্যায়কে প্রতিহত করার শিক্ষা দেয় এবং নিপীড়িতদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সংহতি জাগিয়ে তোলে। ব্যক্তিগত কোনো অভিলাষ নয়, বরং অবিচার, জবরদস্তি, মিথ্যা অহংকার ও আত্মসম্মানহীন নিপীড়কের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করাই ১০ মহররমের মূল বাণী। ইমাম হোসেন (রা.)-এর আত্মত্যাগের এই ঘটনা সারা দুনিয়ার সকল মজলুমকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে শতাব্দীর পর শতাব্দী প্রেরণা যুগিয়ে চলেছে।

 

ইমাম হোসেন (রা.)-এর প্রতি ও তাঁর পরিবার এবং কারবালার শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বানী শেষ করেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com