আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করার সবুজ সংকেত দেননি শেখ হাসিনা

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : জনঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনো সবুজ সংকেত দেননি। বলেননি কীভাবে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করা হবে। তাই আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনের আওয়াজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। বলাবলি ছিল আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনে সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবের হোসেন চৌধুরীকে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। দুজনেরই রয়েছে অপেক্ষাকৃত ক্লিন ইমেজ। আওয়ামী লীগ যেখানে নাই হয়ে গেছে সেখানে তারা আছেন, ভালো আছেন। শিরীন শারমিন নিজেই পদত্যাগ করে নিরাপদ ঠিকানায় রয়েছেন। সাবের চৌধুরী স্বল্পদিন জেলে ছিলেন। দেশি-বিদেশি নানামুখী চাপের কারণে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। যাইহোক, পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। আওয়ামী লীগের কোনো শাখাই সচল নয়। বোমায় নয়, শব্দেই অদৃশ্য হয়ে গেছে। একদা আওয়ামী লীগ নামে একটা রাজনৈতিক দল ছিল তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা হতে পারে। বিগত সাত মাসে নানা ষড়যন্ত্রের মধ্যে আওয়ামী লীগের নাম এসেছে। কিন্তু বাস্তবে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শেখ হাসিনা পালিয়ে এখন ভারতে। তার দলের বেশির ভাগ নেতা হয় পলাতক, নাহয় বিদেশে। বাতি জ্বালানোর মতো কেউ নেই।

 

৩২ নম্বর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হলো। একজন নেতা বা সমর্থকের দেখা মেলেনি আশপাশে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তারা অনুপস্থিত। এর কারণ কী? দল আর সরকার এক হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গে দলেরও পতন হয়ে গেছে। সরকার ও দল দুটিই সমানভাবে দুর্নীতি আর লুটের মধ্যেই ছিল। নৈতিকভাবে মনোবল হারিয়ে ফেলেছিল। যে কারণে কোথাও কোনো আওয়াজ ছিল না। ইতিহাসবিদরা হয়তো ভবিষ্যতে এ নিয়ে গবেষণা করবেন। আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে বারবার একই ঘটনা ঘটেছে। কারণ ক্ষমতায় এসেই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের জন্য দেশটাকে নিজেদের মনে করে ঘুঁটি সাজিয়েছিল। ‘৭৫ সনের পট পরিবর্তনের পর একই ঘটনা ঘটেছিল। দলের দায়িত্ব নেয়ার মতো কেউই ছিলেন না। তখন অবশ্য সব নেতা নাই হয়ে যাননি। বেগম জোহরা তাজউদ্দিন না থাকলে কী যে হতো ! শেখ হাসিনা ভারত থেকে ফিরে সেই জোহরা তাজউদ্দিনের বিদায় নিশ্চিত করেছিলেন। ইডেন গার্ডেনের সেই সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে দায়িত্ব দেয়ার যারা বিরোধিতা করেছিলেন তারা পরবর্তীতে চড়া মূল্য দিয়েছেন। ড. কামাল হোসেন শেখ হাসিনাকে দিল্লি থেকে নিয়ে আসার অন্যতম কারিগর হলেও মূল্যটা ঠিকই দিয়েছেন।

 

ওয়ান-ইলেভেনের পর আওয়ামী লীগ সংকটে পড়েছিল, কিন্তু হাল ধরেন জিল্লুর রহমান। শেখ হাসিনা একাধিক দুর্নীতি মামলায় তখন জেলে ছিলেন। দেশি-বিদেশি নানা খেলায় সোজা ক্ষমতার মসনদে পৌঁছে যাওয়ার গল্প সবার জানা। বাংলাদেশি রাজনীতির জন্য এটা ছিল এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। ষড়যন্ত্রের পথে না হাঁটলে হয়তো শেখ হাসিনার ভাগ্যে এমনটা ঘটতো না। বঙ্গবন্ধুর পরিণতিই-বা এমন হবে কেন? তর্কের খাতিরে যদি বলা হয়, হাসিনা দল পুনর্গঠনের দায়িত্ব কারো কাছে দিতে রাজি হয়ে গেলেন তাহলে কী ঘটবে? পরিবারের বাইরে যাওয়ার চিন্তা কি তিনি করতে পারবেন? তার কাছে আগে পরিবার, তারপর দেশ- তেমনটাই দেখা গেল ৫ই আগস্ট।

 

তিনি বিমানে চড়লেন। এর আগে নিশ্চিত করলেন তার সব আত্মীয়স্বজন দেশ ছাড়তে পেরেছেন কিনা। ঠিকই তার কোনো আত্মীয়স্বজন গ্রেপ্তার হলেন না। ৫ তারিখের আগেই তাদেরকে দেশ ছাড়তে বলা হয়েছিল। পরিবারের মধ্যে তিনি কাকে দায়িত্ব দেবেন। সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল নাকি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। এসবই এখন জল্পনা-কল্পনার মধ্যে। আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন করতে ভারতেরও একটা হিস্যার ব্যাপার আছে।

 

মামলা-মোকদ্দমায় হাসিনা বিপর্যস্ত। তার বিরুদ্ধে শত শত মানুষ হত্যা, গুম, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ। তাছাড়া পারিপার্শ্বিক অবস্থাও তার অনূকূলে নয়। কোনো জাদুমন্ত্র এবং নিখুঁত ষড়যন্ত্র ছাড়া তার ভাগ্যে কী ঘটবে তা কেউই জানেন না।  সূএ: বার্তা বাজার ডটকম

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বৈঠকে বসছেন ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মো‌দী

» গাজায় এক মাস ধরে বন্ধ ত্রাণ প্রবেশ, দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা

» ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন : প্রেস সচিব

» ইসলামপুরে ঈদ মেলার নামে জুয়া অশ্লীল নৃত্য যৌথ বাহিনীর অভিযানে নারী সহ আটক ৩৮

» ইসলামপুরে ঈদ পূর্ণমিলনী এসএনসি আদর্শ কলেজের পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও আলোচনা সভা

» কালীগঞ্জে ৯৮’র ব্যাচের উদ্যোগে প্রীতি ফুটবল অনুষ্ঠিত 

» দেশনায়ক তারেক রহমানের ঈদের শুভেচ্ছা নিয়ে “রাজবন্দির জবানবন্দি” এর লেখক, ব্লগার মরহুম আরজান ইভান এর বাসায় পরিবারবর্গের সাথে

» বাংলাদেশ নিয়ে বর্তমানে একটা গভীর চক্রান্ত চলছে : শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

» লন্ডনে মা খালেদা জিয়াকে নিয়ে পার্কে ঘুরলেন তারেক

» বিশ্বকাপ নিশ্চিতে যে পরিকল্পনা সাজিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করার সবুজ সংকেত দেননি শেখ হাসিনা

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : জনঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনো সবুজ সংকেত দেননি। বলেননি কীভাবে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করা হবে। তাই আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনের আওয়াজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। বলাবলি ছিল আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনে সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবের হোসেন চৌধুরীকে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। দুজনেরই রয়েছে অপেক্ষাকৃত ক্লিন ইমেজ। আওয়ামী লীগ যেখানে নাই হয়ে গেছে সেখানে তারা আছেন, ভালো আছেন। শিরীন শারমিন নিজেই পদত্যাগ করে নিরাপদ ঠিকানায় রয়েছেন। সাবের চৌধুরী স্বল্পদিন জেলে ছিলেন। দেশি-বিদেশি নানামুখী চাপের কারণে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। যাইহোক, পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। আওয়ামী লীগের কোনো শাখাই সচল নয়। বোমায় নয়, শব্দেই অদৃশ্য হয়ে গেছে। একদা আওয়ামী লীগ নামে একটা রাজনৈতিক দল ছিল তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা হতে পারে। বিগত সাত মাসে নানা ষড়যন্ত্রের মধ্যে আওয়ামী লীগের নাম এসেছে। কিন্তু বাস্তবে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শেখ হাসিনা পালিয়ে এখন ভারতে। তার দলের বেশির ভাগ নেতা হয় পলাতক, নাহয় বিদেশে। বাতি জ্বালানোর মতো কেউ নেই।

 

৩২ নম্বর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হলো। একজন নেতা বা সমর্থকের দেখা মেলেনি আশপাশে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তারা অনুপস্থিত। এর কারণ কী? দল আর সরকার এক হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গে দলেরও পতন হয়ে গেছে। সরকার ও দল দুটিই সমানভাবে দুর্নীতি আর লুটের মধ্যেই ছিল। নৈতিকভাবে মনোবল হারিয়ে ফেলেছিল। যে কারণে কোথাও কোনো আওয়াজ ছিল না। ইতিহাসবিদরা হয়তো ভবিষ্যতে এ নিয়ে গবেষণা করবেন। আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে বারবার একই ঘটনা ঘটেছে। কারণ ক্ষমতায় এসেই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের জন্য দেশটাকে নিজেদের মনে করে ঘুঁটি সাজিয়েছিল। ‘৭৫ সনের পট পরিবর্তনের পর একই ঘটনা ঘটেছিল। দলের দায়িত্ব নেয়ার মতো কেউই ছিলেন না। তখন অবশ্য সব নেতা নাই হয়ে যাননি। বেগম জোহরা তাজউদ্দিন না থাকলে কী যে হতো ! শেখ হাসিনা ভারত থেকে ফিরে সেই জোহরা তাজউদ্দিনের বিদায় নিশ্চিত করেছিলেন। ইডেন গার্ডেনের সেই সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে দায়িত্ব দেয়ার যারা বিরোধিতা করেছিলেন তারা পরবর্তীতে চড়া মূল্য দিয়েছেন। ড. কামাল হোসেন শেখ হাসিনাকে দিল্লি থেকে নিয়ে আসার অন্যতম কারিগর হলেও মূল্যটা ঠিকই দিয়েছেন।

 

ওয়ান-ইলেভেনের পর আওয়ামী লীগ সংকটে পড়েছিল, কিন্তু হাল ধরেন জিল্লুর রহমান। শেখ হাসিনা একাধিক দুর্নীতি মামলায় তখন জেলে ছিলেন। দেশি-বিদেশি নানা খেলায় সোজা ক্ষমতার মসনদে পৌঁছে যাওয়ার গল্প সবার জানা। বাংলাদেশি রাজনীতির জন্য এটা ছিল এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। ষড়যন্ত্রের পথে না হাঁটলে হয়তো শেখ হাসিনার ভাগ্যে এমনটা ঘটতো না। বঙ্গবন্ধুর পরিণতিই-বা এমন হবে কেন? তর্কের খাতিরে যদি বলা হয়, হাসিনা দল পুনর্গঠনের দায়িত্ব কারো কাছে দিতে রাজি হয়ে গেলেন তাহলে কী ঘটবে? পরিবারের বাইরে যাওয়ার চিন্তা কি তিনি করতে পারবেন? তার কাছে আগে পরিবার, তারপর দেশ- তেমনটাই দেখা গেল ৫ই আগস্ট।

 

তিনি বিমানে চড়লেন। এর আগে নিশ্চিত করলেন তার সব আত্মীয়স্বজন দেশ ছাড়তে পেরেছেন কিনা। ঠিকই তার কোনো আত্মীয়স্বজন গ্রেপ্তার হলেন না। ৫ তারিখের আগেই তাদেরকে দেশ ছাড়তে বলা হয়েছিল। পরিবারের মধ্যে তিনি কাকে দায়িত্ব দেবেন। সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল নাকি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। এসবই এখন জল্পনা-কল্পনার মধ্যে। আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন করতে ভারতেরও একটা হিস্যার ব্যাপার আছে।

 

মামলা-মোকদ্দমায় হাসিনা বিপর্যস্ত। তার বিরুদ্ধে শত শত মানুষ হত্যা, গুম, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ। তাছাড়া পারিপার্শ্বিক অবস্থাও তার অনূকূলে নয়। কোনো জাদুমন্ত্র এবং নিখুঁত ষড়যন্ত্র ছাড়া তার ভাগ্যে কী ঘটবে তা কেউই জানেন না।  সূএ: বার্তা বাজার ডটকম

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com