ছবি সংগৃহীত
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডবের মাধ্যমে বাংলাদেশে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সূচনা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম। এ সময় কোনোভাবেই ভারতীয় আগ্রাসনের পক্ষের শক্তি যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে সে জন্য ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ২৮ অক্টোবরের নিহতদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা এবং দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
ঐক্যের উপর জোর দিয়ে আবদুস সালাম বলেন, কোনোভাবেই ভরতীয় আগ্রাসনের পক্ষের শক্তি ১৪ দলীয় জোট যেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসন হতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের ঐক্য থাকতে হবে। নিজের ঘরের মধ্যে কিছু যদি থাকে আমরা আলোচনা করবো। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবো কিন্তু শত্রুর হাতে যেন ক্ষমতা না দেই। তারা উৎপেতে বসে আছে। এখনও মাঝে-মধ্যে উঁকিঝুঁকি দেয়, আবার বলে আসছি। আমি বলবো আসার দরকার নাই। মোদী সাহেবকে বলবো, মাঝেমধ্যে অমিত শাহ বলে ‘পুশিং করবে’, শেখ হাসিনাকে একটু পুশিং করেন। বাংলাদেশে পাঠান যেন আমরা তাকে আইনের আওতায় আনতে পারি।
তিনি আরও বলেন, লগি-বৈঠার মাধ্যমে যে হত্যা করা হয়েছে, তার হুকুমদাতা শেখ হাসিনা। টেলিভিশনের বিভিন্ন রেকর্ড যদি দেখি তাহলেই আমরা তার প্রমাণ পাবো। এমন বহুবার আছে তিনি মানুষ মারার নির্দেশ দিয়েছেন। এমন একটা ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশে যেন আর ফিরে আসতে না পারে সেটার জন্য ঐক্য দরকার। পাশাপাশি রাজনীতির বাইরে যে রাষ্ট্রীয় শক্তি রয়েছেন তাদেরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
মঈন ইউ আহমেদের সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বলেন, তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ, লগি-বৈঠার কথা উল্লেখ করে বই লিখেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, এমন ঘটনা বিশ্বে কখনও ঘটতে পারে না, এটা অমানবিক। অথচ তিনি সেই অমানবিক শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের হাতেই ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছিলেন। এই হত্যা বিচার হয়নি, কিন্তু আল্লাহ বিচার করেছেন।
নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে আবদুস সালাম বলেন, জেলে ড. মাসুদের সাথে যখন আমার দেখা হয়, তখন তাকে বলেছিলাম, আল্লাহ তোমাকে বাঁচাইছে। তোমার ওপর যে অত্যাচার করা হয়েছে, তোমার তো বাঁচার কথা না। দেলোয়ারের (সাবেক শিবির সভাপতি) সাথে দুইবার জেলে দেখা হয়েছে। আমি জেল থেকে বের হয়ে এসেছি। কিন্তু সে বের হতে পারেনি। প্রথমবার যখন আমার সাথে দেখা হয়েছে তখন সে একদম বেডে শোয়া। পরেরবার হুইল চেয়ারে। এমন অসংখ্য ঘটনা আছে। এই স্মৃতিগুলো মনে রাখতে হবে। আমরা ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমকে খুঁজে পাইনি। তাদের রক্তের সাথে যেন আমরা বেঈমানী না করি। আমাদের এক থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদ যেন আর ফিরে আসতে না পারে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সবাই নির্বাচন চাই, কেউ হয়তো আগে বা পরে। কিন্তু আমাদের অবস্থান। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচনে যেই জিতুক, আন্দোলনকারী সকল শক্তিকে নিয়েই আমরা সরকার গঠন করবো। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে। সেই দেশকে গড়ে তুলতে নির্বাচনের আগে ও পরে ঐক্য রাখতে হবে। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে।
এ সময় তিনি মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারের মুক্তি দাবি করেন। সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম