ছবি সংগৃহীত
ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান : ১. অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস এমন একটি রোগ যা হাড়ের স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে রক্ত সরবরাহ বন্ধের ফলে হয়। রক্ত সরবরাহ বন্ধ হলে হাড়ের টিস্যু মারা যায় এবং হাড় ভেঙে যায়। যখন কোন জয়েন্ট যেমন হিপ জয়েন্ট এর কাছাকাছি হয় তখন জয়েন্টের পৃষ্ঠটি ভেঙে যেতে পারে। এই অবস্থা যেকো হাড়ে হতে পারে এটি সাধারণত লম্বা হাড়ের শেষ মাথায় হয়। সাধারণত ১টি হাড়, একই সময়ে অনেক হাড় অথবা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হাড়কে ক্ষয়গ্রস্থ করে।
২. কোথায় কোথায় নেক্রোসিস হতে পারেঃ গোড়ালি
চোয়ালে
হাটুতে
হাতের হিউমেরাস ও কাধের জয়েন্টে
পায়ের ফিমার ও হিপ জয়েন্টে
৩. অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের কারণঃ
কোন কারণে জয়েন্টে আঘাত পেলে
জয়েন্ট ভেঙে গেলে
কোনো কারনে রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্থ হলে
দীর্ঘদিন ধরে কর্টিকোস্টেরয়েড ঔষুধ সেবন করলে
দীর্ঘদিন ধরে এবং অতিরিক্ত মদ্য পান করলে
দীর্ঘদিন ধরে কোন রোগে আক্রান্ত হলে যেমনঃ ডায়াবেটিস
রক্তে কোন রোগ থাকলে। সিকেল সেল অ্যানিমিয়া লিউকেমিয়া
রেডিয়েশনের বা কেমোথেরাপি কারণে
এইচআইভি / এইডস রোগের জন্য ।
অটো ইমিউন রোগের জন্য
হাইপার লিপিডেমিয়ার কারণে
হাইপার কোয়াগুলেবেল অবস্থায় থাকলে
প্যানক্রিয়াটাইটিস, গাউচার রোগ, সিস্টেমেটিক লুপাস ইরাইথিম্যাটাস রোগ থাকলে
কোন অঙ্গ প্রতঙ্গ প্রতিস্থাপন করলে
জয়েন্ট ডিসলোকেশন
৪. রোগের লক্ষণঃ
হাঁটাচলা করার সময় ব্যাথা লাগা
পায়ে টান লাগা
সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় ব্যথা অনুভব করা
দাঁড়ানোর সময় ব্যথা অনুভব করা
হাটু ভেঙে বসতে না পারা
আক্রান্ত অঙ্গ ছোট হয়ে যাওয়া
কুচকিতে উরুতে, নিতম্বে ব্যথা হওয়া
বিশ্রাম নেওয়ার সময় ব্যথা অনুভব হওয়া
ক্রস পায়ে বসতে না পারা
৫.রোগ নির্ণয়ঃ
এক্স-রে
এমআরআই
সিটি স্ক্যান
হাড়ের স্ক্যান
বাইওপসি
হাড়ের কার্যকারিতা পরীক্ষা
৬. চিকিৎসাঃ
এ রোগের চিকিৎসা কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমনঃ বয়স,রোগের পর্যায়, হাড়ের ক্ষতির পরিমান।
নন সার্জিক্যাল চিকিৎসাঃ
আক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা বা গরম সেঁক, কিছু ননস্টেরয়েডাল এন্টি ইনফ্লামেটরি ঔষধ, ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন এবং বিশ্রাম কার্যকর।
সার্জিক্যাল চিকিৎসাঃ
কোর ডি কম্প্রেশন ( Core Decompression)
হাড় গ্রাফটিং (Bone Grafting)
অস্টিওটমি (Osteotomy)
সম্পূর্ণ হিপ জয়েন্ট প্রতিস্থাপন (Total Hip Joint Replacement)
৭. জটিলতাঃ
চিকিৎসা করা না হলে, এই রোগ ধীরে ধীরে খারাপ রূপ ধারণ করে, অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের ফলে হাড়ের মসৃণ আকৃতি নষ্ট হয় ফলে আর্থ্রাইটিস হতে পারে। ব্যথা বা অন্য কোন লক্ষণ প্রকাশ পেলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।
লেখক: ফিজিওথেরাপি, ডিজএবিলিটিস ও রিহেবিলিটেশন স্পেশালিস্ট, সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস) ও কনসালটেন্ট ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা। সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন