সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক :বাংলাদেশে ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেছেন, একটি অশুভ চক্রের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন পেছানোর অপচেষ্টা ‘জুলাই স্পিরিট’-এর সঙ্গে সুস্পষ্ট প্রতারণা। আজ সোমবার (২ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজ ভ্যারিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পাঠকদের জন্য এস এম ফরহাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল:
একটি অশুভ চক্রের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে ডাকসু পেছানোর অপচেষ্টা ‘জুলাই স্পিরিট’-এর সঙ্গে সুস্পষ্ট প্রতারণা।
অশুভ চক্রের পেশিশক্তি ও দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি ফিরিয়ে আনার প্রকল্পে যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহযোগিতা করে, তাহলে এই প্রশাসনের বিরুদ্ধেও শিক্ষার্থীরা আরেকটি ‘জুলাই’ নামাবে—ইনশাআল্লাহ।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে আসন্ন ঈদের আগে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের দাবির মুখেও কমিশন গঠনের কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। এদিকে, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডাকসু নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে তিনজন শিক্ষককে নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রত্যাশা ও আগ্রহকে সম্মান জানিয়ে ডাকসু নির্বাচনের আয়োজনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ এপ্রিল একটি টাইমলাইন প্রকাশ করা হয়। এই টাইমলাইন অনুসারে নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে এবং ৪র্থ ধাপ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
৪র্থ ধাপের ফলাফল পর্যালোচনার ভিত্তিতে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে প্রথম দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ১৩ মে। ঈদের ছুটির পর পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। ৬ষ্ঠ ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা এখনও চলমান রয়েছে। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় সাময়িকভাবে বৈঠকে স্থবিরতা দেখা দিলেও নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজ যথারীতি এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতজন শিক্ষকের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে এবং তাদের মধ্য থেকে তিনজনকে নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
তারা হলেন- উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঈদের ছুটি ও সম্ভাব্য শিক্ষকদের কেউ কেউ ছুটিতে থাকায় কিছুটা বিলম্ব হলেও ঈদের পর তাদের সম্মতি গ্রহণপূর্বক সিন্ডিকেট সভায় প্রস্তাবিত নামগুলো অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। সিন্ডিকেটে অনুমোদনের পর নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে এবং নির্বাচন কার্যক্রমের পরবর্তী ধাপগুলো শুরু হবে।
এর আগে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। ছয়টি সভার মাধ্যমে সংশোধিত গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করে ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছে পাঠানো হয় এবং সেটি সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়।
এদিকে গেল জানুয়ারিতে ‘ডাকসু ইলেকশন কোড অব কনডাক্ট রিভিউ কমিটি’ গঠিত হয়। কমিটি ইতোমধ্যে সাতটি সভা করে আচরণবিধির খসড়া চূড়ান্ত করেছে। যা সিন্ডিকেটও অনুমোদন পেয়েছে।
প্রশাসন বলছে, নির্বাচনকে আরও গ্রহণযোগ্য করতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত পরামর্শক কমিটি নয়টি মতবিনিময় সভা করেছে এবং তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা সকল অংশীজনের সহযোগিতায় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এদিকে, ১৩ মে দিবাগত রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তা নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে বলে জানানো হয়। এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে ঈদের দিন উপাচার্যের বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।