অবৈধ যানের দাপট চট্টগ্রামে

বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম নগরীর সড়ক পথে ধারণক্ষমতার চেয়ে চলছে বেশি যানবাহন। এসব যানবাহনে নেই রুট পারমিট, নেই বৈধ কাগজপত্র। তারপরও মাসোহারা দিয়ে চলছে এগুলো। অনিয়ন্ত্রিত যানবাহনের কারণে নগরীতে যানজট যেমন আছে, তেমনিভাবে আছে  দুর্ঘটনার বিপদ।

 

নগরীর হিউম্যান হলার চলাচল করার ১৬ নম্বর রুট হচ্ছে সাগরিকা স্টেডিয়াম থেকে অলংকার, পাহাড়তলী থানা মোড়, আমবাগান, টাইগারপাস, নিউমার্কেট, কোতোয়ালি মোড়, ফিরিঙ্গীবাজার ও ব্রিজঘাট পর্যন্ত এ রুটে গাড়ির নির্ধারিত সিলিং রয়েছে ৪৫টি। এ রুটে সিলিং খালি না থাকলেও এরই মধ্যে সিলিং তথা রুট পারমিট নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন ১৪৩টি হিউম্যান হলার। তবে বাস্তব চিত্র আর বিআরটিএ জরিপের সঙ্গে রয়েছে বিস্তর ফারাক। এ রুটে নতুন করে ১৪৩ গাড়ি আবেদন করলেও বাস্তবে দুই শতাধিকের ওপরে যানবাহন চলাচল করছে।

 

তবে চট্টগ্রাম সিটি সড়ক পরিবহন মালিক ফেডারেশনের মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুল দাবি করে বলেন, ‘আমাদের এখন গাড়ি রয়েছে প্রায় ৬৫০টির মতো। নতুন করে আবেদন করেছে প্রায় ৫০০। আগে আমাদের ১২০০-এর বেশি গাড়ি থাকলেও ২০-১৫ বছরের পুরনো অনেক গাড়ি এখন নেই। যার কারণে কমে আসছে। এ ছাড়াও নতুন করে জরিপ করেছে বিআরটিএ, তা এখনো হাতে আসেনি।’

 

বিআরটিএ চট্টগ্রামের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান বলেন, ‘আসলে অবৈধ গাড়ি সংখ্যা কত তা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। কারণ অনেকে গাড়ি নিয়ে তা সরাসরি রুটে ছেড়ে দেন। এক্ষেত্রে আমাদের কাছে আসে না। তবে আমাদের তিনটি ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে, ফিটনেসবিহীন, রুট পারমিট না থাকাসহ নানা কারণে জরিমানা আদায় করি। প্রতিমাসে গড়ে আমরা ১৫ লাখ টাকার মতো রাজস্ব আদায় করি।

 

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রাম নগরীতে চলাচল করা হিউমান হলারের রুট রয়েছে মোট ১৮টি। ১৮টি রুটের নির্ধারিত সিলিং রয়েছে ১৪৫৬টি। এ রুটে ২০৪টি সিলিং খালি থাকলেও নতুন করে সিলিং পাওয়ার জন্য আবেদন করেছে ৪৮৯টি। তবে আবেদন না করলেও  অনেক যানবাহন নির্ধারিত রুটের বাইরে চলছে। আবার অনেক যানবাহনের রুট পারমিট থাকলেও নেই মেয়াদ। চট্টগ্রাম নগরে বাস মিনিবাসের রুট রয়েছে ১৫টি। এর মধ্যে ইপিজেড এলাকার স্টাফ বাস সার্ভিসসহ ১৬টি রুট রয়েছে। এসব রুটের নির্ধারিত সিলিং রয়েছে ১ হাজার ৫৪৫টি। নির্ধারিত সিলিং থেকে খালি রয়েছে ৩৭০টি, তবে সিলিংয়ের জন্য আবেদন ১৮৭টি। অপরদিকে মেট্রো এলাকায় অটোটেম্পোর রুট রয়েছে ২১টি। এসব রুটে নির্ধারিত সিলিং আছে ২ হাজার ৩৯৭টি। এর মধ্যে খালি আছে ২৮০টি, তবে নতুন করে আবেদন করেছে ৩৭৫টি অটোটেম্পো।

 

কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী, বাস্তবে এর চেয়ে বেশি অটোটেম্পো মাহিন্দ্রা চলাচল করছে অবৈধভাবে। ট্রাফিক পুলিশ অভিযান চালিয়ে কাগজপত্র দেখলে সে সময়ে নানা বাহানা আর অজুহাতে পার পেয়ে যায় তারা। এমনও অভিযোগ রয়েছে, ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল থেকে টিআইদের পর্যন্ত রয়েছে নানা যানবাহন। পাশাপাশি ‘সাংবাদিক’ পরিচয় দিয়েও চলছে অবৈধ অনেক টেম্পো। যার বেশিরভাগই অবৈধভাবে চলাচল করছে। ট্রাফিক পুলিশে কাজ করার সুবিধার্তে কাগজপত্রহীন বা রুট পারমিট ছাড়া যানবাহন নিজেরা ক্রয় করে তা সতীর্থদের সহায়তায় চলাচল করছে। আবার অনেক টেম্পো চলছে পুলিশকে টাকা দিয়ে।

সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জুলাই ঘোষণাপত্রে আকাঙ্ক্ষার পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি: শিবির সভাপতি

» আশিয়ান দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক আগামী দিনে আরও সুদৃঢ় হবে : ফারুকী

» বিশেষ অভিযানে গাঁজাসহ যুবক গ্রেফতার

» সরকার জনগণের দাবি ও আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছে: রিজভী

» রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে সুমাইয়ার ভূ‌মিকা খতিয়ে দেখবে পুলিশ

» ১৬টি প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়েছে, ৮৫টি করা হচ্ছে

» পরিত্যক্ত অবস্থায় সোয়া ৮ কেজি সোনা উদ্ধার

» দক্ষিণ বা উত্তরপন্থী নয়, বিএনপি মধ্যপন্থী দল: সালাহউদ্দিন আহমদ

» ১০ বছরের সাজা থেকে খালাস পেলেন বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা জি কে শামীম

» শাহাবুদ্দিনের চেয়ে ভালো নির্বাচন না হলে তা ড. ইউনূসের ব্যর্থতা হবে: ফারুক

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

অবৈধ যানের দাপট চট্টগ্রামে

বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম নগরীর সড়ক পথে ধারণক্ষমতার চেয়ে চলছে বেশি যানবাহন। এসব যানবাহনে নেই রুট পারমিট, নেই বৈধ কাগজপত্র। তারপরও মাসোহারা দিয়ে চলছে এগুলো। অনিয়ন্ত্রিত যানবাহনের কারণে নগরীতে যানজট যেমন আছে, তেমনিভাবে আছে  দুর্ঘটনার বিপদ।

 

নগরীর হিউম্যান হলার চলাচল করার ১৬ নম্বর রুট হচ্ছে সাগরিকা স্টেডিয়াম থেকে অলংকার, পাহাড়তলী থানা মোড়, আমবাগান, টাইগারপাস, নিউমার্কেট, কোতোয়ালি মোড়, ফিরিঙ্গীবাজার ও ব্রিজঘাট পর্যন্ত এ রুটে গাড়ির নির্ধারিত সিলিং রয়েছে ৪৫টি। এ রুটে সিলিং খালি না থাকলেও এরই মধ্যে সিলিং তথা রুট পারমিট নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন ১৪৩টি হিউম্যান হলার। তবে বাস্তব চিত্র আর বিআরটিএ জরিপের সঙ্গে রয়েছে বিস্তর ফারাক। এ রুটে নতুন করে ১৪৩ গাড়ি আবেদন করলেও বাস্তবে দুই শতাধিকের ওপরে যানবাহন চলাচল করছে।

 

তবে চট্টগ্রাম সিটি সড়ক পরিবহন মালিক ফেডারেশনের মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুল দাবি করে বলেন, ‘আমাদের এখন গাড়ি রয়েছে প্রায় ৬৫০টির মতো। নতুন করে আবেদন করেছে প্রায় ৫০০। আগে আমাদের ১২০০-এর বেশি গাড়ি থাকলেও ২০-১৫ বছরের পুরনো অনেক গাড়ি এখন নেই। যার কারণে কমে আসছে। এ ছাড়াও নতুন করে জরিপ করেছে বিআরটিএ, তা এখনো হাতে আসেনি।’

 

বিআরটিএ চট্টগ্রামের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান বলেন, ‘আসলে অবৈধ গাড়ি সংখ্যা কত তা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। কারণ অনেকে গাড়ি নিয়ে তা সরাসরি রুটে ছেড়ে দেন। এক্ষেত্রে আমাদের কাছে আসে না। তবে আমাদের তিনটি ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে, ফিটনেসবিহীন, রুট পারমিট না থাকাসহ নানা কারণে জরিমানা আদায় করি। প্রতিমাসে গড়ে আমরা ১৫ লাখ টাকার মতো রাজস্ব আদায় করি।

 

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রাম নগরীতে চলাচল করা হিউমান হলারের রুট রয়েছে মোট ১৮টি। ১৮টি রুটের নির্ধারিত সিলিং রয়েছে ১৪৫৬টি। এ রুটে ২০৪টি সিলিং খালি থাকলেও নতুন করে সিলিং পাওয়ার জন্য আবেদন করেছে ৪৮৯টি। তবে আবেদন না করলেও  অনেক যানবাহন নির্ধারিত রুটের বাইরে চলছে। আবার অনেক যানবাহনের রুট পারমিট থাকলেও নেই মেয়াদ। চট্টগ্রাম নগরে বাস মিনিবাসের রুট রয়েছে ১৫টি। এর মধ্যে ইপিজেড এলাকার স্টাফ বাস সার্ভিসসহ ১৬টি রুট রয়েছে। এসব রুটের নির্ধারিত সিলিং রয়েছে ১ হাজার ৫৪৫টি। নির্ধারিত সিলিং থেকে খালি রয়েছে ৩৭০টি, তবে সিলিংয়ের জন্য আবেদন ১৮৭টি। অপরদিকে মেট্রো এলাকায় অটোটেম্পোর রুট রয়েছে ২১টি। এসব রুটে নির্ধারিত সিলিং আছে ২ হাজার ৩৯৭টি। এর মধ্যে খালি আছে ২৮০টি, তবে নতুন করে আবেদন করেছে ৩৭৫টি অটোটেম্পো।

 

কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী, বাস্তবে এর চেয়ে বেশি অটোটেম্পো মাহিন্দ্রা চলাচল করছে অবৈধভাবে। ট্রাফিক পুলিশ অভিযান চালিয়ে কাগজপত্র দেখলে সে সময়ে নানা বাহানা আর অজুহাতে পার পেয়ে যায় তারা। এমনও অভিযোগ রয়েছে, ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল থেকে টিআইদের পর্যন্ত রয়েছে নানা যানবাহন। পাশাপাশি ‘সাংবাদিক’ পরিচয় দিয়েও চলছে অবৈধ অনেক টেম্পো। যার বেশিরভাগই অবৈধভাবে চলাচল করছে। ট্রাফিক পুলিশে কাজ করার সুবিধার্তে কাগজপত্রহীন বা রুট পারমিট ছাড়া যানবাহন নিজেরা ক্রয় করে তা সতীর্থদের সহায়তায় চলাচল করছে। আবার অনেক টেম্পো চলছে পুলিশকে টাকা দিয়ে।

সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com