অন্তে অনন্ত পথে

মুহাম্মদ মনিরুল হক: চায়ে চুমুক দিয়েই থু করে ফেলে দিয়ে বিরক্তমুখে হাফিজ বলল, ধুর এটা কি বানাইলা!
রশিদ মিয়া অনুনয় করে বলল, কি লাগবো?
হাফিজ বিরক্ত চোখে তাকিয়ে বলল, কি লাগবো আমারে জিগাও ক্যান? কি লাগবো জানলেতো চায়ের দোকান দিতাম।

 

বেঞ্চের উপর চায়ের কাপ রেখেই হাফিজ চলে যাচ্ছিল। রশিদ মিয়া পিছন থেকে বলল, অ্যা চায়ের দোকান দিবে। বিয়া করা বউ রাখতে পারলি না, তুই দিবি চায়ের দোকান। দোকান চালানি মুখের কথা না যে কাপে গরম পানি ঢাললাম আর নাড়া দিলাম। চা বানাইতে তাগদ লাগে।

বউয়ের কথাটা হাফিজের কানে খুব করে লাগলো। রশিদ ভাইতো কাউকে আঘাত দিয়ে কথা বলার মানুষ না। রশিদ ভাইও এভাবে কথা বলতে পারলো! অন্য বিষয় হলে হাফিজ তেড়ে যেতো। রাগ নিয়ে অভিমান করে চলে আসার ছেলে হাফিজ না। শুধু নিজের জন্য না অন্য মানুষের বিষয় নিয়ে যে হাফিজ কতজনের সাথে ঝামেলায় জড়িয়েছে তার হিসাব নেই।

 

কিন্তু এই বিষয়টা নিয়ে কেউ কিছু বললেই যেনো সে কেমন দমে যায়। ব্যাপারটা হাফিজও খেয়াল করেছে। এই বিষয়ে তর্ক করতে গেলেই সে হেরে যায়। তাছাড়া তর্কটা সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্য নিজের পক্ষে খুব বেশি কথাও খুঁজে পায় না সে।

 

একদিনের জন্য মেয়েটা তার জীবনে এসে কি একটা পরিস্থিতিতে ফেলে গেলো। প্রথম দিকে মেয়েটার কথা মনে হতেই রাগ হতো। এখন কেমন যেনো নিজেকে বড় অসহায় মনে হয়। মনের মাঝে জেগে উঠা রাগ কারও কাছে প্রকাশ করতে না পারাটাই যেনো নিজেকে অসহায় করে তুলছে।

 

কেনো মেয়েটা এমন করলো। এমন করে যদি চলেই যাবে তবে বিয়ে করার কি দরকার ছিল। পুরো একটা রাত মেয়েটা তার সাথে গল্প করলো। তার বর্তমান জীবনধারা নিয়ে কত কথা বললো। মেয়েটা প্রশ্ন করলো, সারা জীবন কি এভাবে চলবে? এই প্রশ্ন দিয়ে কি প্রকাশ পায়?

 

সারা জীবন তার সাথে কাটানোর বাসনার একটা আভাস কি এই প্রশ্নে পাওয়া যায় না? প্রথম দিকে মেয়েটার মুখ মনে আসলেই মনটা বিষিয়ে উঠতো। কিছুদিন পর যা হবার হয়েছে এমন একটা ভাব চলে এসেছিল। ইদানিং মানুষের বিভিন্ন কথায় বা অন্য কি কারণে যেনো হাফিজের মনটা মাঝে মাঝে কেমন করে উঠে।

 

রশিদের দোকান থেকে ফিরতে ফিরতেই হাফিজ একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো। বউয়ের খুঁজে বের হবে। অন্য কোনো ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে এটা মোটামুটি নিশ্চিত। কোনো ছেলের সাথে পালিয়ে যাক আর যেখানেই যাক সে মেয়েটাকে খুঁজে বের করবেই। যতোদিন পাবে না এই নয়নপুর গ্রামে আর ফিরবে না।

 

হাফিজ কাপড়চোপড় গুছিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মা এবং বোন তার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াল। মা কিছুতেই বাড়ি থেকে বের হতে দিবে না। বোন নিজে কিছু বলছে না শুধু মায়ের দিকে তাকাচ্ছে বার বার।

 

হাফিজ বলল, শুনো আম্মা, বউ চলে যাওয়ার কষ্টে দেশান্তরি হওয়ার মানুষ হাফিজ উদ্দিন না। আমি ওরে খুঁজে বের করে শুধু জিগামু একদিনের জন্য বিয়া করার কারণ কি? আর তুমি এতো মরা কান্দা শুরু করছো ক্যান। তুমি আমার সৎ মা। সৎমায়ের এতো কান্দন মানায় না।

 

মা বুঝানোর চেষ্টা করে এই মেয়ে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে করে কোথাও চলে গেছে। আর যে ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে এই ছেলের কথা মেয়ের পরিবার জানে। নয়তো মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না এই কথাটা মেয়ের পরিবার কত সহজে মেনে নিল! আর তারা মেয়েকে খুঁজছে বলেও মনে হয় না।

 

হাফিজ উদ্দিন এত কথা শুনবে না। হাফিজ উদ্দিনের এক কথা এই মেয়ের খোঁজ না পেলে সে আর নয়নপুরে ফিরবে না।

মা কাঁদতে কাঁদতেই জিজ্ঞেস করে কই খুঁজবি তুই এই মাইয়ারে?

হাফিজ কাপড় গোছাতে গোছাতেই বলে, হিসাব একেবারেই সোজা আম্মা। এই দেশে পালাইয়া যাওয়ার জায়গা ওই একটাই। ঢাকা শহর।

মা বলল, তুই ঢাকা গিয়া এই মাইয়ারে কই খোঁজে পাইবি? আর ঢাকায় গিয়া থাকবি কই?

হাফিজ বলল, কই থাকবো এই চিন্তা তোমার করতে হইবো না আম্মা। প্রথমে ফরিদ ভাইয়ের ওখানে গিয়া উঠবো। পরে অন্য ব্যবস্থা দেখবো। আর খোঁজে পাই কি না পাই জানি না। হাফিজ উদ্দিনের এক কথা। এটার একটা বিহীত না করে এই নয়নপুরে আর ফিরবো না।

মা গলার স্বর অনেকখানি নামিয়ে বলল, আচ্ছা ফরিদের বাসা থেইকা কয়দিন বেড়াইয়া আয়।

বেড়ানি ছেড়ানি কিচ্ছু না। এর একটা বিহীত হইলে তোমাদের সাথে দেখা হইবো আর নইতো এই জীবনে এই শেষ বিদায়। আর তুমি কান্দন থামাওতো। তুমিতো দেখি চোখের পানিতে ভেসে যাইতেছো। সৎ মার কান্দনে চোখে পানি থাকবো কম আওয়াজ হইবো বেশি। তুমিতো দেখি পুরা উলটা।

ফরিদের বাসা ঢাকার হাজারীবাগে। একতলা বিল্ডিংয়ের ছাদে দুইটা রুম। বিল্ডিংটা যেমন দেড়তলা ফরিদের বাসাটাও দেড় রুমের বলা যায়। বাসায় ঢুকতেই সরু একটা রুম। সরু রুমটা পার হয়ে ডান দিকে ফরিদের রুম। প্রথম দুইদিন হাফিজ প্রায় সারাক্ষণই বাসায় ছিল।

ফরিদ বলেছিল, হাফিজ যেন কোনো চিন্তা না করে। ছুটির দিনে ফরিদ তার বউকে খোঁজে বের করার ব্যবস্থা করবে। আর বলেছিল খারাপ লাগলে যেনো পাশের রুমের নূর নবী ভাইয়ের সাথে গল্প করে। পাশের রুমের নূর নবীর সাথে কথা বলার ব্যাপারে হাফিজ তেমন আগ্রহবোধ করেনি। তাছাড়া নূরনবী লোকটাও যেন কেমন। সারাদিন শুয়ে বসে থাকে। তেমন কথাবার্তা বলে না। পাশের রুমে যে হাফিজ থাকে লোকটা যেন টেরই পায় না।

এর মধ্যে একটা ছুটির দিন গেল। ফরিদ ভাই কি একটা কাজ আছে বলে বের হলো ফিরলো সেই রাতে। হাফিজ ফরিদের উপর ভরসা রাখতে পারে না। সে নিজেই বাসা থেকে বের হয়। প্রথম প্রথম বাসার আশপাশটা একটু ঘুরেই আবার ফিরে আসে। মাঝে মাঝে কাছে কোথাও পার্কে গিয়ে নিজের মতো করে বসে থাকে। হঠাৎ কখনও মনে হয় ঝোঁকের মাথায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আসা ঠিক হয়নি। কখনও ভাবে আবার গাঁয়ে ফিরে যাবে কিনা। তখনই যেন রশিদ মিয়াদের কটাক্ষ কথা স্পষ্ট শোনতে পায় হাফিজ।

পার্কে অন্যদের মতো হাফিজও নিজের মতো করে বসে থাকে। পার্কের কোথাও কোথাও মানুষের ছোট ছোট জটলা থাকে। জটলার আশপাশে কিছু উৎসুক মানুষ ভিড় করে। বেশিরভাগই দূর থেকে নিরাসক্ত দৃষ্টিতে জটলার দিকে তাকিয়ে থাকে যেন শুধু চোখ মেলে দৃষ্টিটা সামনে ফেলে রাখে কিছু দেখে না। কোনো কিছুতেই যেনো আগ্রহ নেই, কৌতূহল নেই।

একদিন সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে হাফিজের পাশে একজন বসতে বসতে বলল, আমরাতো বলি না ভাই আমাদেরকে তোমরা সমাজে ঢোকাও, ধর্মে টানো। আমরাও বলি, সমাজ ভালো আমরাই খারাপ। আমরা নেশা ভাং নিয়া আছি। আমাদেরকে সমাজ থেকে, দেশ থেকে, পারলে দুনিয়া থেকেই বাইরে কোথাও রেখে দাও না।

আমাদের আলাদা দুনিয়া হবে। সারাদিন, সারাক্ষণ নেশায় ডুবে থাকবো। নেশা করতে করতে মরে গেলে ডাইরেক্ট দোজখে চলে গেলাম। আল্লাহরও কি বিচার দেখেন! কি দরকার ছিল ভালো মানুষ খারাপ মানুষ একটা দুনিয়াতে পাঠানোর। লোকটা এমনভাবে কথাগুলো বলছিল যেন অন্য কারো সাথে কথা বলতে বলতে অসমাপ্ত কথাগুলো তার সাথে বলছে।

মানুষটার কথাগুলো হাফিজের মনে ধরেছে। সত্যিই একেক ধরনের মানুষের জন্য যদি ভিন্ন ভিন্ন পৃথিবী হতো তাহলে ভালোই হতো। তাহলে অন্যের বউ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য একটা পৃথিবী হতো। আর তার মতো যারা বউয়ের খোঁজে গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে তাদের জন্য আলাদা একটা পৃথিবী। তাহলে কোনো সমস্যা থাকতো না।

কিন্তু বাসায় এসে ধীরে ধীরে মনে হতে থাকে ব্যাপারটা সম্ভব না। কারণ অন্যের বউ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া মানুষের আলাদা পৃথিবী হলে তারা বিয়ে করা বউ পাবে কোথায়? আর নেশাগ্রস্থদের জন্য আলাদা পৃথিবী কিভাবে সম্ভব। নেশাগ্রস্থদের পৃথিবীর সবাই যদি শুধু গাঁজা খেয়েও নেশা করে তবুও কাউকে না কাউকে গাঁজার চাষ করতে হবে। ওখানকার সবাই নেশা করে সারাক্ষণ রাস্তাঘাটে ঘোর হয়ে পড়ে থাকবে আর সেখান থেকে সরাসরি দোজখে চলে যাবে ব্যাপারটা এভাবে হয় না।
ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলার জন্য হাফিজ লোকটাকে নিজের মনে খোঁজেছে কিন্তু পায়নি।

প্রতিদিন পার্কে যাওয়া বা অন্ততপক্ষে বাসা থেকে বের হওয়া হাফিজের অভ্যাসে পরণত হলো। হাফিজের বেশিরভাগ সময়ই কাটে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়ে বা নির্জন পার্কে বসে থেকে। ব্যাপারগুলো যেন অনেকটা নেশার মতো হয়ে যাচ্ছে।

এর সাথে নতুন এক সমস্যা যুক্ত হলো। হঠাৎ হঠাৎ যেন সে তার বউকে দেখতে পায়। সব মেয়েদের মাঝেই যেন ওই মেয়েটার ছায়া দেখতে পায় হাফিজ। সে শঙ্কিত বোধ করে। তার কি মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে! ব্যাপারটা নিয়ে নূর নবীর সাথে কথা বলেছে হাফিজ। নূর নবী হাফিজের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো। নূর নবী বললো, কি বলব ভাই বলেন, আজকালের মানুষগুলো হয়ে গেছে যন্ত্রের মতো। কারও সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করে না। আপনাকে আমার ভালো লেগেছে। আপনাকে একটা পরামর্শ দিই। কবিরাজি লাইনে দেখতে পারেন। নয়তো জ্বীন-পরী দিয়েও খোঁজ করতে পারেন। আপনি যার উপর রাগ করে আছেন হতেওতো পারে সে নিজেও কোনো সমস্যায় আছে। এমনও হতে পারে জ্বীনেরা তাকে আটকে রেখেছে। ওনি প্রাণপন চেষ্টা করছে আপনার কাছে ফিরে আসতে। আপনি চাইলে আমি আপনাকে জ্বিন সাধনা করে এমন একজনের কাছে নিয়ে যাব। অবশ্য আজকাল মানুষ এগুলো বিশ্বাস করতে চায় না।

হাফিজের মনে বড় ধরনের ধাক্কা লাগলো। এভাবে সে কখনও ভাবেনি। এমনিতেও মেয়েটার উপর থেকে রাগের ব্যাপারটা ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছিল মন থেকে। নূর নবীর কথা শুনার পর থেকে শুধু মনে হতে থাকে মেয়েটা কোথায় না জানি কি কষ্টে আছে।

আর জ্বীন-পরীদের কথা অন্ততপক্ষে সে অবিশ্বাস করতে পারে না। শুধু সে কেনো নয়নপুর গ্রামের সবাই জানে উত্তরপাড়ার জামালের বউয়ের কথা। মেয়েটা শেষ পর্যন্ত স্বামীর সংসারই করতে পারলো না। কত আয়োজন করে জামাল মেয়েটাকে বিয়ে করে আনলো। বিয়ের কিছুদিন পরই বউটার উপর জ্বীন আছড় করলো। সুস্থ স্বাভাবিক মেয়েটার উপর যখনই জ্বীনের আছড় হয় সব রাগ যেন গিয়ে পড়ে তার স্বামীর উপর।

অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আবার জ্বীন যখন চলে যায় একেবারে স্বাভাবিক। জ্বীনের অত্যাচার বাড়তে থাকে। কত চিকিৎসা করা হয় কোন কাজ হয় না। একদিন এক আশ্চর্য ঘটনার সাক্ষী হলো নয়নপুরের মানুষ। বউটাকে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল কিছুদিনের জন্য। হঠাৎ এক মধ্যরাতে রহিছের টিনের চালে ধপাস করে মেয়েটিকে ফেলা হলো।

জামালের ঘরের দুই ঘর পরেই রহিছের ঘর। রহিছ তখন উঠানেই ছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে রহিছ এগিয়ে গেল। গিয়ে দেখে জামালের বউ পড়ে আছে মাটিতে। জ্বীন তাকে এনে রহিছের ঘরের চালে ফেলেছে, চাল থেকে মাটিতে পড়েছে মেয়েটি। রহিছের চিৎকার চেচামেচিতে মানুষ জড়ো হলো। হাফিজ গেলো পরদিন সকালে। বাপের বাড়ি থেকে মেয়েটিকে নিতে এসেছে। মেয়েটি জোরাজোরি করছে। মেয়েটি কেমন ভয়ংকর দৃষ্টিতে চারদিকে তাকাচ্ছিল। কোন স্বাভাবিক মানুষের চাহনি এমন হতে পারেনা। অনেক কষ্টে মেয়েটিকে বাপের বাড়িতে নেওয়া হলো। জামালের সংসার ভেঙে দেয়া হলো। পরে অন্য কোথাও মেয়েটাকে বিয়ে দেয়া হয়েছে কিনা, মেয়েটা সুস্থ হয়েছে কিনা হাফিজ জানে না।

আজ অনেকদিন পর নিজের বউ এবং জামালের বউয়ের কথা ভেবে হাফিজের মনটা আদ্র হয়ে উঠল। মন থেকে বারবার বলতো লাগলো ওরা যেখানেই থাক ভালো থাকুক, সুখে থাকুক। হাফিজ পরদিন ফরিদের বাসা থেকে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলো। বাসস্ট্যান্ড গিয়ে কি যেন কি ভেবে সে যাত্রাপথ পরিবর্তন করলো। সে গাড়িতে উঠে বসলো। তবে সে গাড়ির গন্তব্য তার গাঁয়ে নয়। অন্য কোন শহরে অন্য কোন নগরে। সূএ:ডেইলি-বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আজ বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

» ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ৫১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি

» এই সরকার ব্যর্থ হলে দেশ ব্যর্থ হবে : মির্জা ফখরুল

» স্বৈরাচার হাসিনা পালালেও তার লেজ রয়ে গেছে : তারেক রহমান

» বিচার যেন বিগত দিনের মতো না হয় : জয়নুল আবদিন ফারুক

» ঝালকাঠি থেকে ১১ রুটে বাস চলাচল বন্ধ

» অভিষেক ছাড়তে চেয়েছিলেন অভিনয়, ফেরালেন কে?

» রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলেন সদ্য সাবেক আইজিপি ময়নুল

» ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» আইনজীবী হত্যার তদন্তের নির্দেশ, দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

অন্তে অনন্ত পথে

মুহাম্মদ মনিরুল হক: চায়ে চুমুক দিয়েই থু করে ফেলে দিয়ে বিরক্তমুখে হাফিজ বলল, ধুর এটা কি বানাইলা!
রশিদ মিয়া অনুনয় করে বলল, কি লাগবো?
হাফিজ বিরক্ত চোখে তাকিয়ে বলল, কি লাগবো আমারে জিগাও ক্যান? কি লাগবো জানলেতো চায়ের দোকান দিতাম।

 

বেঞ্চের উপর চায়ের কাপ রেখেই হাফিজ চলে যাচ্ছিল। রশিদ মিয়া পিছন থেকে বলল, অ্যা চায়ের দোকান দিবে। বিয়া করা বউ রাখতে পারলি না, তুই দিবি চায়ের দোকান। দোকান চালানি মুখের কথা না যে কাপে গরম পানি ঢাললাম আর নাড়া দিলাম। চা বানাইতে তাগদ লাগে।

বউয়ের কথাটা হাফিজের কানে খুব করে লাগলো। রশিদ ভাইতো কাউকে আঘাত দিয়ে কথা বলার মানুষ না। রশিদ ভাইও এভাবে কথা বলতে পারলো! অন্য বিষয় হলে হাফিজ তেড়ে যেতো। রাগ নিয়ে অভিমান করে চলে আসার ছেলে হাফিজ না। শুধু নিজের জন্য না অন্য মানুষের বিষয় নিয়ে যে হাফিজ কতজনের সাথে ঝামেলায় জড়িয়েছে তার হিসাব নেই।

 

কিন্তু এই বিষয়টা নিয়ে কেউ কিছু বললেই যেনো সে কেমন দমে যায়। ব্যাপারটা হাফিজও খেয়াল করেছে। এই বিষয়ে তর্ক করতে গেলেই সে হেরে যায়। তাছাড়া তর্কটা সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্য নিজের পক্ষে খুব বেশি কথাও খুঁজে পায় না সে।

 

একদিনের জন্য মেয়েটা তার জীবনে এসে কি একটা পরিস্থিতিতে ফেলে গেলো। প্রথম দিকে মেয়েটার কথা মনে হতেই রাগ হতো। এখন কেমন যেনো নিজেকে বড় অসহায় মনে হয়। মনের মাঝে জেগে উঠা রাগ কারও কাছে প্রকাশ করতে না পারাটাই যেনো নিজেকে অসহায় করে তুলছে।

 

কেনো মেয়েটা এমন করলো। এমন করে যদি চলেই যাবে তবে বিয়ে করার কি দরকার ছিল। পুরো একটা রাত মেয়েটা তার সাথে গল্প করলো। তার বর্তমান জীবনধারা নিয়ে কত কথা বললো। মেয়েটা প্রশ্ন করলো, সারা জীবন কি এভাবে চলবে? এই প্রশ্ন দিয়ে কি প্রকাশ পায়?

 

সারা জীবন তার সাথে কাটানোর বাসনার একটা আভাস কি এই প্রশ্নে পাওয়া যায় না? প্রথম দিকে মেয়েটার মুখ মনে আসলেই মনটা বিষিয়ে উঠতো। কিছুদিন পর যা হবার হয়েছে এমন একটা ভাব চলে এসেছিল। ইদানিং মানুষের বিভিন্ন কথায় বা অন্য কি কারণে যেনো হাফিজের মনটা মাঝে মাঝে কেমন করে উঠে।

 

রশিদের দোকান থেকে ফিরতে ফিরতেই হাফিজ একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো। বউয়ের খুঁজে বের হবে। অন্য কোনো ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে এটা মোটামুটি নিশ্চিত। কোনো ছেলের সাথে পালিয়ে যাক আর যেখানেই যাক সে মেয়েটাকে খুঁজে বের করবেই। যতোদিন পাবে না এই নয়নপুর গ্রামে আর ফিরবে না।

 

হাফিজ কাপড়চোপড় গুছিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মা এবং বোন তার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াল। মা কিছুতেই বাড়ি থেকে বের হতে দিবে না। বোন নিজে কিছু বলছে না শুধু মায়ের দিকে তাকাচ্ছে বার বার।

 

হাফিজ বলল, শুনো আম্মা, বউ চলে যাওয়ার কষ্টে দেশান্তরি হওয়ার মানুষ হাফিজ উদ্দিন না। আমি ওরে খুঁজে বের করে শুধু জিগামু একদিনের জন্য বিয়া করার কারণ কি? আর তুমি এতো মরা কান্দা শুরু করছো ক্যান। তুমি আমার সৎ মা। সৎমায়ের এতো কান্দন মানায় না।

 

মা বুঝানোর চেষ্টা করে এই মেয়ে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে করে কোথাও চলে গেছে। আর যে ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে এই ছেলের কথা মেয়ের পরিবার জানে। নয়তো মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না এই কথাটা মেয়ের পরিবার কত সহজে মেনে নিল! আর তারা মেয়েকে খুঁজছে বলেও মনে হয় না।

 

হাফিজ উদ্দিন এত কথা শুনবে না। হাফিজ উদ্দিনের এক কথা এই মেয়ের খোঁজ না পেলে সে আর নয়নপুরে ফিরবে না।

মা কাঁদতে কাঁদতেই জিজ্ঞেস করে কই খুঁজবি তুই এই মাইয়ারে?

হাফিজ কাপড় গোছাতে গোছাতেই বলে, হিসাব একেবারেই সোজা আম্মা। এই দেশে পালাইয়া যাওয়ার জায়গা ওই একটাই। ঢাকা শহর।

মা বলল, তুই ঢাকা গিয়া এই মাইয়ারে কই খোঁজে পাইবি? আর ঢাকায় গিয়া থাকবি কই?

হাফিজ বলল, কই থাকবো এই চিন্তা তোমার করতে হইবো না আম্মা। প্রথমে ফরিদ ভাইয়ের ওখানে গিয়া উঠবো। পরে অন্য ব্যবস্থা দেখবো। আর খোঁজে পাই কি না পাই জানি না। হাফিজ উদ্দিনের এক কথা। এটার একটা বিহীত না করে এই নয়নপুরে আর ফিরবো না।

মা গলার স্বর অনেকখানি নামিয়ে বলল, আচ্ছা ফরিদের বাসা থেইকা কয়দিন বেড়াইয়া আয়।

বেড়ানি ছেড়ানি কিচ্ছু না। এর একটা বিহীত হইলে তোমাদের সাথে দেখা হইবো আর নইতো এই জীবনে এই শেষ বিদায়। আর তুমি কান্দন থামাওতো। তুমিতো দেখি চোখের পানিতে ভেসে যাইতেছো। সৎ মার কান্দনে চোখে পানি থাকবো কম আওয়াজ হইবো বেশি। তুমিতো দেখি পুরা উলটা।

ফরিদের বাসা ঢাকার হাজারীবাগে। একতলা বিল্ডিংয়ের ছাদে দুইটা রুম। বিল্ডিংটা যেমন দেড়তলা ফরিদের বাসাটাও দেড় রুমের বলা যায়। বাসায় ঢুকতেই সরু একটা রুম। সরু রুমটা পার হয়ে ডান দিকে ফরিদের রুম। প্রথম দুইদিন হাফিজ প্রায় সারাক্ষণই বাসায় ছিল।

ফরিদ বলেছিল, হাফিজ যেন কোনো চিন্তা না করে। ছুটির দিনে ফরিদ তার বউকে খোঁজে বের করার ব্যবস্থা করবে। আর বলেছিল খারাপ লাগলে যেনো পাশের রুমের নূর নবী ভাইয়ের সাথে গল্প করে। পাশের রুমের নূর নবীর সাথে কথা বলার ব্যাপারে হাফিজ তেমন আগ্রহবোধ করেনি। তাছাড়া নূরনবী লোকটাও যেন কেমন। সারাদিন শুয়ে বসে থাকে। তেমন কথাবার্তা বলে না। পাশের রুমে যে হাফিজ থাকে লোকটা যেন টেরই পায় না।

এর মধ্যে একটা ছুটির দিন গেল। ফরিদ ভাই কি একটা কাজ আছে বলে বের হলো ফিরলো সেই রাতে। হাফিজ ফরিদের উপর ভরসা রাখতে পারে না। সে নিজেই বাসা থেকে বের হয়। প্রথম প্রথম বাসার আশপাশটা একটু ঘুরেই আবার ফিরে আসে। মাঝে মাঝে কাছে কোথাও পার্কে গিয়ে নিজের মতো করে বসে থাকে। হঠাৎ কখনও মনে হয় ঝোঁকের মাথায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আসা ঠিক হয়নি। কখনও ভাবে আবার গাঁয়ে ফিরে যাবে কিনা। তখনই যেন রশিদ মিয়াদের কটাক্ষ কথা স্পষ্ট শোনতে পায় হাফিজ।

পার্কে অন্যদের মতো হাফিজও নিজের মতো করে বসে থাকে। পার্কের কোথাও কোথাও মানুষের ছোট ছোট জটলা থাকে। জটলার আশপাশে কিছু উৎসুক মানুষ ভিড় করে। বেশিরভাগই দূর থেকে নিরাসক্ত দৃষ্টিতে জটলার দিকে তাকিয়ে থাকে যেন শুধু চোখ মেলে দৃষ্টিটা সামনে ফেলে রাখে কিছু দেখে না। কোনো কিছুতেই যেনো আগ্রহ নেই, কৌতূহল নেই।

একদিন সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে হাফিজের পাশে একজন বসতে বসতে বলল, আমরাতো বলি না ভাই আমাদেরকে তোমরা সমাজে ঢোকাও, ধর্মে টানো। আমরাও বলি, সমাজ ভালো আমরাই খারাপ। আমরা নেশা ভাং নিয়া আছি। আমাদেরকে সমাজ থেকে, দেশ থেকে, পারলে দুনিয়া থেকেই বাইরে কোথাও রেখে দাও না।

আমাদের আলাদা দুনিয়া হবে। সারাদিন, সারাক্ষণ নেশায় ডুবে থাকবো। নেশা করতে করতে মরে গেলে ডাইরেক্ট দোজখে চলে গেলাম। আল্লাহরও কি বিচার দেখেন! কি দরকার ছিল ভালো মানুষ খারাপ মানুষ একটা দুনিয়াতে পাঠানোর। লোকটা এমনভাবে কথাগুলো বলছিল যেন অন্য কারো সাথে কথা বলতে বলতে অসমাপ্ত কথাগুলো তার সাথে বলছে।

মানুষটার কথাগুলো হাফিজের মনে ধরেছে। সত্যিই একেক ধরনের মানুষের জন্য যদি ভিন্ন ভিন্ন পৃথিবী হতো তাহলে ভালোই হতো। তাহলে অন্যের বউ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য একটা পৃথিবী হতো। আর তার মতো যারা বউয়ের খোঁজে গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে তাদের জন্য আলাদা একটা পৃথিবী। তাহলে কোনো সমস্যা থাকতো না।

কিন্তু বাসায় এসে ধীরে ধীরে মনে হতে থাকে ব্যাপারটা সম্ভব না। কারণ অন্যের বউ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া মানুষের আলাদা পৃথিবী হলে তারা বিয়ে করা বউ পাবে কোথায়? আর নেশাগ্রস্থদের জন্য আলাদা পৃথিবী কিভাবে সম্ভব। নেশাগ্রস্থদের পৃথিবীর সবাই যদি শুধু গাঁজা খেয়েও নেশা করে তবুও কাউকে না কাউকে গাঁজার চাষ করতে হবে। ওখানকার সবাই নেশা করে সারাক্ষণ রাস্তাঘাটে ঘোর হয়ে পড়ে থাকবে আর সেখান থেকে সরাসরি দোজখে চলে যাবে ব্যাপারটা এভাবে হয় না।
ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলার জন্য হাফিজ লোকটাকে নিজের মনে খোঁজেছে কিন্তু পায়নি।

প্রতিদিন পার্কে যাওয়া বা অন্ততপক্ষে বাসা থেকে বের হওয়া হাফিজের অভ্যাসে পরণত হলো। হাফিজের বেশিরভাগ সময়ই কাটে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়ে বা নির্জন পার্কে বসে থেকে। ব্যাপারগুলো যেন অনেকটা নেশার মতো হয়ে যাচ্ছে।

এর সাথে নতুন এক সমস্যা যুক্ত হলো। হঠাৎ হঠাৎ যেন সে তার বউকে দেখতে পায়। সব মেয়েদের মাঝেই যেন ওই মেয়েটার ছায়া দেখতে পায় হাফিজ। সে শঙ্কিত বোধ করে। তার কি মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে! ব্যাপারটা নিয়ে নূর নবীর সাথে কথা বলেছে হাফিজ। নূর নবী হাফিজের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো। নূর নবী বললো, কি বলব ভাই বলেন, আজকালের মানুষগুলো হয়ে গেছে যন্ত্রের মতো। কারও সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করে না। আপনাকে আমার ভালো লেগেছে। আপনাকে একটা পরামর্শ দিই। কবিরাজি লাইনে দেখতে পারেন। নয়তো জ্বীন-পরী দিয়েও খোঁজ করতে পারেন। আপনি যার উপর রাগ করে আছেন হতেওতো পারে সে নিজেও কোনো সমস্যায় আছে। এমনও হতে পারে জ্বীনেরা তাকে আটকে রেখেছে। ওনি প্রাণপন চেষ্টা করছে আপনার কাছে ফিরে আসতে। আপনি চাইলে আমি আপনাকে জ্বিন সাধনা করে এমন একজনের কাছে নিয়ে যাব। অবশ্য আজকাল মানুষ এগুলো বিশ্বাস করতে চায় না।

হাফিজের মনে বড় ধরনের ধাক্কা লাগলো। এভাবে সে কখনও ভাবেনি। এমনিতেও মেয়েটার উপর থেকে রাগের ব্যাপারটা ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছিল মন থেকে। নূর নবীর কথা শুনার পর থেকে শুধু মনে হতে থাকে মেয়েটা কোথায় না জানি কি কষ্টে আছে।

আর জ্বীন-পরীদের কথা অন্ততপক্ষে সে অবিশ্বাস করতে পারে না। শুধু সে কেনো নয়নপুর গ্রামের সবাই জানে উত্তরপাড়ার জামালের বউয়ের কথা। মেয়েটা শেষ পর্যন্ত স্বামীর সংসারই করতে পারলো না। কত আয়োজন করে জামাল মেয়েটাকে বিয়ে করে আনলো। বিয়ের কিছুদিন পরই বউটার উপর জ্বীন আছড় করলো। সুস্থ স্বাভাবিক মেয়েটার উপর যখনই জ্বীনের আছড় হয় সব রাগ যেন গিয়ে পড়ে তার স্বামীর উপর।

অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আবার জ্বীন যখন চলে যায় একেবারে স্বাভাবিক। জ্বীনের অত্যাচার বাড়তে থাকে। কত চিকিৎসা করা হয় কোন কাজ হয় না। একদিন এক আশ্চর্য ঘটনার সাক্ষী হলো নয়নপুরের মানুষ। বউটাকে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল কিছুদিনের জন্য। হঠাৎ এক মধ্যরাতে রহিছের টিনের চালে ধপাস করে মেয়েটিকে ফেলা হলো।

জামালের ঘরের দুই ঘর পরেই রহিছের ঘর। রহিছ তখন উঠানেই ছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে রহিছ এগিয়ে গেল। গিয়ে দেখে জামালের বউ পড়ে আছে মাটিতে। জ্বীন তাকে এনে রহিছের ঘরের চালে ফেলেছে, চাল থেকে মাটিতে পড়েছে মেয়েটি। রহিছের চিৎকার চেচামেচিতে মানুষ জড়ো হলো। হাফিজ গেলো পরদিন সকালে। বাপের বাড়ি থেকে মেয়েটিকে নিতে এসেছে। মেয়েটি জোরাজোরি করছে। মেয়েটি কেমন ভয়ংকর দৃষ্টিতে চারদিকে তাকাচ্ছিল। কোন স্বাভাবিক মানুষের চাহনি এমন হতে পারেনা। অনেক কষ্টে মেয়েটিকে বাপের বাড়িতে নেওয়া হলো। জামালের সংসার ভেঙে দেয়া হলো। পরে অন্য কোথাও মেয়েটাকে বিয়ে দেয়া হয়েছে কিনা, মেয়েটা সুস্থ হয়েছে কিনা হাফিজ জানে না।

আজ অনেকদিন পর নিজের বউ এবং জামালের বউয়ের কথা ভেবে হাফিজের মনটা আদ্র হয়ে উঠল। মন থেকে বারবার বলতো লাগলো ওরা যেখানেই থাক ভালো থাকুক, সুখে থাকুক। হাফিজ পরদিন ফরিদের বাসা থেকে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলো। বাসস্ট্যান্ড গিয়ে কি যেন কি ভেবে সে যাত্রাপথ পরিবর্তন করলো। সে গাড়িতে উঠে বসলো। তবে সে গাড়ির গন্তব্য তার গাঁয়ে নয়। অন্য কোন শহরে অন্য কোন নগরে। সূএ:ডেইলি-বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com