৪৩ হাজার জাল সনদ দিয়েছে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি সংগৃহীত

 

৪৩ হাজারের বেশি জাল সনদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভারতের রাজস্থান রাজ্যের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, ২০১৩ সাল থেকে দেশটির ১৯টি রাজ্য ও পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালের শিক্ষার্থীদের সব মিলিয়ে ৪৩ হাজার ৪০৯টি সনদ বিতরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

 

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি এমন কিছু সনদ বিতরণ করেছে যার অনুমোদনও ছিল না। এমন সব ভয়াবহ অভিযোগ ওঠার পর অবশেষে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে রাজস্থান পুলিশ। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্থান টাইমস। প্রতিবেদন অনুসারে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম ওম প্রকাশ যোগিন্দর সিং বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে, ২০১৩ সালের পর থেকে রাজ্যের চুরুতে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টি এই ৪৩ হাজার ৪০৯টি জাল বা ভুয়া সনদ ইস্যু করেছে। তদন্তে জানা গেছে, ভুয়া সনদ নেওয়া এসব শিক্ষার্থীর অনেকেই দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।

 

পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির মালিক জোগেন্দার সিং দালাল, সাবেক চেয়ারপার্সন সরিতা কারওয়াসরা এবং সাবেক রেজিস্ট্রার জিতেন্দ্র যাদবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে জিতেন্দ্র যাদব রাজস্থান ও গুজরাটের দুইটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক।

 

সরকারি অনুমোদন অনুসারে, বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ২০১৬ সালে মাত্র ১০০টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং ২০২০ সালের আগে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন তারাই কেবল ২০২২ সালের পিটিআই পরীক্ষার জন্য যোগ্য ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এসব শিক্ষার্থীর অনেকের ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রকৃত সনদ ইস্যু করেনি।

 

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ভিসার আবেদনের জন্য স্নাতক সনদের প্রয়োজন হলে অনেককেই বিশ্ববিদ্যালয়টি অনেক আগের তারিখ দিয়ে জাল সনদ দিয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনেক অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ।

 

রাজস্থান পুলিশ আরও জানিয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ৭০৮টি পিএইচডি, ৮ হাজার ৮৬১টি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি এবং শারীরিক শিক্ষায় ১ হাজার ৬৪০ ডিগ্রি প্রদান করেছে। তাদের সন্দেহ, প্রার্থীরা পিটিআই পরীক্ষাসহ প্রায় সাড়ে ৪ হাজার সরকারি চাকরির শূন্যপদ পূরণের পরীক্ষার জন্য আবেদনের জন্য ব্যাকডেটেড বা পূর্বতন তারিখ দিয়ে জাল সনদ ইস্যু করেছে।

 

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৪ জুন রাজস্থান সরকারের উচ্চশিক্ষা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কোর্সে নতুন করে ভর্তি বন্ধ করার আদেশ জারি করেছে। এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সব পিএইচডি প্রোগ্রামে স্কলারদের তালিকাভুক্ত করতে বাধা দেয়।

সূএ:হিন্দুস্থান টাইমস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» র‌্যাংকিংয়েও আফগানদের টপকে গেল টাইগাররা

» রাজাকারের নাতিপুতি আখ্যা দেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল অপমানজনক

» নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেবে: টুকু

» রাতারগুলের অবকাঠামো উন্নয়নে সরকার পাশে থাকবে: আসিফ নজরুল

» প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে যাচ্ছেন ৪ রাজনীতিবিদকে নিয়ে

» এবারের দুর্গাপূজা উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» দুর্গাপূজায় আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক ও প্রতিরোধের প্রস্তুতি থাকতে হবে: তারেক রহমান

» পিআর দাবি জনগণের আঙ্খাকার সঙ্গে ‘মুনাফেকি’: রিজভী

» পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় অতন্দ্র প্রহরী হোন: নেতা-কর্মীদের মির্জা ফখরুল

» সফররত ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

৪৩ হাজার জাল সনদ দিয়েছে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি সংগৃহীত

 

৪৩ হাজারের বেশি জাল সনদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভারতের রাজস্থান রাজ্যের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, ২০১৩ সাল থেকে দেশটির ১৯টি রাজ্য ও পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালের শিক্ষার্থীদের সব মিলিয়ে ৪৩ হাজার ৪০৯টি সনদ বিতরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

 

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি এমন কিছু সনদ বিতরণ করেছে যার অনুমোদনও ছিল না। এমন সব ভয়াবহ অভিযোগ ওঠার পর অবশেষে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে রাজস্থান পুলিশ। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্থান টাইমস। প্রতিবেদন অনুসারে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম ওম প্রকাশ যোগিন্দর সিং বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে, ২০১৩ সালের পর থেকে রাজ্যের চুরুতে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টি এই ৪৩ হাজার ৪০৯টি জাল বা ভুয়া সনদ ইস্যু করেছে। তদন্তে জানা গেছে, ভুয়া সনদ নেওয়া এসব শিক্ষার্থীর অনেকেই দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।

 

পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির মালিক জোগেন্দার সিং দালাল, সাবেক চেয়ারপার্সন সরিতা কারওয়াসরা এবং সাবেক রেজিস্ট্রার জিতেন্দ্র যাদবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে জিতেন্দ্র যাদব রাজস্থান ও গুজরাটের দুইটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক।

 

সরকারি অনুমোদন অনুসারে, বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ২০১৬ সালে মাত্র ১০০টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং ২০২০ সালের আগে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন তারাই কেবল ২০২২ সালের পিটিআই পরীক্ষার জন্য যোগ্য ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এসব শিক্ষার্থীর অনেকের ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রকৃত সনদ ইস্যু করেনি।

 

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ভিসার আবেদনের জন্য স্নাতক সনদের প্রয়োজন হলে অনেককেই বিশ্ববিদ্যালয়টি অনেক আগের তারিখ দিয়ে জাল সনদ দিয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনেক অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ।

 

রাজস্থান পুলিশ আরও জানিয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ৭০৮টি পিএইচডি, ৮ হাজার ৮৬১টি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি এবং শারীরিক শিক্ষায় ১ হাজার ৬৪০ ডিগ্রি প্রদান করেছে। তাদের সন্দেহ, প্রার্থীরা পিটিআই পরীক্ষাসহ প্রায় সাড়ে ৪ হাজার সরকারি চাকরির শূন্যপদ পূরণের পরীক্ষার জন্য আবেদনের জন্য ব্যাকডেটেড বা পূর্বতন তারিখ দিয়ে জাল সনদ ইস্যু করেছে।

 

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৪ জুন রাজস্থান সরকারের উচ্চশিক্ষা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কোর্সে নতুন করে ভর্তি বন্ধ করার আদেশ জারি করেছে। এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সব পিএইচডি প্রোগ্রামে স্কলারদের তালিকাভুক্ত করতে বাধা দেয়।

সূএ:হিন্দুস্থান টাইমস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com