২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু : জয়

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদের ফাঁদে না পড়ার জন্য আগবাড়িয়ে আক্রমণে যাননি বঙ্গবন্ধু। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণে যাওয়ার পরপরই ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তিনি। ওয়্যারলেসের বিশেষ ফ্রিকোয়েন্সিতে সম্প্রচার করা হয় বঙ্গবন্ধুর সেই স্বাধীনতার ঘোষণা, যা চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানকারী বিদেশি জাহাজগুলোর ওয়্যারলেস এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের ওয়্যারলেস থেকে স্পষ্ট শোনা যায়।

 

শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।

 

সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ইয়াহিয়া খান চেয়েছিল, অপারেশন সার্চলাইটের নামে এক বীভৎস গণহত্যা চালাতে, যাতে বাঙালি জাতি আর কোনো দিন স্বাধীনতার কথা মুখেও না আনে। বেলুচিস্তানে গণহত্যা চালানো টিক্কা খানকে তাই বাংলাদেশে গণহত্যা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। জেনারেল টিক্কা খানের নির্দেশে ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর হামলে পড়ে পাকিস্তানি সেনারা।

 

তিনি আরও বলেন, তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা সিদ্দিক সালিক জানান, ‘২৫ মার্চ দুপুরে মেজর জেনারেল খাদিম হুসেইনকে ফোন করে টিক্কা খান। সরাসরি জানায় খাদিম, আজই করতে হবে কাজটা। খাদিম এই নির্দেশের জন্যেই অপেক্ষাই করছিল। সঙ্গে সঙ্গে নিজের কর্মচারীদের ওই আদেশ পালনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেয় সে।

 

সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, উইটনেস টু সারেন্ডার বইতে সিদ্দিক সালিক আরও লিখেছেন, ‘ক্র্যাকডাউনের সময় ঠিক করা হয়েছিল ২৬ মার্চ রাত ১টায়। কিন্তু ২৫ মার্চ সন্ধ্যার পর একজন কমান্ডার টিক্কা খানকে ক্র্যাকডাউনের সময় এগিয়ে আনার পরামর্শ দেয়। এরপর রাত সাড়ে ১১টায় পুরো শহরে হামলা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী।

 

তিনি আরও বলেন, নিজস্ব সূত্রে বঙ্গবন্ধুও পাকিস্তানিদের এই পরিকল্পনা খবর জানতে পারেন। ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে টেলিফোনে সারা দেশে যুদ্ধের প্রস্তুতির নির্দেশনা দেন তিনি। সেদিনের ঘটনার ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর সহকারী সাক্ষাৎকারে জানান, ‘পঁচিশ তারিখ সন্ধ্যার দিকে আমরা রিপোর্ট পাওয়া শুরু করলাম যে, সব ট্যাংক ক্যান্টনমেন্টে লাইন আপ করা হচ্ছে, আক্রমণ করার প্রস্তুতি চলছে। আমরা এটা বঙ্গবন্ধুকে রিপোর্ট করলাম। এরপর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ছিল খুবই সুস্পষ্ট। তিনি বললেন- যে মুহূর্তে তারা আক্রমণ শুরু করবে, সেই মুহূর্ত থেকে আমরা স্বাধীন।

 

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠেই স্বাধীনতার ঘোষণাটি এম ভি সালভিস্তা, এম ভি মিনি লা ট্রিয়া, এম ভি ভি ভি গিরিসহ আরও বেশ কয়েকটি জাহাজের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করা হয়। এরপরেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানি সেনারা। কসাই টিক্কা খান পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে এবং সিদ্দিক সালিক তার বইতেও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা নিজের কানে শোনার কথা উল্লেখ করেছেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ডিইউজের শ্রদ্ধা

» বিএমএম এসোসিয়েশনের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

» আজকের এই স্বাধীনতা**

» ইসলামপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত

» বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

» পাঁচবিবিতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত

» ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি

» স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানালেন সাকিব-তামিমরা

» কারিনা ‘আউট’, পূজা ‘ইন’

» ঈদে অনলাইনে যেভাবে কাটবেন ট্রেনের টিকিট

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু : জয়

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদের ফাঁদে না পড়ার জন্য আগবাড়িয়ে আক্রমণে যাননি বঙ্গবন্ধু। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণে যাওয়ার পরপরই ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তিনি। ওয়্যারলেসের বিশেষ ফ্রিকোয়েন্সিতে সম্প্রচার করা হয় বঙ্গবন্ধুর সেই স্বাধীনতার ঘোষণা, যা চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানকারী বিদেশি জাহাজগুলোর ওয়্যারলেস এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের ওয়্যারলেস থেকে স্পষ্ট শোনা যায়।

 

শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।

 

সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ইয়াহিয়া খান চেয়েছিল, অপারেশন সার্চলাইটের নামে এক বীভৎস গণহত্যা চালাতে, যাতে বাঙালি জাতি আর কোনো দিন স্বাধীনতার কথা মুখেও না আনে। বেলুচিস্তানে গণহত্যা চালানো টিক্কা খানকে তাই বাংলাদেশে গণহত্যা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। জেনারেল টিক্কা খানের নির্দেশে ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর হামলে পড়ে পাকিস্তানি সেনারা।

 

তিনি আরও বলেন, তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা সিদ্দিক সালিক জানান, ‘২৫ মার্চ দুপুরে মেজর জেনারেল খাদিম হুসেইনকে ফোন করে টিক্কা খান। সরাসরি জানায় খাদিম, আজই করতে হবে কাজটা। খাদিম এই নির্দেশের জন্যেই অপেক্ষাই করছিল। সঙ্গে সঙ্গে নিজের কর্মচারীদের ওই আদেশ পালনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেয় সে।

 

সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, উইটনেস টু সারেন্ডার বইতে সিদ্দিক সালিক আরও লিখেছেন, ‘ক্র্যাকডাউনের সময় ঠিক করা হয়েছিল ২৬ মার্চ রাত ১টায়। কিন্তু ২৫ মার্চ সন্ধ্যার পর একজন কমান্ডার টিক্কা খানকে ক্র্যাকডাউনের সময় এগিয়ে আনার পরামর্শ দেয়। এরপর রাত সাড়ে ১১টায় পুরো শহরে হামলা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী।

 

তিনি আরও বলেন, নিজস্ব সূত্রে বঙ্গবন্ধুও পাকিস্তানিদের এই পরিকল্পনা খবর জানতে পারেন। ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে টেলিফোনে সারা দেশে যুদ্ধের প্রস্তুতির নির্দেশনা দেন তিনি। সেদিনের ঘটনার ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর সহকারী সাক্ষাৎকারে জানান, ‘পঁচিশ তারিখ সন্ধ্যার দিকে আমরা রিপোর্ট পাওয়া শুরু করলাম যে, সব ট্যাংক ক্যান্টনমেন্টে লাইন আপ করা হচ্ছে, আক্রমণ করার প্রস্তুতি চলছে। আমরা এটা বঙ্গবন্ধুকে রিপোর্ট করলাম। এরপর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ছিল খুবই সুস্পষ্ট। তিনি বললেন- যে মুহূর্তে তারা আক্রমণ শুরু করবে, সেই মুহূর্ত থেকে আমরা স্বাধীন।

 

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠেই স্বাধীনতার ঘোষণাটি এম ভি সালভিস্তা, এম ভি মিনি লা ট্রিয়া, এম ভি ভি ভি গিরিসহ আরও বেশ কয়েকটি জাহাজের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করা হয়। এরপরেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানি সেনারা। কসাই টিক্কা খান পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে এবং সিদ্দিক সালিক তার বইতেও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা নিজের কানে শোনার কথা উল্লেখ করেছেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Design & Developed BY ThemesBazar.Com