১৪ বিয়ে করায় গ্রেফতার, বেরিয়ে এলো আরও বিয়ের খবর

ভারতের ৭ রাজ্যে ১৪ বিয়ে করায় স্ত্রীর মামলায় পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন ৬৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। কিন্তু গ্রেফতারের পর যেন আরও বিপাকে পড়েছেন তিনি। সম্প্রতি তার নামে আরও তিনটি বিয়ের খবর সামনে এসেছে। ওই নারীরাও তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এ যেন একেবারে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।

 

কয়েকদিন আগেই তার এক স্ত্রী একাধিক বিয়ের মামলা করেন তার বিরুদ্ধে। সে সময় জানা যায় যে, মিথ্যা আর প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যে তিনি ১৪টি বিয়ে করেছেন। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত জানা গেছে যে, তিনি ১৭টি বিয়ে করেছেন। ওই ব্যক্তিকে গত সোমবার ওড়িশার ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

একের পর এক বিয়ে করেছেন ওই ব্যক্তি। এরপর এসব নারীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়েছেন। ওড়িশার কেন্দ্রপারা জেলার পাতকুরা পুলিশ স্টেশনের আওতাধীন একটি গ্রামের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি। ১৯৮২ সালে প্রথম বিয়ে করেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় বিয়ে করেন ২০০২ সালে। এই দুই স্ত্রীর ঘরে তার পাঁচ সন্তান আছে।

 

তিনি তার স্ত্রীদের জানিয়েছিলেন তিনি একজন চিকিৎসক। এই ভুয়া পরিচয়ে তিনি আইনজীবী, চিকিৎসক এবং উচ্চ শিক্ষিত নারীদের বিয়ে করেছেন। এমনকি প্যারা মিলিটারি ফোর্সের এক নারী সদস্যও তার কাছে প্রতারিত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার এক স্ত্রী ছত্তিশগড়ের হিসাবরক্ষক, একজন আসামের চিকিৎসক এবং একজন ওড়িশার উচ্চ শিক্ষিত নারী।

 

ভুবনেশ্বরের পুলিশ জানিয়েছে, ওই ভুয়া চিকিৎসকের আরও তিন স্ত্রীর পরিচয় পাওয়া গেছে। এছাড়া ওড়িশার জগতসিংপুর জেলার এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন যে, ওই ব্যক্তি রাজ্যের মেডিকেল কলেজে তাকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে তার কাছ থেকে ১৮ লাখ রুপি হাতিয়ে নিয়েছে।

 

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির মোবাইল ফোন ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে এবং তার আর্থিক লেনদেনে তদন্ত করা হবে। ২০০২ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বেশ কিছু মেট্রিমোনিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। এরপর তার প্রথম দুই স্ত্রীকে না জানিয়েই তিনি আরও বেশ কয়েকজন নারীকে বিয়ে করেন। মধ্যবয়স্ক, শিক্ষিত, চাকরিজীবী নারীদের বিয়ে করেছেন তিনি।

তার প্রথম দুই স্ত্রী ওড়িশার। পুলিশ জানিয়েছে, ২০২০ সালে তিনি দিল্লির যে নারীকে বিয়ে করেছেন তিনি গত জুলাইয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। ওই নারী জানান, ২০১৮ সালে দিল্লিতে তাকে বিয়ে করেন ওই ব্যক্তি। পরে তাকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যান।

পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন যে, তার স্বামী এর আগেও বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে ১১টি এটিএম কার্ড, চারটি আধার কার্ড এবং আরও কিছু নথিপত্র জব্দ করা হয়।

 

পুলিশ বলছে, তিনি তার স্ত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, দিনের পর দিন তাদের ঠকিয়েছেন। তার স্ত্রীদের মধ্যে চারজন ওড়িশার, তিনজন দিল্লির, তিনজন আসামের, দুজন মধ্যপ্রদেশের, দুজন পাঞ্জাবের এবং একজন ছত্তিশগড়ের, একজন ঝাড়খণ্ডের এবং বাকি একজন উত্তরপ্রদেশের। এদের সবার কাছ থেকেই তিনি লাখ লাখ রুপি হাতিয়ে নিয়েছেন।

 

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে নিজের পরিচয় দিয়েছেন তিনি। কখনো ডা. বিভু প্রকাশ সোয়াইন আবার কখনো ডা. রামনি রঞ্জন সোয়াইন হিসেবে নারীদের ঠকিয়েছেন তিনি। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ওই ব্যক্তি বলছেন, তিনি এসব নারীকে বিয়ে করেননি এবং তিনি প্রকৃতপক্ষেই একজন চিকিৎসক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দুই দফা দাম কমানোর পর ফের বাড়লো সোনার দাম

» রমজানে যানজট কমাতে পুলিশের ১৫ নির্দেশনা

» রমজানে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার অনুরোধ রাষ্ট্রপতির

» দেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, কাল থেকে রোজা

» গুড়ার নন্দীগ্রামে হাইওয়ে পুলিশের পথসভা অনুষ্ঠিত 

» বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রথমবারের মতো ইন্ডাস্ট্রিয়াল লেকচার সপ্তাহ অনুষ্ঠিত

» পাঁচবিবিতে তথ্য আপা প্রকল্পের বিশেষ উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

» নগদ-এ কেনাকাটার পেমেন্ট করলে পাবেন বিএমডব্লিউ গাড়ি

» মোবাইল ব্যালেন্স থেকে পরিশোধ করা যাবে সরকারি সেবার বিল

» জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসিকে সহযোগিতায় আগ্রহী নেদারল্যান্ডস

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

১৪ বিয়ে করায় গ্রেফতার, বেরিয়ে এলো আরও বিয়ের খবর

ভারতের ৭ রাজ্যে ১৪ বিয়ে করায় স্ত্রীর মামলায় পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন ৬৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। কিন্তু গ্রেফতারের পর যেন আরও বিপাকে পড়েছেন তিনি। সম্প্রতি তার নামে আরও তিনটি বিয়ের খবর সামনে এসেছে। ওই নারীরাও তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এ যেন একেবারে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।

 

কয়েকদিন আগেই তার এক স্ত্রী একাধিক বিয়ের মামলা করেন তার বিরুদ্ধে। সে সময় জানা যায় যে, মিথ্যা আর প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যে তিনি ১৪টি বিয়ে করেছেন। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত জানা গেছে যে, তিনি ১৭টি বিয়ে করেছেন। ওই ব্যক্তিকে গত সোমবার ওড়িশার ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

একের পর এক বিয়ে করেছেন ওই ব্যক্তি। এরপর এসব নারীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়েছেন। ওড়িশার কেন্দ্রপারা জেলার পাতকুরা পুলিশ স্টেশনের আওতাধীন একটি গ্রামের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি। ১৯৮২ সালে প্রথম বিয়ে করেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় বিয়ে করেন ২০০২ সালে। এই দুই স্ত্রীর ঘরে তার পাঁচ সন্তান আছে।

 

তিনি তার স্ত্রীদের জানিয়েছিলেন তিনি একজন চিকিৎসক। এই ভুয়া পরিচয়ে তিনি আইনজীবী, চিকিৎসক এবং উচ্চ শিক্ষিত নারীদের বিয়ে করেছেন। এমনকি প্যারা মিলিটারি ফোর্সের এক নারী সদস্যও তার কাছে প্রতারিত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার এক স্ত্রী ছত্তিশগড়ের হিসাবরক্ষক, একজন আসামের চিকিৎসক এবং একজন ওড়িশার উচ্চ শিক্ষিত নারী।

 

ভুবনেশ্বরের পুলিশ জানিয়েছে, ওই ভুয়া চিকিৎসকের আরও তিন স্ত্রীর পরিচয় পাওয়া গেছে। এছাড়া ওড়িশার জগতসিংপুর জেলার এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন যে, ওই ব্যক্তি রাজ্যের মেডিকেল কলেজে তাকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে তার কাছ থেকে ১৮ লাখ রুপি হাতিয়ে নিয়েছে।

 

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির মোবাইল ফোন ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে এবং তার আর্থিক লেনদেনে তদন্ত করা হবে। ২০০২ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বেশ কিছু মেট্রিমোনিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। এরপর তার প্রথম দুই স্ত্রীকে না জানিয়েই তিনি আরও বেশ কয়েকজন নারীকে বিয়ে করেন। মধ্যবয়স্ক, শিক্ষিত, চাকরিজীবী নারীদের বিয়ে করেছেন তিনি।

তার প্রথম দুই স্ত্রী ওড়িশার। পুলিশ জানিয়েছে, ২০২০ সালে তিনি দিল্লির যে নারীকে বিয়ে করেছেন তিনি গত জুলাইয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। ওই নারী জানান, ২০১৮ সালে দিল্লিতে তাকে বিয়ে করেন ওই ব্যক্তি। পরে তাকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যান।

পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন যে, তার স্বামী এর আগেও বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে ১১টি এটিএম কার্ড, চারটি আধার কার্ড এবং আরও কিছু নথিপত্র জব্দ করা হয়।

 

পুলিশ বলছে, তিনি তার স্ত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, দিনের পর দিন তাদের ঠকিয়েছেন। তার স্ত্রীদের মধ্যে চারজন ওড়িশার, তিনজন দিল্লির, তিনজন আসামের, দুজন মধ্যপ্রদেশের, দুজন পাঞ্জাবের এবং একজন ছত্তিশগড়ের, একজন ঝাড়খণ্ডের এবং বাকি একজন উত্তরপ্রদেশের। এদের সবার কাছ থেকেই তিনি লাখ লাখ রুপি হাতিয়ে নিয়েছেন।

 

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে নিজের পরিচয় দিয়েছেন তিনি। কখনো ডা. বিভু প্রকাশ সোয়াইন আবার কখনো ডা. রামনি রঞ্জন সোয়াইন হিসেবে নারীদের ঠকিয়েছেন তিনি। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ওই ব্যক্তি বলছেন, তিনি এসব নারীকে বিয়ে করেননি এবং তিনি প্রকৃতপক্ষেই একজন চিকিৎসক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Design & Developed BY ThemesBazar.Com