হত্যার পর সারা দিন লাশ নিয়ে ঘুরলেন, ফেলে এসে জিডি

চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুকে তার স্বামী হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছে হত্যা করার কথা শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল স্বীকার করেছেন। আর শিমুর লাশ গুম করতে সহায়তা করেছেন নোবেলের বন্ধু ফরহাদ। গতকাল বিকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। মামলায় নোবেল ও ফরহাদকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এরপর তাদের আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল দুপুর আড়াইটায় পুরান ঢাকায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব জানান মারুফ হোসেন সরদার। তিনি বলেন, দাম্পত্য কলহের জেরে এ হত্যাকা  ঘটেছে। এর আগে সোমবার দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে শিমুর লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটি বস্তায় ভরে ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে সোমবার রাতেই তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বন্ধু এস এম ওয়াই আবদুল্লাহ ফরহাদকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকান্ডে  শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু ফরহাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। বিভিন্ন পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে স্বামী নোবেলের সঙ্গে দাম্পত্য কলহ শুরু হয় শিমুর। এর জেরে গত ১৬ জানুয়ারি সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে তাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে যে গাড়ি ব্যবহার করে লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়েছে সেই গাড়িটি জব্দ করে থানায় নিয়েছি এবং অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করেছি। মডেল শিমুর স্বামী নোবেল এবং তার বাল্যবন্ধু ফরহাদ বর্তমানে থানা হেফাজতে আছেন।’ তিনি বলেন, ‘সোমবার সকাল ১০টায় স্থানীয়ভাবে সংবাদ পেয়ে কেরানীগঞ্জ হযরতপুর ইউনিয়নের আলীপুর ব্রিজ থেকে ৩০০ গজ উত্তরে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল তথ্য প্রস্তুত করে এর পরিচয় শনাক্ত করার জন্য আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে। তথ্য-প্রযুক্তির সাহায্যে লাশের নাম-পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তাৎক্ষণিকভাবে অভিনেত্রী শিমুর বাসায় যায় এবং এ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা শুরু করে। খুনিরা যদিও খুবই পরিকল্পিতভাবে লাশটি কেরানীগঞ্জ মডেল থানার হযরতপুরে ফেলে যায়, তবে তারা কিছু চিহ্ন রেখে যায়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করি। রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসিন্দা অভিনেত্রী শিমুকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে রবিবার তার পরিবারের পক্ষ থেকে কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

 

জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বর্তমান’ সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় শিমুর অভিষেক হয়। পরে সিনেমার পাশাপাশি অসংখ্য নাটকেও তিনি অভিনয় করেছেন। সম্প্রতি ফ্যামিলি ক্রাইসিস নামের একটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছেন তিনি। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি কর্তৃক ১৮৪ জন ভোটাধিকার হারানো শিল্পীর মধ্যে শিমুও ছিলেন। ভোটাধিকার ফিরে পেতে চলমান আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন তিনি।

 

তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, লাশটি টুকরা করে দুটি বস্তায় ভরে ফেলে রাখা হয়। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শিমুর মরদেহে গলায় একটি দাগ দেখা যায়। সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ভারতীয়দের জন্য ভিসা সীমিত করলো বাংলাদেশ

» ভারতের অপপ্রচারে ক্ষতি নেই, আমাদের চিকিৎসা ও বাজার সবই আছে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন

» আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে কোনো আপস নেই : নুর

» দরিদ্র দেশগুলোকে ১০ হাজার কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

» নির্বাচন কমিশনে ৪টি নতুন কমিটি গঠন

» ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক হবে প্রতিবেশীর মতো : সারজিস

» বাঙালী জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে যত বড় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হোক না কেন আমরা জিতবেই.. মাওলানা মামুনুল হক

» ব্র্যাক ব্যাংক-কে ‘বেস্ট ব্যাংকিং পার্টনার অফ দ্যা ইয়ার ২০২৩’ স্বীকৃতি দিয়েছে জেডটিই বাংলাদেশ

» পলাশে নবাগত ইউএনওর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

» অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে বড় বিদ্রোহ হবে: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হত্যার পর সারা দিন লাশ নিয়ে ঘুরলেন, ফেলে এসে জিডি

চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুকে তার স্বামী হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছে হত্যা করার কথা শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল স্বীকার করেছেন। আর শিমুর লাশ গুম করতে সহায়তা করেছেন নোবেলের বন্ধু ফরহাদ। গতকাল বিকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। মামলায় নোবেল ও ফরহাদকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এরপর তাদের আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল দুপুর আড়াইটায় পুরান ঢাকায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব জানান মারুফ হোসেন সরদার। তিনি বলেন, দাম্পত্য কলহের জেরে এ হত্যাকা  ঘটেছে। এর আগে সোমবার দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে শিমুর লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটি বস্তায় ভরে ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে সোমবার রাতেই তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বন্ধু এস এম ওয়াই আবদুল্লাহ ফরহাদকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকান্ডে  শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু ফরহাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। বিভিন্ন পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে স্বামী নোবেলের সঙ্গে দাম্পত্য কলহ শুরু হয় শিমুর। এর জেরে গত ১৬ জানুয়ারি সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে তাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে যে গাড়ি ব্যবহার করে লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়েছে সেই গাড়িটি জব্দ করে থানায় নিয়েছি এবং অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করেছি। মডেল শিমুর স্বামী নোবেল এবং তার বাল্যবন্ধু ফরহাদ বর্তমানে থানা হেফাজতে আছেন।’ তিনি বলেন, ‘সোমবার সকাল ১০টায় স্থানীয়ভাবে সংবাদ পেয়ে কেরানীগঞ্জ হযরতপুর ইউনিয়নের আলীপুর ব্রিজ থেকে ৩০০ গজ উত্তরে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল তথ্য প্রস্তুত করে এর পরিচয় শনাক্ত করার জন্য আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে। তথ্য-প্রযুক্তির সাহায্যে লাশের নাম-পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তাৎক্ষণিকভাবে অভিনেত্রী শিমুর বাসায় যায় এবং এ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা শুরু করে। খুনিরা যদিও খুবই পরিকল্পিতভাবে লাশটি কেরানীগঞ্জ মডেল থানার হযরতপুরে ফেলে যায়, তবে তারা কিছু চিহ্ন রেখে যায়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করি। রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসিন্দা অভিনেত্রী শিমুকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে রবিবার তার পরিবারের পক্ষ থেকে কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

 

জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বর্তমান’ সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় শিমুর অভিষেক হয়। পরে সিনেমার পাশাপাশি অসংখ্য নাটকেও তিনি অভিনয় করেছেন। সম্প্রতি ফ্যামিলি ক্রাইসিস নামের একটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছেন তিনি। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি কর্তৃক ১৮৪ জন ভোটাধিকার হারানো শিল্পীর মধ্যে শিমুও ছিলেন। ভোটাধিকার ফিরে পেতে চলমান আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন তিনি।

 

তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, লাশটি টুকরা করে দুটি বস্তায় ভরে ফেলে রাখা হয়। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শিমুর মরদেহে গলায় একটি দাগ দেখা যায়। সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com