সন্তান যৌন নিগ্রহের শিকার হচ্ছে কি-না বুঝবেন যেভাবে

শিশুরা নিষ্পাপ। তাদের মনে কোনো কুটিলটা নেই। আর না আছে কোনো জটিল কিছু বোঝার ক্ষমতা। তাইতো শিশুদের সঙ্গে খারাপ কিছু হলেও তারা তা সহজে বলে বোঝাতে পারে না। বিকৃত যৌন লালসার শিকার হলে মানসিক ভাবে স্থির থেকে সব কিছু বুঝিয়ে বলা এমনিতেই কঠিন। পাশাপাশি শিশুদের পক্ষে বিষয়টি বুঝে ওঠাও সহজ নয়।

 

ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যৌন হিংসার শিকার হলেও শিশুদের পক্ষে তা বলে ওঠা সম্ভব হয় না। কিন্তু মানসিক ও শারীরিক ভাবে এর পরিণাম হতে পারে মারাত্মক। তাই শিশুদের মনের কথা বুঝতে অভিভাবকদের ভূমিকা হয়ে ওঠে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক নিগ্রহ ছাড়াও শিশুদের সামনে যৌনাঙ্গের উন্মোচন, শিশুদের অশ্লীল ছবি চালাচালি করা থেকে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ আচার-আচরণ করা, সবই যৌন নিগ্রহ।

আপনার সন্তান যৌন নিগ্রহের শিকার হচ্ছে কি-না কীভাবে বুঝবেন চলুন জেনে নেয়া যাক-

 

>> শিশুদের পক্ষে নিগ্রহ বুঝে ওঠা সহজ নয়। তাই নিশ্চিত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করলে চলবে না। যদি মনে হয় শিশুর কোথাও অসুবিধা হচ্ছে বা কী সমস্যা হচ্ছে, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাহলে হতে হবে সতর্ক।

 

যদি কোনো যৌন রোগের লক্ষণ দেখা যায় শিশুর শরীরে, তাহলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। যৌন নিগ্রহের শিকার হলে শরীরে একাধিক লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যৌন রোগ ছাড়াও শরীরে কালশিটে, কেটে-ছড়ে যাওয়া, অযাচিত নখের আঁচড় কিংবা জামাকাপড় বা বিছানার চাদরে রক্তের দাগ যৌন নিগ্রহের লক্ষণ।

 

যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হলে মানসিক ভাবেও তীব্র ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে শিশুদের উপর। সন্তানের আচমকা চুপচাপ হয়ে যাওয়া, বাবা-মাকে ছাড়া কোথাও থাকতে না চাওয়া। বাড়িতে একা একা দীর্ঘক্ষণ শুয়ে বসে থাকা, কিছু বিশেষ আত্মীয় পরিজনদের কাছে না যেতে চাওয়া একেবারেই ভালো লক্ষণ নয়।

 

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যৌন নিগ্রহের শিকার হলে শিশুরা ঘুমের মধ্যে বিছানাতেই প্রস্রাব করে ফেলে। হঠাৎ বুড়ো আঙুল চোষা, দাঁত দিয়ে নখ কাটার মতো লক্ষণও দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে।

 

চঞ্চল সন্তান যদি হঠাৎ শান্ত ও নিস্তেজ হয়ে যায়, কথা শুনতে শুরু করে, তাহলেও সতর্ক হতে হবে তৎক্ষণাৎ। যদি খুদেরা হঠাৎ মা-বাবার সামনে পোশাক বদলাতে কিংবা গোসল করতে সংকোচ বোধ করে, তাহলেও সতর্ক হতে হবে অভিভাবকদের। মনে রাখবেন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিশুদের যৌন নিগ্রহের পেছনে হাত থাকে পরিচিত কোনো মানুষেরই। কাজেই মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন শিশুদের কথা। শৈশবের ভ্রান্তি বলে এড়িয়ে গেলে ঘটতে পারে মারাত্মক বিপদ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» র‌্যাংকিংয়েও আফগানদের টপকে গেল টাইগাররা

» রাজাকারের নাতিপুতি আখ্যা দেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল অপমানজনক

» নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেবে: টুকু

» রাতারগুলের অবকাঠামো উন্নয়নে সরকার পাশে থাকবে: আসিফ নজরুল

» প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে যাচ্ছেন ৪ রাজনীতিবিদকে নিয়ে

» এবারের দুর্গাপূজা উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» দুর্গাপূজায় আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক ও প্রতিরোধের প্রস্তুতি থাকতে হবে: তারেক রহমান

» পিআর দাবি জনগণের আঙ্খাকার সঙ্গে ‘মুনাফেকি’: রিজভী

» পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় অতন্দ্র প্রহরী হোন: নেতা-কর্মীদের মির্জা ফখরুল

» সফররত ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সন্তান যৌন নিগ্রহের শিকার হচ্ছে কি-না বুঝবেন যেভাবে

শিশুরা নিষ্পাপ। তাদের মনে কোনো কুটিলটা নেই। আর না আছে কোনো জটিল কিছু বোঝার ক্ষমতা। তাইতো শিশুদের সঙ্গে খারাপ কিছু হলেও তারা তা সহজে বলে বোঝাতে পারে না। বিকৃত যৌন লালসার শিকার হলে মানসিক ভাবে স্থির থেকে সব কিছু বুঝিয়ে বলা এমনিতেই কঠিন। পাশাপাশি শিশুদের পক্ষে বিষয়টি বুঝে ওঠাও সহজ নয়।

 

ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যৌন হিংসার শিকার হলেও শিশুদের পক্ষে তা বলে ওঠা সম্ভব হয় না। কিন্তু মানসিক ও শারীরিক ভাবে এর পরিণাম হতে পারে মারাত্মক। তাই শিশুদের মনের কথা বুঝতে অভিভাবকদের ভূমিকা হয়ে ওঠে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক নিগ্রহ ছাড়াও শিশুদের সামনে যৌনাঙ্গের উন্মোচন, শিশুদের অশ্লীল ছবি চালাচালি করা থেকে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ আচার-আচরণ করা, সবই যৌন নিগ্রহ।

আপনার সন্তান যৌন নিগ্রহের শিকার হচ্ছে কি-না কীভাবে বুঝবেন চলুন জেনে নেয়া যাক-

 

>> শিশুদের পক্ষে নিগ্রহ বুঝে ওঠা সহজ নয়। তাই নিশ্চিত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করলে চলবে না। যদি মনে হয় শিশুর কোথাও অসুবিধা হচ্ছে বা কী সমস্যা হচ্ছে, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাহলে হতে হবে সতর্ক।

 

যদি কোনো যৌন রোগের লক্ষণ দেখা যায় শিশুর শরীরে, তাহলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। যৌন নিগ্রহের শিকার হলে শরীরে একাধিক লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যৌন রোগ ছাড়াও শরীরে কালশিটে, কেটে-ছড়ে যাওয়া, অযাচিত নখের আঁচড় কিংবা জামাকাপড় বা বিছানার চাদরে রক্তের দাগ যৌন নিগ্রহের লক্ষণ।

 

যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হলে মানসিক ভাবেও তীব্র ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে শিশুদের উপর। সন্তানের আচমকা চুপচাপ হয়ে যাওয়া, বাবা-মাকে ছাড়া কোথাও থাকতে না চাওয়া। বাড়িতে একা একা দীর্ঘক্ষণ শুয়ে বসে থাকা, কিছু বিশেষ আত্মীয় পরিজনদের কাছে না যেতে চাওয়া একেবারেই ভালো লক্ষণ নয়।

 

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যৌন নিগ্রহের শিকার হলে শিশুরা ঘুমের মধ্যে বিছানাতেই প্রস্রাব করে ফেলে। হঠাৎ বুড়ো আঙুল চোষা, দাঁত দিয়ে নখ কাটার মতো লক্ষণও দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে।

 

চঞ্চল সন্তান যদি হঠাৎ শান্ত ও নিস্তেজ হয়ে যায়, কথা শুনতে শুরু করে, তাহলেও সতর্ক হতে হবে তৎক্ষণাৎ। যদি খুদেরা হঠাৎ মা-বাবার সামনে পোশাক বদলাতে কিংবা গোসল করতে সংকোচ বোধ করে, তাহলেও সতর্ক হতে হবে অভিভাবকদের। মনে রাখবেন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিশুদের যৌন নিগ্রহের পেছনে হাত থাকে পরিচিত কোনো মানুষেরই। কাজেই মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন শিশুদের কথা। শৈশবের ভ্রান্তি বলে এড়িয়ে গেলে ঘটতে পারে মারাত্মক বিপদ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com