শিশুরা অজু ছাড়া ‘আমপারা-কায়দা’ ধরতে পারবে?

ছোট শিশুরা মক্তবে কিংবা মাদরাসায় কোরআন পড়ে। অনেককে কোরআন হিফজ করার জন্য দীর্ঘ সময় আমপারা-কায়দা বা কোরআন পড়তে হয়। দীর্ঘ সময় ধরে শিশুরা অজু রাখতে পারে না। আবার ঘন ঘন অজুও করতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে অজু ছাড়া কোরআন, আম্মাপারা/আমপারা বা নুরানি কায়দা ধরতে বা স্পর্শ করে পড়তে পারবে কি?

 

‘আমপারা বা আম্মাপারা’ মূলত কোরআনুল কারিমের ৩০তম পারার নাম। তা কোরআনুল কারিমের অংশ হিসেবে পরিগণিত। অজু ছাড়া গ্রন্থাকারে লিখিত কোরআনের মাসহাফ স্পর্শ বা ধরা যাবে কিনা তা দ্বিমতপূর্ণ। তবে অধিক বিশুদ্ধ মতে, মাসহাফ তথা লিখিত কোরআনের পাণ্ডুলিপি ধরার জন্য অজু করা আবশ্যক। কেননা আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে বলেছেন-

لَّا یَمَسُّهٗۤ اِلَّا الۡمُطَهَّرُوۡنَ

‘পূত-পবিত্রগণ ব্যতীত অন্য কেউ তা (কোরআন) স্পর্শ করে না।’ (সুরা ওয়াকিয়া : আয়াত ৭৯)

তবে শিশু শিক্ষার্থীসহ অন্য সবার জন্যই কোরআনের অংশ বা মাসহাফ ছাড়া নুরানি কায়দা, আরবি শিক্ষার বই; সাধারণ আরবি সাহিত্য, আরবি পত্রিকা, হাদিস, তাফসির, দোয়া এবং অন্যান্য ইসলামি বই-পুস্তক ধরার জন্য অজু থাকা জরুরি নয়।

 

শিশু বাচ্ছাদের ক্ষেত্রে ‘আমপারা/আম্মাপারা’ বা কোরআন কিংবা কোরআনের অংশ স্পর্শ করা কিংবা ধরার ব্যাপারে অনেক ইসলামিক স্কলার ছাড় দিয়েছেন। কারণ শিশুরা অজুর বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারে না বা জানে না।

এ সম্পর্কে সৌদি আরবের বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার শায়খ উসাইমিন রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন-

أن بعض أهل العلم رخص للصغار أن يمسوا القرآن لحاجتهم لذلك وعدم إدراكهم للوضوء

কতিপয় আহলে ইলম প্রয়োজন বশতঃ ছোট শিশুদের জন্য কুরআন স্পর্শ করার বিষয়ে ছাড় দিয়েছেন। যেহেতু তারা অজুর বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়।’

তবে শিশুদের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের করণীয় হলো- শিক্ষকরা অবশ্যই ছোট শিশুসহ যারা অজু সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না তাদেরকে অজু করার নির্দেশ দেবেন; যেন তারা অজু করায় অভ্যস্ত হতে পারে। বিশেষ করে যাদের বয়স সাত বছর। কারণ তারা অজুর নিয়ম-কানুন ভালোভাবে বুঝতে সক্ষম এবং তাদের অজু করার বিষয়ে শিক্ষকরা তদারকি করলে তাদের জন্য অজু করা তেমন জটিল বিষয়ও হবে না।

সুতরাং মাদরাসা কিংবা মক্তবে যারা ছোট ছোট শিশুদের পড়ানোর দায়িত্বে থাকেন; তারাই শিশুদের অজুর সঙ্গে কোরআন পড়ার বিষয়ে গড় তোলবেন। ফলে ছোট ছোট শিশুরা কোরআন স্পর্শ করারআগে অজুতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন ইন শা আল্লাহ। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আন্দোলন কারো জন্যই কল্যাণ বয়ে আনবে না : রিজভী

» হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেলেন নুরুল হক নুর

» দোহায় তৌহিদ হোসেন-ইসহাক দার বৈঠক

» বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত ঢাকা

» যমুনা অভিমুখে প্রাথমিক শিক্ষকরা, পুলিশের জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

» জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহযোগিতা করা হবে: আসিফ মাহমুদ

» নবীর আদর্শ মনে প্রাণে ধারণ করে জীবন গঠন হবে ….. জেলা প্রশাসক নরসিংদী 

» ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের উত্তরা ক্যাম্পাসে ইয়াং লার্নার ইংলিশ লার্নিং সেন্টার-এর নতুন শাখা চালু করল ব্রিটিশ কাউন্সিল

» ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’-এর অধীনে ব্র্যাক ব্যাংকের দেশব্যাপী আর্থিক সাক্ষরতা প্রোগ্রাম আয়োজন

» নওগাঁয় ডিবি পুলিশের অভিযানে মাদক কারবারি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ আটক ৩

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শিশুরা অজু ছাড়া ‘আমপারা-কায়দা’ ধরতে পারবে?

ছোট শিশুরা মক্তবে কিংবা মাদরাসায় কোরআন পড়ে। অনেককে কোরআন হিফজ করার জন্য দীর্ঘ সময় আমপারা-কায়দা বা কোরআন পড়তে হয়। দীর্ঘ সময় ধরে শিশুরা অজু রাখতে পারে না। আবার ঘন ঘন অজুও করতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে অজু ছাড়া কোরআন, আম্মাপারা/আমপারা বা নুরানি কায়দা ধরতে বা স্পর্শ করে পড়তে পারবে কি?

 

‘আমপারা বা আম্মাপারা’ মূলত কোরআনুল কারিমের ৩০তম পারার নাম। তা কোরআনুল কারিমের অংশ হিসেবে পরিগণিত। অজু ছাড়া গ্রন্থাকারে লিখিত কোরআনের মাসহাফ স্পর্শ বা ধরা যাবে কিনা তা দ্বিমতপূর্ণ। তবে অধিক বিশুদ্ধ মতে, মাসহাফ তথা লিখিত কোরআনের পাণ্ডুলিপি ধরার জন্য অজু করা আবশ্যক। কেননা আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে বলেছেন-

لَّا یَمَسُّهٗۤ اِلَّا الۡمُطَهَّرُوۡنَ

‘পূত-পবিত্রগণ ব্যতীত অন্য কেউ তা (কোরআন) স্পর্শ করে না।’ (সুরা ওয়াকিয়া : আয়াত ৭৯)

তবে শিশু শিক্ষার্থীসহ অন্য সবার জন্যই কোরআনের অংশ বা মাসহাফ ছাড়া নুরানি কায়দা, আরবি শিক্ষার বই; সাধারণ আরবি সাহিত্য, আরবি পত্রিকা, হাদিস, তাফসির, দোয়া এবং অন্যান্য ইসলামি বই-পুস্তক ধরার জন্য অজু থাকা জরুরি নয়।

 

শিশু বাচ্ছাদের ক্ষেত্রে ‘আমপারা/আম্মাপারা’ বা কোরআন কিংবা কোরআনের অংশ স্পর্শ করা কিংবা ধরার ব্যাপারে অনেক ইসলামিক স্কলার ছাড় দিয়েছেন। কারণ শিশুরা অজুর বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারে না বা জানে না।

এ সম্পর্কে সৌদি আরবের বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার শায়খ উসাইমিন রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন-

أن بعض أهل العلم رخص للصغار أن يمسوا القرآن لحاجتهم لذلك وعدم إدراكهم للوضوء

কতিপয় আহলে ইলম প্রয়োজন বশতঃ ছোট শিশুদের জন্য কুরআন স্পর্শ করার বিষয়ে ছাড় দিয়েছেন। যেহেতু তারা অজুর বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়।’

তবে শিশুদের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের করণীয় হলো- শিক্ষকরা অবশ্যই ছোট শিশুসহ যারা অজু সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না তাদেরকে অজু করার নির্দেশ দেবেন; যেন তারা অজু করায় অভ্যস্ত হতে পারে। বিশেষ করে যাদের বয়স সাত বছর। কারণ তারা অজুর নিয়ম-কানুন ভালোভাবে বুঝতে সক্ষম এবং তাদের অজু করার বিষয়ে শিক্ষকরা তদারকি করলে তাদের জন্য অজু করা তেমন জটিল বিষয়ও হবে না।

সুতরাং মাদরাসা কিংবা মক্তবে যারা ছোট ছোট শিশুদের পড়ানোর দায়িত্বে থাকেন; তারাই শিশুদের অজুর সঙ্গে কোরআন পড়ার বিষয়ে গড় তোলবেন। ফলে ছোট ছোট শিশুরা কোরআন স্পর্শ করারআগে অজুতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন ইন শা আল্লাহ। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com