শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল

মহান শহীদ দিবস ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল নেমেছে। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ফুল হাতে দলে দলে মানুষ এসে হাজির হয়েছেন শহীদ বেদিতে।

 

রোববার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাদের সামরিক সচিবেরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান। এরপর রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন দল ও সংস্থার ব্যক্তিবর্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ শেষে সাধারণ মানুষের জন্য শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ খুলে দেওয়া হয়। করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সারিবদ্ধভাবে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফিরে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

 

শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা অনেকের হাতেই ফুল ও প্লেকার্ড শোভা পায়। অনেকে কালো পোশাক পরে হাজির হয়েছেন ভাষা শহীদদের স্মৃতির বেদিতে।

 

এবারো শহীদ মিনারে আসা সবাইকে মানতে হচ্ছে মহামারিকালের বিশেষ সতর্কতা। মাস্ক পরা এবং নির্দিষ্ট রুটম্যাপ অনুসরণ করতে দেখা গেছে সবাইকে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঁচ এবং ব্যক্তিপর্যায়ে সর্বোচ্চ দুজন করে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। তবে শ্রদ্ধা নিবেদনের শুরুতেই এসব কড়াকড়ি মানা হলেও সর্বসাধারণের উপচেপড়া ভিড়ে পরে তা অনেকটাই ঢিলেঢালা হয়ে যেতে দেখা যায়।

 

প্রথম প্রহরে ফুল দেওয়ার জন্য ছাত্র-জনতা ব্যানার, পোস্টার, ফুলের তোড়া নিয়ে নির্দেশিত রুটম্যাপ অনুযায়ী পলাশীর মোড় হয়ে জগন্নাথ হলের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সর্বসাধারণের জন্য শহীদ মিনারের মূল ফটক খুলে দিলে দলবদ্ধ ও এককভাবে শহীদ মিনারে প্রবেশ করে তারা।

 

এর আগে ১২টা ১ মিনিটে অমর একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

 

এসময় বিউগলে বেজে উঠে রক্তে শিহরণ তোলা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সুর। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিবরা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

১৯৫২ সালের এই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করলে ছাত্র-জনতা তা ভঙ্গ করে মিছিল নিয়ে রাজপথে নামে। সেই মিছিলে গুলি চালালে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ বীর শহীদদের রক্তে রঞ্জিত হয় ঢাকার রাজপথ। মহান সেই ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণেই নির্মিত হয় শহীদ মিনার। প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে এসে শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানায় গোটা জাতি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আ.লীগের ব্যবসাগুলো কারা চালায় আমরা জানি: হাসনাত আবদুল্লাহ

» এনসিপি ১০ জনের একটা দল, সেখানেও যৌন হয়রানি: রুমিন ফারহানা

» ‘দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন’: গয়েশ্বর

» ভারতের মোদিকে কসাই আখ্যা দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ

» রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থীর চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ

» সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতায় থাকতে চাওয়া হবে দুঃস্বপ্ন

» আওয়ামী লীগ সারাদেশকেই কারবালার প্রান্তরে পরিণত করেছিল : মির্জা ফখরুল

» পবিত্র আশুরা শোক, শ্রদ্ধা ও আত্মত্যাগের দিন: তারেক রহমান

» পবিত্র আশুরা অবিচারের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠায় সাহস জোগাবে : প্রধান উপদেষ্টা

» করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল

মহান শহীদ দিবস ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল নেমেছে। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ফুল হাতে দলে দলে মানুষ এসে হাজির হয়েছেন শহীদ বেদিতে।

 

রোববার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাদের সামরিক সচিবেরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান। এরপর রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন দল ও সংস্থার ব্যক্তিবর্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ শেষে সাধারণ মানুষের জন্য শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ খুলে দেওয়া হয়। করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সারিবদ্ধভাবে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফিরে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

 

শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা অনেকের হাতেই ফুল ও প্লেকার্ড শোভা পায়। অনেকে কালো পোশাক পরে হাজির হয়েছেন ভাষা শহীদদের স্মৃতির বেদিতে।

 

এবারো শহীদ মিনারে আসা সবাইকে মানতে হচ্ছে মহামারিকালের বিশেষ সতর্কতা। মাস্ক পরা এবং নির্দিষ্ট রুটম্যাপ অনুসরণ করতে দেখা গেছে সবাইকে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঁচ এবং ব্যক্তিপর্যায়ে সর্বোচ্চ দুজন করে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। তবে শ্রদ্ধা নিবেদনের শুরুতেই এসব কড়াকড়ি মানা হলেও সর্বসাধারণের উপচেপড়া ভিড়ে পরে তা অনেকটাই ঢিলেঢালা হয়ে যেতে দেখা যায়।

 

প্রথম প্রহরে ফুল দেওয়ার জন্য ছাত্র-জনতা ব্যানার, পোস্টার, ফুলের তোড়া নিয়ে নির্দেশিত রুটম্যাপ অনুযায়ী পলাশীর মোড় হয়ে জগন্নাথ হলের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সর্বসাধারণের জন্য শহীদ মিনারের মূল ফটক খুলে দিলে দলবদ্ধ ও এককভাবে শহীদ মিনারে প্রবেশ করে তারা।

 

এর আগে ১২টা ১ মিনিটে অমর একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

 

এসময় বিউগলে বেজে উঠে রক্তে শিহরণ তোলা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সুর। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিবরা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

১৯৫২ সালের এই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করলে ছাত্র-জনতা তা ভঙ্গ করে মিছিল নিয়ে রাজপথে নামে। সেই মিছিলে গুলি চালালে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ বীর শহীদদের রক্তে রঞ্জিত হয় ঢাকার রাজপথ। মহান সেই ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণেই নির্মিত হয় শহীদ মিনার। প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে এসে শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানায় গোটা জাতি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com