লালমনিরহাটে কাঁটাতার মাঝে রেখে দুই বাংলার মিলন মেলা

আজিজুল ইসলাম বারী, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ দীপালী রানী (৫৪)। বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর এলাকায়।
মঙ্গলবার ( ২৫ অক্টোবর) ভোর রাতে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের মেচেরঘাট সীমান্তে এসে বসে আছে। সকাল হলে সীমান্তে কালী পূজা উপলক্ষে দুই বাংলার লোকজনের দেখার করার সুযোগ দিবে ভারতীয় সীমান্তের বাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তার খালাতো বোনের ছেলে জয়ধর বাবুর সাথে দেখা হয়। দেখা হলেও ভাগিনাকে ধরিয়ে ধরে আদর করেতে পারেনি দীপালী রানী। কারণ ধরিয়ে ধরার মাঝে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে দুই বাংলার সীমান্তে কাটাতারের বেড়া।
ভাতিজার সাথে দেখা করে ফেরার পথে দীপালী রানী জানান, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় তার খালা-খালু ভারতে চলে যায়। সেই সময় ছোট খালা দুইবোনের সাথে শেষ দেখা হয়। কয়েক বছর আগেও এক বার খালাতো বোনের সাথে দেখা হয়ে ছিলো দীপালী রানী। কিন্তু গত বছর তার সেই খালাতো বোন মারা গেলেও যেতে পারে নাই। আজ তার ভাগিনাদের কাছে পেলেও ধরিয়ে ধরতে পারে নাই।
দুই বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের মেচেরঘাট সীমান্তে কালী পুজা উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে দুই বাংলার এ মিলন মেলা বসে।
শুধু দীপালী রানী নয়, তার মত শত শত মানুষ সীমান্তে ছুটে এসেছে রক্তের টানে। দীর্ঘদিন পর কাছের লোকজনদের দেখতে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তবে অনেকই প্রাণের টানে ছুটে এলেও আত্মীয়দের দেখা না পেয়ে মন খারাপ করেও ফিরে গেছেন।
মিলন মেলায় আসা সফিকুল ইসলাম, রবিন্দ্র নাথ জানান, বছরে একটা দিন আমরা কালী পূজা উপলক্ষে আমাদের আপন জনের দেখা করার সুযোগ পায়। সে যেন অব্যাহত থাকে। আইনের জটিলতা দিয়ে যেন এ মিলন মেলা বন্ধ না হয়। তারা আরো বলেন বছরে এমন একটি মিলনমেলা আমাদের মানবিক পৃথিবী তৈরীতে ভুমিকা রাখবে।
পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রবিউল হক মিরন বলেন, এ সীমান্তে প্রতিবছর কালী পূজা উপলক্ষে দুই বাংলার মিলন মেলা বসে। এতে অনেকেই তাদের পুরাতন আত্মীয় স্বজনের দেখা করতে পেয়ে বেশি খুশি মনে বাড়ি ফিরেন। এটা অব্যাহত থাকা প্রয়োজন।
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» গুমের সঙ্গে জড়িত সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে : সেনা সদর

» আশুরা-তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে ডিএমপির একগুচ্ছ পরামর্শ

» স্ত্রীর কিডনিতে জীবন ফিরে পেয়ে পরকীয়ায় জড়ালেন স্বামী!

» যুবককে গলা কেটে হত্যা, প্রধান আসামি গ্রেফতার

» স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ১৯ হাজার ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট দিল চীন

» পেন্টাগনের মূল্যায়ন: কতোটা ক্ষতি হলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির?

» সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন নির্দেশনা মাউশির

» ইতালির নাগরিক তাবেলা হত্যা: ৩ জনের যাবজ্জীবন, ৪ জন খালাস

» টেলিকম নীতিমালায় সরকারের তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে বিএনপির উদ্বেগ

» এইচএসসি পরীক্ষার্থীর ছুরিকাঘাত করে ভ্যানিটি ব্যাগ ও মোবাইল ছিনতাই

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

লালমনিরহাটে কাঁটাতার মাঝে রেখে দুই বাংলার মিলন মেলা

আজিজুল ইসলাম বারী, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ দীপালী রানী (৫৪)। বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর এলাকায়।
মঙ্গলবার ( ২৫ অক্টোবর) ভোর রাতে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের মেচেরঘাট সীমান্তে এসে বসে আছে। সকাল হলে সীমান্তে কালী পূজা উপলক্ষে দুই বাংলার লোকজনের দেখার করার সুযোগ দিবে ভারতীয় সীমান্তের বাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তার খালাতো বোনের ছেলে জয়ধর বাবুর সাথে দেখা হয়। দেখা হলেও ভাগিনাকে ধরিয়ে ধরে আদর করেতে পারেনি দীপালী রানী। কারণ ধরিয়ে ধরার মাঝে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে দুই বাংলার সীমান্তে কাটাতারের বেড়া।
ভাতিজার সাথে দেখা করে ফেরার পথে দীপালী রানী জানান, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় তার খালা-খালু ভারতে চলে যায়। সেই সময় ছোট খালা দুইবোনের সাথে শেষ দেখা হয়। কয়েক বছর আগেও এক বার খালাতো বোনের সাথে দেখা হয়ে ছিলো দীপালী রানী। কিন্তু গত বছর তার সেই খালাতো বোন মারা গেলেও যেতে পারে নাই। আজ তার ভাগিনাদের কাছে পেলেও ধরিয়ে ধরতে পারে নাই।
দুই বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের মেচেরঘাট সীমান্তে কালী পুজা উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে দুই বাংলার এ মিলন মেলা বসে।
শুধু দীপালী রানী নয়, তার মত শত শত মানুষ সীমান্তে ছুটে এসেছে রক্তের টানে। দীর্ঘদিন পর কাছের লোকজনদের দেখতে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তবে অনেকই প্রাণের টানে ছুটে এলেও আত্মীয়দের দেখা না পেয়ে মন খারাপ করেও ফিরে গেছেন।
মিলন মেলায় আসা সফিকুল ইসলাম, রবিন্দ্র নাথ জানান, বছরে একটা দিন আমরা কালী পূজা উপলক্ষে আমাদের আপন জনের দেখা করার সুযোগ পায়। সে যেন অব্যাহত থাকে। আইনের জটিলতা দিয়ে যেন এ মিলন মেলা বন্ধ না হয়। তারা আরো বলেন বছরে এমন একটি মিলনমেলা আমাদের মানবিক পৃথিবী তৈরীতে ভুমিকা রাখবে।
পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রবিউল হক মিরন বলেন, এ সীমান্তে প্রতিবছর কালী পূজা উপলক্ষে দুই বাংলার মিলন মেলা বসে। এতে অনেকেই তাদের পুরাতন আত্মীয় স্বজনের দেখা করতে পেয়ে বেশি খুশি মনে বাড়ি ফিরেন। এটা অব্যাহত থাকা প্রয়োজন।
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com