লক্ষ্মীপুর বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে বিদ্যালয়ে ইউএনও’র নান্দনিক লাইব্রেরি স্থাপন

অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি  : একসময় ছাত্র-ছাত্রীদের বই পড়ে সম কাটলেও এ যুগের ছাত্র-ছাত্রীদের সময় কাটে মোবাইল দেখে। এতে বেড়েছে নানা অনৈতিক ও অসামাজিক দৈন্যতা। সমাজে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও ঘটছে নানান অপ্রীতিকর ঘটনা। যা কারোই কাম্য ছিলো নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং মোবাইল থেকে বিমুখ রাখতে ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান।
সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সদর উপজেলার পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অত্যাধুনিক মানসম্পন্ন ‘ওডেন ফ্লোর লাইব্ররি’ স্থাপন করেন তিনি। আধুনিক ও নান্দনিক ডেকোরেশন সমৃদ্ধ লাইব্রেরি পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরাও।
জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ২১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি স্থাপনের উদ্যোগ নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান। উদ্যোগের শুরুতে পাঁচটি বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে পাঁচটি নান্দনিক লাইব্রেরি।
লাইব্রেরি স্থাপন করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ভবানীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, পালপাড়া ডিএম উচ্চ বিদ্যালয়, দালাল বাজার ফাতেমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নুরুল্যাপুর আনজুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়।
লাইব্রেরি গুলোতে ইতিমধ্যে বই সরবরাহ করা হয়েছে। এরমধ্যে স্থান পেয়েছে রাজনীতি, সমাজনীতি, দর্শন, উপন্যাস, গল্প, কবিতা, এশিয়ান ইতিহাস, প্রখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী ও আত্ম উন্নয়নমূলক বই। লাইব্রেরি স্থাপন করা বিদ্যালয় গুলোর শিক্ষার্থীরা বলেন, বই মানুষের প্রকৃত বন্ধু। কিন্তু বর্তমানে আমরা বেশি মোবাইলমুখী হওয়ায় বই থেকে দূরে সরে গেছি। এ লাইব্রেরি আমাদের বইমুখী করবে। লাইব্রেরি গুলো থেকে আমরা জ্ঞানের পরিধি আরও বেশি সমৃদ্ধ করতে পারবো।
প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাবাসসুম, হাবিবা, রিপাত চৌধুরী ও সানি বলেন, আগে মধ্যাহ্ন বিরতিতে ও অন্যান্য সময়ে মোবাইল দেখে বা গল্প করে আমাদের সময় কাটতো। ইউএনও স্যার আমাদের বিদ্যালয়ে নান্দনিক লাইব্রেরি করে দিয়েছে। তাই এখন বই পড়ে আমারা সময় কাটাবো। এতে আমরা অসামাজিক কার্যকলাপ থেকেও মুক্ত থাকতে পারবো।
প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এটি একটি মহৎউদ্যোগ। প্রত্যেকটি স্কুলেই লাইব্রেরি প্রয়োজন রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা মোবাইলের প্রতি যেভাবে আশক্ত হয়ে পড়ছে বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি থাকলে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। তাছাড়া লাইব্রেরি থাকলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধিও বাড়বে। লাইব্রেরি স্থাপনের এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান সাংবাদিক অ আ আবীর আকাশকে বলেন-‘বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা মোবাইলমুখী হয়ে পড়েছে। এর অন্যতম কারন হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভালো মানের বইও নেই, লাইব্রেরিও নেই। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ২১টি বড় প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি স্থাপন করবো। তারই ধারাবাহিকতায় পাঁচটি বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি স্থাপন করেছি। ইতিমধ্যে লাইব্রেরি গুলোতে বইও সরবরাহ করা হয়েছে। আশাকরি সেই বই পড়লে তাদের পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে এবং জ্ঞানের পরিধিও বাড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেখেছি এবিষয়ে শিক্ষার্থীদেরও আগ্রহ আছে। অচিরেই অন্য প্রতিষ্ঠান গুলোতেও লাইব্রেরি স্থাপন করা হবে।আমার লক্ষ্য একটাই, মোবাইল আসক্তি থেকে বের হয়ে সুনাগরিক হিসেবে যেন ছাত্রছাত্রীরা গড়ে উঠে।’
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ‘মেট্রোরেলে আগুন ও পুলিশ হত্যার’ বক্তব্যে সমন্বয়ক হাসিবকে শোকজ

» দক্ষিণ কোরিয়াকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

» কিছুটা কমল স্বর্ণের দাম

» স্যানিটারি ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

» রাজনৈতিক দলের অফিসে আগুনের নিন্দা রিজভীর

» ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল, সদস্য সচিব মোস্তফা

» বিএনপির ৪ মহানগর, ৬ জেলার কমিটি ঘোষণা

» ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের বিশেষ চেকপোস্ট কার্যক্রম শুরু

» স্ত্রীসহ সাবেক মেয়র তাপসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

» সংস্কার শেষে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

লক্ষ্মীপুর বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে বিদ্যালয়ে ইউএনও’র নান্দনিক লাইব্রেরি স্থাপন

অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি  : একসময় ছাত্র-ছাত্রীদের বই পড়ে সম কাটলেও এ যুগের ছাত্র-ছাত্রীদের সময় কাটে মোবাইল দেখে। এতে বেড়েছে নানা অনৈতিক ও অসামাজিক দৈন্যতা। সমাজে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও ঘটছে নানান অপ্রীতিকর ঘটনা। যা কারোই কাম্য ছিলো নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং মোবাইল থেকে বিমুখ রাখতে ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান।
সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সদর উপজেলার পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অত্যাধুনিক মানসম্পন্ন ‘ওডেন ফ্লোর লাইব্ররি’ স্থাপন করেন তিনি। আধুনিক ও নান্দনিক ডেকোরেশন সমৃদ্ধ লাইব্রেরি পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরাও।
জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ২১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি স্থাপনের উদ্যোগ নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান। উদ্যোগের শুরুতে পাঁচটি বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে পাঁচটি নান্দনিক লাইব্রেরি।
লাইব্রেরি স্থাপন করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ভবানীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, পালপাড়া ডিএম উচ্চ বিদ্যালয়, দালাল বাজার ফাতেমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নুরুল্যাপুর আনজুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়।
লাইব্রেরি গুলোতে ইতিমধ্যে বই সরবরাহ করা হয়েছে। এরমধ্যে স্থান পেয়েছে রাজনীতি, সমাজনীতি, দর্শন, উপন্যাস, গল্প, কবিতা, এশিয়ান ইতিহাস, প্রখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী ও আত্ম উন্নয়নমূলক বই। লাইব্রেরি স্থাপন করা বিদ্যালয় গুলোর শিক্ষার্থীরা বলেন, বই মানুষের প্রকৃত বন্ধু। কিন্তু বর্তমানে আমরা বেশি মোবাইলমুখী হওয়ায় বই থেকে দূরে সরে গেছি। এ লাইব্রেরি আমাদের বইমুখী করবে। লাইব্রেরি গুলো থেকে আমরা জ্ঞানের পরিধি আরও বেশি সমৃদ্ধ করতে পারবো।
প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাবাসসুম, হাবিবা, রিপাত চৌধুরী ও সানি বলেন, আগে মধ্যাহ্ন বিরতিতে ও অন্যান্য সময়ে মোবাইল দেখে বা গল্প করে আমাদের সময় কাটতো। ইউএনও স্যার আমাদের বিদ্যালয়ে নান্দনিক লাইব্রেরি করে দিয়েছে। তাই এখন বই পড়ে আমারা সময় কাটাবো। এতে আমরা অসামাজিক কার্যকলাপ থেকেও মুক্ত থাকতে পারবো।
প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এটি একটি মহৎউদ্যোগ। প্রত্যেকটি স্কুলেই লাইব্রেরি প্রয়োজন রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা মোবাইলের প্রতি যেভাবে আশক্ত হয়ে পড়ছে বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি থাকলে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। তাছাড়া লাইব্রেরি থাকলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধিও বাড়বে। লাইব্রেরি স্থাপনের এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান সাংবাদিক অ আ আবীর আকাশকে বলেন-‘বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা মোবাইলমুখী হয়ে পড়েছে। এর অন্যতম কারন হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভালো মানের বইও নেই, লাইব্রেরিও নেই। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ২১টি বড় প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি স্থাপন করবো। তারই ধারাবাহিকতায় পাঁচটি বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি স্থাপন করেছি। ইতিমধ্যে লাইব্রেরি গুলোতে বইও সরবরাহ করা হয়েছে। আশাকরি সেই বই পড়লে তাদের পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে এবং জ্ঞানের পরিধিও বাড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেখেছি এবিষয়ে শিক্ষার্থীদেরও আগ্রহ আছে। অচিরেই অন্য প্রতিষ্ঠান গুলোতেও লাইব্রেরি স্থাপন করা হবে।আমার লক্ষ্য একটাই, মোবাইল আসক্তি থেকে বের হয়ে সুনাগরিক হিসেবে যেন ছাত্রছাত্রীরা গড়ে উঠে।’
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com