কদিন আগেও হয়তো কাজী নুরুল হাসান সোহান জানতেন না, বাংলাদেশের পরবর্তী টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হতে যাচ্ছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে মাহমুদউল্লাহর হাতে ছিল আর্মব্র্যান্ড। আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলাবেন সোহান। তার কাঁধে পাকাপাকিভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে টগবগে সোহানকে ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে গড়ে তুলতে চায় বিসিবি।
জিম্বাবুয়ে সফরে যাওয়ার আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন সোহান। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সংবাদ সম্মেলনের অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে খুব বেশি রোমাঞ্চ দেখালেন না তিনি। বরং মাঠের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা বললেন, ‘এটা (অধিনায়ক) তো অবশ্যই গর্বের ব্যাপার। সামনে যে চ্যালেঞ্জ আছে সেটা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছি। খুব বেশি রোমাঞ্চ দেখানোর সুযোগ নেই। আমার কাছে মনে হয়, দল হিসেবে এবং নিজেদের সেরা দেওয়াটাই মূল লক্ষ্য।
ঘরোয়া ক্রিকেটে সোহান নিয়মিত অধিনায়ক। ঢাকা লিগ, জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে অধিনায়কত্ব করেছেন নিয়মিত। সাফল্য পেয়েছেন দুহাত ভরে। ঢাকা লিগে চ্যাম্পিয়ন, জাতীয় লিগেও হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন। আগ্রাসী ক্রিকেটার আগ্রাসী অধিনায়ক হবেন এমনটাই প্রত্যাশা। তবে দলে স্বাস্থ্যকর সংস্কৃতি এনে ভালো ফল বের করে আনার দিকে মনোযোগ সোহানের, ‘আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে যখনই অধিনায়কত্ব করেছি, আমার সব সময় চাওয়া থাকে আমরা যেন দল হিসেবে খেলতে পারি। অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে জিম্বাবুয়েতে যেন দল হিসেবে খেলতে পারি। মূল যে বিষয়টি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ… দলের পরিবেশ যেন ভালো থাকে। সবাই তো প্রতিদিন পারফর্ম করবে না। আমরা যারা দলের ক্রিকেটার থাকবো ১৪-১৫ জন, তারা যেন একজনের সাফল্য আরেকজন উপভোগ করি। এই সংস্কৃতি এবং দল হিসেবে খেলাটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নতি হলেও টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে পিছিয়ে। ছয় বছর জাতীয় দলের সঙ্গে থেকে সোহান খুব কাছ থেকেই দলের পরিবেশ সম্পর্কে জানেন। কিছুটা বুঝেছেনও। টি-টোয়েন্টিতে রাতারাতি উন্নতি সম্ভব নয়। তাই তো নিজেদের কাজের প্রক্রিয়া ঠিক রাখায় জোর দিচ্ছেন নতুন অধিনায়ক, ‘আমরা টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে ওয়ানডে থেকে পিছিয়ে আছি। আমার কাছে মনে হয় উন্নতি করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেটাই চেষ্টা করছি। এজন্য প্রক্রিয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। রেজাল্ট বা আউটকামের থেকে প্রক্রিয়া মেনে চলার চেষ্টা করবো। এই সিরিজে দলগতভাবে খেলা আমার কাছে বড় কাজ বলে মনে হচ্ছে।
অধিনায়কত্ব পেয়ে আকাশে উড়ছেন না উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। দলে তার জায়গা এখনও পাকাপাকি হয়নি অথচ অধিনায়কত্বের চাপ তার কাঁধে। ঠিকঠাক মতো দল পরিচলনা, ফল নিয়ে আসা, পরিকল্পনা করা, সতীর্থদের সামলে নেওয়া সবকিছুই এখন তার কাজের আওতাভুক্ত।
দায়িত্ব বাড়লেও নিজেকে খুব স্বাভাবিক ও চাপমুক্ত রেখে এগিয়ে যাওয়ার কথা বললেন সোহান, ‘আমি যদি আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলি, এই যে ক্রিকেট বা অন্য কিছু… আমার কাছে প্রত্যাশা খুব কম। কিংবা এক্সাইটমেন্ট এগুলো আমার কাছে কম। আমার আছে মনে হয়, আমি নিজে আমার কঠোর পরিশ্রম করবো, প্রক্রিয়া অনুসরণ করবো, নিজে সৎ থাকবো। ফলাফল, ভবিষ্যৎ, অতীত এগুলো নিয়ে আমি খুব একটা চিন্তা করি না। যেটা বললেন, চাপ… সেগুলো থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি। অনেক দিন ধরেই এটা করার চেষ্টা করছি। এগুলো আমার কাছে খুব একটা গ্রহণযোগ্য নয়।