রিজার্ভের টাকা দেশের মানুষের উন্নয়নেই কাজে লাগানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পায়রা বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং ও আটটি জাহাজের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রিজার্ভের টাকা গেছে মানুষের খাদ্য কেনায়, মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য। এটা কেউ চিবিয়ে খায়নি। এই টাকা মানুষের কাজে লাগছে। মানুষের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের আমদানিতে বিভিন্ন কাজে আমরা কাজে লাগাচ্ছি। রিজার্ভের টাকা সমুদ্রবন্দরকে লোন দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পায়রা নদীতে ড্রেজিং হয়ে গেলে এই নৌপথটা একেবারে আমরা উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত নিয়ে যাবো। পাশাপাশি আসাম ও ভুটান পর্যন্ত নৌপথ চালু করতে পারব। আমাদের চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর, ভুটান, নেপাল এবং ইন্ডিয়াকে ব্যবহার করবার জন্য আমরা তাদেরকে সুযোগ দিয়েছি। পায়রা বন্দরটাও কিন্তু একসময় অন্য ধরনের একটা গুরুত্ব বহন করবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকে আমরা পায়রা বন্দর এবং একই সঙ্গে আটটি জাহাজের উদ্বোধন করব। সেই সঙ্গে ছয় লেন সংযোগ সড়ক, আন্ধারমানিক নদীর উপরে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হতে যাচ্ছে। বন্দরে আটটি জাহাজের মধ্যে সাতটি আমাদের দেশে তৈরি। এটা দেশের বিভিন্ন শিপইয়ার্ডে তৈরি করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমি নৌপথকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেই। কারণ নৌপথ সবচেয়ে অল্প খরচে করা যাবে এবং নৌ পথে সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারব। ফলে আমাদের বাংলাদেশের নদীমাতৃক দেশ আমাদের সড়কপথ, রেলপথ, নৌপথ, বিমান যোগাযোগ সবই আমাদের সমন্বিতভাবে হচ্ছে। এখানে আমাদের নৌবাহিনীর ঘাঁটি তৈরি হয়েছে। সেনাবাহিনীর একটি সেনা ছাউনি করা হয়েছে। বিমান বাহিনীর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ শুধুমাত্র সড়কে নয়, সবদিক থেকে আমরা একটা যোগাযোগ করতে পারছি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বন্দরের কার্যক্রম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক করিডোরে পায়রা সমুদ্র বন্দরের যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে দেশে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা, দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবং বহু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
চিলমারী বন্দর চালু করা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের উত্তর এবং মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন ফেরিরোড চালুকরণ এবং নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করা হচ্ছে। খুলনার নদীর নাব্যতা উন্নয়ন, ঢাকা নদী বন্দরের চারপাশের নদীর ড্রেজিং করা এবং নৌপথ সচল করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলো পরিষ্কার রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বিশ্বের নদীর উন্নয়ন হলে দেশের মানুষের অর্থনীতিতে যেমন সমৃদ্ধ আসবে একইভাবে বৈদেশিক পর্যটকদের বাংলাদেশে আগমন ঘটবে।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের সবগুলো অঞ্চলের মানুষ সমান উন্নত জীবন পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।