রাজধানীর কচুক্ষেত এলাকায় রজনীগন্ধা টাওয়ারে রাঙাপরী জুয়েলার্সের দুটি দোকানে তালা ভেঙে ৩০০ ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ বলছে, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে যাদের চেহারা শনাক্ত করা গেছে তারা সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে চাকরি নেয় ভুয়া পরিচয় দিয়ে। এ কারণে আসামিদের গ্রেফতারে সময় লাগছে।
ভাষানটেক থানা সূত্রে জানা যায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা থেকে পরদিন ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের মধ্যে রজনীগন্ধা টাওয়ারের নিচতলায় রাঙাপরী জুয়েলার্সের দুটি দোকানে চুরি হয়। এ ঘটনায় ভাষানটেক থানায় একটি মামলা হয়।
পুলিশ বলছে, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে থাকা চার ব্যক্তির চেহারা শনাক্ত করা গেছে। তাদের দুজন রজনীগন্ধা কমপ্লেক্সের নিরাপত্তাকর্মী। কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বেস্ট সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস লিমিটেডের মাধ্যমে দুজনকে চাকরি দেয়। ঘটনার পর ওই দুই ব্যক্তির তথ্য পর্যালোচনা করে জানা যায়, তারা নিজেদের সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়েছিল। চেহারা শনাক্ত হলেও তাদের দেওয়া তথ্যগত ভুলের কারণে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ কারণে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান বেস্ট সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিক লিমিটেডও ঘটনার দায় এড়াতে পারে না বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হতে পারে আইনগত ব্যবস্থা।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজ থেকে শনাক্ত হওয়া অপরাধীরা হলো মনির হোসেন, আলম হাওলাদার ও নুর ইসলাম। আরেকজনের নাম জানা যায়নি। নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে রজনীগন্ধা কমপ্লেক্সে কর্মরত ছিলেন আলম। মনির ছিলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। দুজনকে গ্রেফতার করা গেলে সঙ্গে থাকা অন্য দুজনের পরিচয়ও নিশ্চিত হওয়া যাবে।
রাঙাপরী জুয়েলার্সে চুরির ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মনির হোসেন ও আলম হাওলাদার অপর তিন ব্যক্তিকে স্বর্ণের দোকানে ঢুকতে ও বের হতে সহায়তা করছেন। নিরাপত্তাকর্মী মনির ও আলম ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
ভাষানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, চুরির ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চারজনকে শনাক্ত করা গেছে। দুজনের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের তথ্য নিতে গিয়ে বিভিন্ন গরমিল পেয়েছি সিকিউরিটি এজেন্সির কাছ থেকে। এ ব্যাপারে বেস্ট সিকিউরিটি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কাছে থাকা বিভিন্ন তথ্য আমাদের কাছে দিয়েছে।
তবে এ ঘটনার দায় তারা এড়াতে পারে না জানিয়ে ওসি বলেন, তথ্য যাচাই-বাছাই না করে তারা তাদের চাকরি দিয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
চুরির ঘটনার পরদিন ৫ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী দোকান মালিক আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, তার দুটি দোকানের তালা কেটে চুরি করেছে। দোকানের দুটি লকার ভেঙে প্রায় ৩০০ ভরি স্বর্ণ, ৩০ লাখ টাকার ডায়মন্ডের জিনিসপত্র ও নগদ পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে গেছে চোরেরা। সূএ:জাগো নিউজ