স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীতে যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণের সময় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পাশাপাশি সিটি করপোরেশন থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
আজ সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জলাবদ্ধতা নিরসনে বেদখল হয়ে যাওয়া খালগুলো উদ্ধারে জোর দিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দ্রুত পদক্ষেপ নিলে জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব। কাউকে দোষারোপ করে নয় জলাবদ্ধতা নিরসনে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। যেকোনো প্রকল্পের কারণে জনগণের অসুবিধা হলে সিটি করপোরেশন সেটা বন্ধ করে দিতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যে খালগুলো উদ্ধার সম্ভব হলে জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘খাল যে অবস্থায় ছিলো সেটি নষ্ট হয়েছে। এখন সেটিকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। কাউকে দোষারোপ করে নয়, যার যা দায়িত্ব তা পালন করতে হবে। ৫৩ টা খালের কৃত্বিত ঢাকা নগরের দায়িত্ব আছে। খাল দখল করে বিল্ডিং করা হচ্ছে, রাজউকের দায়িত্ব এসব দেখা।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে কমিটি করে দেওয়া হবে। ইস্টার্ন হাউজিং যেখানে অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে সিটি করপোরেশনকে। আগামী মৌসুমে কোনো জলাবদ্ধতা হবে না, এজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।
সভায় উপস্থিত ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর খাল হস্তান্তর পরে ২ জানুয়ারি কাজ শুরু করেছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রথমে খাল পরিস্কার শুরু হয়। ২০২১ সালে যেখানে যেখানে জলাবদ্ধতা হয়েছে এমন ১০০ টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন। স্লুইচ গেটের মেরামতের কাজ চলছে। শ্যামপুর শিল্পাঞ্চল পানি নিষ্কাশনের জন্য স্লুইস গেটের কাজ হয়েছে। এই খালগুলো পুনরুদ্ধার ৯০০ কোটির টাকার বেশি প্রকল্প পরিকল্পনা করে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলে পুনরুদ্ধার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বাধাগ্রস্থ হচ্ছি বিআইডব্লিউটিএর কাজের মাধ্যমে। তারা এমন কিছু কাজ করছে যা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘২৯টি খাল পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি খালে সীমানা পিলার নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। মিরপুর বেড়িবাঁধ থেকে ইষ্টার্ন হাউজিং হয়েছে। তারা খাল দখল করেছে। আদি খালের উপর বেলি ব্রিজ করে দিতে হবে।’
চট্টগ্রামের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, অনেক খাল ভরাট হয়ে গেছে। প্রকল্প গুলোর কাজ করতে গিয়ে জলাবদ্ধতা তৈরী হয়। এবারও যদি মাটি সরিয়ে না দেওয়া হয় তবে গতবছরের তুলনায় পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। চট্টগ্রামের যে ২১টি খাল আছে যেগুলো এখনও হাত দেওয়া হয়নি সেগুলোর বিষয়ে পরিকল্পনা আছে। ৩৬টি খালের কাজ চলমান আছে। ব্যর্জ ব্যবস্থপনা কাজ চলছে। ৪০টি রেগুলেটর নির্মাণের কাজ চলছে।
আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশন কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য এ সভার আয়োজন করা হয়।