আবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, তার দেশের সীমান্ত থেকে রুশ বাহিনী প্রত্যাহারের কোনো ঘটনা এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়নি। বুধবার এক সামরিক প্রশিক্ষণস্থল থেকে বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি। এর আগের দিন ইউক্রেন সীমান্ত থেকে কিছু সামরিক ইউনিট সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয় মস্কো। পুতিন প্রশাসনের ওই ঘোষণার পর এ নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এটিই প্রথম কোনো প্রতিক্রিয়া। ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘সত্যি বলতে আমরা আমাদের বাস্তবতার আলোকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছি। আমরা এখনো কোনো প্রত্যাহার দেখতে পাচ্ছি না। আমরা শুধু এটা শুনেছি।’ এদিকে ন্যাটো প্রধান সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি প্রমাণ দিতে রাশিয়ার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। তাছাড়া জেনস স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, রাশিয়া সীমান্তে সৈন্য ও ট্যাংক আনা-নেওয়া করে থাকে। এটিকে সেনা প্রত্যাহার হিসেবে ধরা যায় না। এ ব্যাপারে স্টলটেনবার্গ বলেন, যদি তারা সত্যিই সেনা প্রত্যাহার শুরু করে থাকে, তাহলে এটিকে আমরা স্বাগত জানাই। তিনি একই সঙ্গে মন্তব্য করেন, রাশিয়া সব সময় সৈন্য ও ট্যাংক মোতায়েন করে আবার নিয়ে যায়। তাই এটিকে আমরা সৈন্যদের অবস্থান পরিবর্তন হিসেবেই ধরছি। এটিকে সৈন্য প্রত্যাহার বলা যায় না।
এদিকে মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন তার দেশ যুদ্ধ চায় না। তবে নিরাপত্তার বিষয়ে রাশিয়ার উদ্বেগের বিষয়গুলোকে আমলে নিতে হবে। মঙ্গলবার মস্কোতে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলতজের সঙ্গে চার ঘণ্টা বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মূলত ইউক্রেন ঘিরে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশের জেরে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে তা প্রশমিত করতে শেষ ইউরোপীয় নেতা হিসেবে ওলাফ শুলতজে এ সফর করেন। এর আগে একই বিষয়ে মস্কো সফর করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুুয়েল ম্যাক্রেঁাঁ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আসলে ইউক্রেন সীমান্তে কী হচ্ছে তা কেউই আন্দাজ করতে পারছে না। সীমান্ত থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের কথা বললেও কোনো শক্ত দলিল পেশ করেনি মস্কো। ফলে সীমান্তে রহস্য জিইয়ে রেখেছেন ভøাদিমির পুতিন।
ইউক্রেনে সাইবার হামলা : ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার শুরুর দিনই সাইবার হামলার শিকার হয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুই ব্যাংকের ওয়েবসাইট। গতকাল রয়টার্স জানায়, মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটটি হ্যাক হয়। একই সময়ে রাজধানী কিয়েভের দুই ব্যাংকের ওয়েবসাইটে হামলা চালিয়ে ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক পঙ্গু করে দেয় হ্যাকাররা, যার ফলে গ্রাহকরা পড়েন সীমাহীন ভোগান্তিতে। এ বিষয়ে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা বিভাগের কোনো কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হননি। একজন ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেছেন, এই হ্যাকিং উদ্বেগজনক কারণ ইউক্রেনের ওপর একটি পূর্ণমাত্রার সামরিক হামলার পূর্ববর্তী ঘটনা হতে পারে একটি সাইবার হামলা। বিবিসি, সিএনএন