যখন রমজান মাসে অস্থির নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারে এবারও ক্রয় সামর্থ্যহীন মানুষের জন্য ফ্রি বাজারের ব্যবস্থা করেছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন। উপজেলার আঠারবাড়ী এলাকার উত্তর বনগাঁও রেলক্রসিং সংলগ্ন ইরা পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড অটোগ্যাস ফিলিং স্টেশন এলাকায় এই ফ্রি হাট বসানো হয়েছে। গত বছরও রমজান মাসে একই জায়গায় ফ্রি বাজারের আয়োজন করেছিল মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন।
সুত্র জানায়, ফ্রি হাটে আলাদা আলাদা স্টলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে মাছ, আলু, চিচিঙ্গা, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, তেল, লবন, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা মরিচ, খেজুর, মুড়ি। এগুলো বিনামূল্যে অসহায় ও ক্রয় সামর্থ্যহীন মানুষের হাতে বাজারের ব্যাগে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও যারা মধ্যবিত্ত রয়েছেন, যারা হাটে আসতে চান না। তাদের জন্য ফাউন্ডেশনের একটি মোবাইল নাম্বার দেওয়া রয়েছে। ওই নম্বরে ফোন করা হলে স্বেচ্ছাসেবীরা বাড়িতে পৌছে দিচ্ছেন। রমজান মাসে চার দিন প্রতি রবিবার বসবে এই হাট। প্রতি সপ্তাহে বিনামুল্যে ৩০০ জন মানুষ এই বাজারে ফ্রি কেনাকাটা করতে পারবেন। মাছ, ডাল, তেল, পেয়াজ, রসুন সবজিসহ ইফতার সামগ্রী দেয়া হবে। এছাড়াও চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন পণ্য যুক্ত করা হবে।
রমজান মাসের প্রথম রবিবার (৩ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক এনামুল হক এই ফ্রি হাটের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর ফ্রিতে বাজার করা শুরু করেন স্থানীয় ক্রয় সামর্থ্যহীন মানুষজন। ফ্রি বাজার করে নিয়েছেন অনেকে। বিনামুল্যে বাজার করতে আঠারবাড়ী ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রাম থেকে আসেন বিনামূল্যের হাটে এসেছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী একরামুল। তিনি চার থেকে পাঁচ পদের সবজি, একটি তাজা মাছ ও ইফতারের জন্য খেজুর ও মুড়ি পেয়ে বেজায় খুশি হয়েছেন এবং আয়োজকদের জন্য দোয়া করেন।
উপজেলার সুহিলাটি গ্রাম থেকে বাজার করতে আসেন বৃদ্ধ আবুল কাসেম। তিনি বলেন, বাজারে যে দাম, এই দামে এত কিছু আমার পক্ষে কেনা সম্ভব না। আর তারা ব্যাগভর্তি বাজার কোন টাকা ছাড়াই দিল। রোজার মাসে দোয়া আল্লাহ যেন তাদের ভাল রাখেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী রিয়া মনি বলেন, যে পরিমান বাজার টাকা ছাড়া পেলাম। তাতে এক সপ্তাহ চলে যাব। আগামী সপ্তাহেও এই বাজারে আসব। ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক শাহনাজ পারভীন নাবিলা জানান, রমজান মাসজুড়ে মোট চারটি ফ্রি হাট বসবে। এর মধ্যে তিনটি সবজি ও একটি ঈদের হাট। মোট দুই হাজার মানুষ এই হাট থেকে সেবা পাবে। ঈদের হাটে নতুন জামা কাপড় সেমাই চিনি ও শিশুদের জন্য খেলনা বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
কর্মসূচি সমন্বয়ক মো. আজহারুল ইসলাম পলাশ বলেন, হাটের কার্যক্রম রমজান মাসের পরবর্তী তিনটি বারে চলবে। চাহিদা ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফ্রি সামগ্রীতে নতুন নতুন পণ্য যুক্ত হতে পারে। মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশনের সংগঠক একেএম হাসানুজ্জামান মৃদুল বলেন, করোনা সংক্রমণের সময়ে বিপাকে পড়া হতদরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়ে এই সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ। এর পর থেকে প্রতি রমজানের শুরুতেই কার্যক্রম চলে আসছে। ভবিষ্যতেও এই কার্যক্রম চালু রাখার চেষ্টা করব। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক বলেন, পবিত্র রমজান মাসে এমন আয়োজন অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এ ধরনের কর্মকান্ডে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। সূএ:বিডি২৪লাইভ ডট কম’