মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে প্রবীণ রাজনীতিবিদদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি জনগণের কল্যাণে বেশি আন্তরিকতা ও দরদ দিয়ে নিজ নিজ এলাকায় উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখার জন্য সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ “আমার রাজনীতি, আমার জীবননীতি” এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত তার ভাষণসমূহের সংকলন “স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছা” শীর্ষক বইদ্বয়ের প্রকাশনা উৎসবে এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি হামিদ তার রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাসহ আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ লেখার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, “বঙ্গবন্ধুই তার রাজনৈতিক গুরু, তার কাছেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি।” তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দিতে যারা বঙ্গবন্ধু সান্নিধ্যে পেয়েছেন, তাদের সকলেরই আত্মজীবনী লেখা প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সবকিছুতেই শক্তি যুগিয়েছে- বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও অনুপ্রেরণা।
প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানের রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী রাশিদা খানম, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, গ্রন্থটির মূল আলোচক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাধ্যমিক ও শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী রাশিদা খানম “আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি” বই এর প্রকাশনা সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বইটি অনেক ঘটনারই সাক্ষী আমি.. বিশেষ করে, কলেজজীবন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সেই দিনগুলোর স্মৃতি আজও আমাকে নাড়া দেয়”। রাশিদা খানম প্রকাশনা উৎসবের উদ্যোক্তা, বই দুটির লেখক ও রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকেও ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, এতোদিন তার পরিচয় ছিল রাজনীতিবিদ, আইনবিদ, সংসদ সদস্য, ডেপুটি স্পিকার, স্পিকার, বিরোধীদলীয় উপনেতা ও সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি হিসেবে। আজ আরও পরিচিতি যুক্ত হলো লেখক হিসাবে। যদিও এটা অনেকটা ‘Better late than never,এর মতো।
স্পিকার ড শিরিন শারমিন চৌধুরী রাষ্ট্রপতিকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, সিনিয়রদের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কথা নতুন প্রজন্মকে জানানোর প্রয়াস থেকেই রাষ্ট্রপতির ইচ্ছের প্রতিফলন- এই পুস্তক রচনা। স্পিকার বলেন, ‘ভাটির শারদুল’ হিসেবে পরিচিত হামিদ কখনো সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিচ্যুত হননি। সব সময় তিনি এলাকাকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, লেখক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং আমি একে অপরের বন্ধু ছাত্রজীবন থেকেই। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্নেহ করতেন। সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য হিসেবেও রাষ্ট্রপতি হামিদ কর্মক্ষেত্র তার মেধার সাক্ষ্য রেখেছেন বিভিন্ন সময়ে।
পরে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রীবর্গ এবং সংসদ সদস্যদের সম্মানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। সূত্র: বাসস